জুলাই সনদে ‘জুলাই’ কোথায়

প্রথম আলো আলতাফ পারভেজ প্রকাশিত: ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৩:৫৮

‘জুলাই সনদ’ স্বাক্ষরিত হয়েছে ১৭ অক্টোবর। এখন তার বাস্তবায়নের পথ খোঁজা হচ্ছে। স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বলা হয়েছে, বর্বর অতীত থেকে সনদে সই করে বাংলাদেশ ‘সভ্য জগতে’ হাঁটতে শুরু করেছে।


ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে বাংলা নিঃসন্দেহে নানানভাবে নিপীড়িত ছিল, উপনিবেশিত ছিল, বঞ্চনার শিকার ছিল। এবার বিস্ময়করভাবে জানা হলো, আমরা বর্বর জগতেও ছিলাম! কিন্তু এই ‘বর্বর’ কারা ছিল? শাসকশ্রেণি, নাকি শোষিত নিম্নবর্গ? ‘সভ্য জগতে’ কি উভয়ে ঢুকতে পারছে?


কী আছে আলোচিত সনদে, যা বাংলাদেশের সভ্য-ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে যাচ্ছে? আদৌ সে রকম কিছু আছে কি না? সনদের অভিভাবকেরা ‘সভ্যতা’র সংজ্ঞা বা মানদণ্ড হিসেবে ঠিক কী বোঝাতে চেয়েছেন? আগামী বাংলাদেশ এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজবে অবশ্যই সনদের বিষয়বস্তুতে, এর কারিগর বা স্বাক্ষরকারীদের ভাষণে নয়।


বহুল আলোচিত জুলাই সনদের পটভূমি তৈরি হয়েছে ২০২৪ সালের ‘লাল জুলাই’ এবং তার আগের নানা শ্রেণি-পেশার অসংখ্য আন্দোলন-আকাঙ্ক্ষায়। প্রায় এক হাজার শহীদের আত্মদান যে পরিবর্তন ঘটিয়েছে, যাকে শহীদদের জীবিত সহযোদ্ধারা বলেছেন, ‘বৈষম্যবিরোধী’ গণ–অভ্যুত্থান, সেটিই ২০২৫–এর অক্টোবরের স্বাক্ষরানুষ্ঠানের নৈতিক ও রাজনৈতিক ভিত্তি।


জুলাই সনদের ‘টার্মস অব রেফারেন্স’ বা কার্যপরিধি অবশ্যই ২০২৪ ও তার আগের গণ–আন্দোলনগুলোর মূল চাওয়াগুলো। যে চাওয়া একটি শব্দের ভেতর ঘনীভূত করে রেখে গেছে শহীদদের কাফেলা, সেই শব্দ হলো ‘বৈষম্য’।


বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নৈতিক ও নীতিগত কোনো বাধ্যবাধকতা যদি থাকে, তাহলে সেটি অবশ্যই এ-ই যে তাকে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য কমাতে পদক্ষেপ নিতেই হবে। জুলাই সনদকেও কেবল সে আলোকেই দেখতে হবে।


সংগত কারণে, কথিত সভ্যতা-অসভ্যতার মানদণ্ড হতে হবে ‘বৈষম্য’। জনগণের সম্মিলিত যৌথ সাধারণ ইচ্ছার আলোকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সর্বতোভাবে একটি বৈধ সরকার, সেটি বহুবার বহুজন বলেছেন এবং সেটিই সত্য। তবে এটা একই সঙ্গে কোনো স্বাভাবিক সরকার নয়। এ সরকারের কাঁধে শহীদদের আকাঙ্ক্ষা পূরণের আবশ্যক দায় রয়েছে।


সরকারের অন্য যাবতীয় ম্যান্ডেটের (বিচার ও নির্বাচন) চেয়েও বৈষম্যের প্রশ্নটি সে কারণেই অগ্রাধিকারমূলক কর্তব্য। ১৭ অক্টোবর স্বাক্ষরিত হওয়া সনদ সেই অগ্রাধিকারমূলক দায়েরই ফসল। সেভাবেই কেবল এটা ‘ঐতিহাসিক’। কিন্তু সেখানে ‘জুলাই’–এর চাওয়া কতটা ঠাঁই ফেলল?


২০২৪ সালের জুলাইয়ের কেন্দ্রীয় আকাঙ্ক্ষা যদি হয় সমাজ ও রাষ্ট্রের সব স্তর থেকে বৈষম্য দূর করা, তাহলে প্রথমেই প্রশ্ন ওঠে বাংলাদেশে সবচেয়ে বৈষম্যপীড়িত জনগোষ্ঠী কারা?


এ রকম তালিকার সিরিয়াল বা ক্রম নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে; কিন্তু এটা বোধ হয় সবাই মানবেন—শ্রমিক, চাষি, দলিত, ছোট ছোট জাতিগোষ্ঠীর মানুষ, ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং বিশেষভাবে নারী সমাজ এ দেশে বৈষম্যের শিকার বেশি। কোনো কোনো কৃষক, কোনো কোনো নারী বা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কেউ কেউ আর্থিকভাবে ভালো আছেন; কিন্তু এ রকম সব জনগোষ্ঠী সাধারণভাবে সমাজের মূলধারা থেকে পিছিয়ে আছেন; সম্প্রদায়গতভাবে অসম অবস্থার শিকার তাঁরা।


জনগোষ্ঠীগতভাবে না দেখে এ দেশের বৈষম্যের সমস্যাকে অর্থনীতির আলোকেও দেখা যায়। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে শিক্ষার্থীরা প্রথমে কর্মসংস্থানের বঞ্চনার কথা বলছিলেন। তখন এবং এখনো বেকারত্ব দেশের প্রধান এক সমস্যা। বাজার সিন্ডিকেটও আগে-পরে চিরস্থায়ী ধারালো তলোয়ার হয়ে আছে এ দেশে। আর রয়েছে দারিদ্র্য।


বিশ্বব্যাংক বলছে, বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ২১ শতাংশ। সরকারি হিসাবে সেটি ১৯ শতাংশ। বেসরকারি সংস্থা পিপিআরসি বড় স্যাম্পল সাইজ বা নমুনা নিয়ে গবেষণা করে এ বছর ২৮ শতাংশ মানুষকে দরিদ্র দেখেছে। ওপরের তিনটি ফলকে গড় করলে দারিদ্র্যের হার দাঁড়ায় প্রায় ২৩ শতাংশ।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও