You have reached your daily news limit

Please log in to continue


ভারত-আফগানিস্তান সম্পর্ক : কৌশলের খেলা

দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতি আজ এক নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি। দীর্ঘ যুদ্ধ ও বিদেশি হস্তক্ষেপের পর আফগানিস্তান এখন রাষ্ট্র পুনর্গঠনের এক সংবেদনশীল পর্যায়ে রয়েছে। এ অবস্থায় ভারত উদার বন্ধুর মতো তার কূটনৈতিক ও উন্নয়ন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু ইতিহাস, ভূগোল এবং ভারতের কৌশলগত আচরণ বলছে, এ বন্ধুত্ব নিছক মানবিক নয়; এটি এক গভীর পরিকল্পনার অংশ, যার মূল লক্ষ্য পাকিস্তানকে চারদিক থেকে ঘিরে রাখা এবং দক্ষিণ এশিয়ায় প্রভাব বিস্তার করা।

ভারতের কৌশলগত লক্ষ্য

২০০১ সালে তালেবান সরকারের পতনের পর ভারত দ্রুত আফগানিস্তানে প্রবেশ করে। তারা অবকাঠামো নির্মাণ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সহায়তা, এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদার করার মাধ্যমে প্রভাব বাড়ায়। আফগান সংসদ ভবন, সালমা বাঁধ (যা ‘আফগান-ভারত বন্ধুত্ব বাঁধ’ নামে পরিচিত) এবং জারাঞ্জুদেলারাম মহাসড়ক ভারতের এই ‘সফট পাওয়ার’ কৌশলের স্পষ্ট নিদর্শন। কিন্তু এ প্রকল্পগুলোর অন্তরালে ছিল অন্য উদ্দেশ্য, যা কেবল উন্নয়ন বা সহযোগিতার ভাষায় বোঝা যায় না। ভারতের আসল লক্ষ্য ছিল আফগানিস্তানকে এমন এক কৌশলগত ঘাঁটিতে পরিণত করা, যেখান থেকে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, সামরিক তৎপরতা এবং সীমান্ত, অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায়। এ উপস্থিতি ভারতের কাছে শুধু কূটনৈতিক সাফল্য নয়, বরং এক ধরনের গোয়েন্দা সুবিধা। আফগানিস্তানের পাহাড়ি সীমান্ত অঞ্চল এবং এর অস্থিতিশীল রাজনৈতিক কাঠামো ভারতের জন্য এমন এক ক্ষেত্র তৈরি করেছে, যেখানে তারা নানাভাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মনস্তাত্ত্বিক, কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা, কেন্দ্রিক খেলা চালাতে পারে। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ দীর্ঘদিন ধরে আফগানিস্তানে সক্রিয়। তারা কাবুল, কান্দাহার, জালালাবাদ ও মাজার শরিফে তথাকথিত সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, এনজিও, এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ের আড়ালে গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে বলে বহু আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক উল্লেখ করেছেন। ‘র’-এর কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানবিরোধী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন, তাদের আর্থিক ও রাজনৈতিক সহায়তা দেওয়া, এবং সীমান্ত, অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করা। বিশেষ করে বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ নতুন কিছু নয়। আফগান ভূখণ্ডকে ব্যবহার করে এ যোগাযোগ আরও সহজ হয়েছে, যা পাকিস্তানের জন্য গভীর নিরাপত্তা, ঝুঁকি তৈরি করেছে।

এছাড়া আফগানিস্তান ভারতের জন্য একটি ভূ-অর্থনৈতিক সুযোগও এনে দিয়েছে। ভারত দীর্ঘদিন ধরে মধ্য এশিয়ার গ্যাস, তেল এবং খনিজ সম্পদে প্রবেশের পথ খুঁজছে। কিন্তু পাকিস্তান, অবরুদ্ধ ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে সে পথ সবসময় বন্ধ ছিল। আফগানিস্তানের মাধ্যমে এ রুট খুলে দেওয়ার প্রয়াস ভারতকে মধ্য এশিয়ার জ্বালানি সম্পদে সরাসরি পৌঁছানোর সুযোগ দিতে পারে, যা তার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারে সহায়ক। তাই আফগানিস্তানে ভারতের আগ্রহ কেবল বন্ধুত্বের মুখোশে লুকানো মানবিক সহযোগিতা নয়; এটি মূলত একটি দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত বিনিয়োগ, যার লক্ষ্য পাকিস্তানকে চাপে রাখা, মধ্য এশিয়ার দিকে প্রভাব বিস্তার করা, এবং দক্ষিণ এশিয়ায় একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা।

ইসরাইল-ভারত আঁতাত এবং মুসলিম বিশ্বের প্রশ্ন

আজ ইসরাইল ভারতের অন্যতম প্রতিরক্ষা, অংশীদার। নজরদারি প্রযুক্তি, ড্রোন, মিসাইল প্রতিরক্ষা ও সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান, সবখানেই ইসরাইলি প্রভাব প্রবল। এ বাস্তবতা আফগানিস্তানের মতো মুসলিম দেশের জন্য গভীর তাৎপর্যপূর্ণ। তাই আফগানিস্তানের জন্য জরুরি, এ সম্পর্কের ভেতরের কৌশলগত উদ্দেশ্য বুঝে নেওয়া।

বিভাজনের ইতিহাস, ঐক্যের প্রয়োজন

আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সম্পর্ক ইতিহাসে বহুবার টানাপোড়েনের মুখে পড়েছে, বিশেষ করে ডুরান্ট রেখা, সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ, এবং শরণার্থী সমস্যা নিয়ে। কিন্তু এ রাজনৈতিক টানাপোড়েন সত্ত্বেও দুদেশের জনগণ একই সংস্কৃতি, ধর্ম, ভাষা ও গোত্রীয় ঐতিহ্যে আবদ্ধ। পাকিস্তানের পশ্চিম সীমান্তে অস্থিরতা সৃষ্টি হলে ভারত উপকৃত হয়, কারণ এতে পাকিস্তান দুই ফ্রন্টে চাপের মুখে পড়ে, একদিকে কাশ্মীর, অন্যদিকে আফগান সীমান্ত। তাই ভারতের ‘আফগান বন্ধুত্ব’ আসলে পাকিস্তানকে কৌশলগতভাবে ব্যস্ত রাখার একটি উপায়।

আফগানিস্তানের জন্য সঠিক পথ

তালেবান সরকারের উত্থানের পর আফগানিস্তান এমন এক যুগে প্রবেশ করেছে, যেখানে রাষ্ট্র পুনর্গঠন ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। এপর্যায়ে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রেও কৌশলগত সতর্কতা অপরিহার্য। ভারতের সঙ্গে সীমিত বাণিজ্য বা অবকাঠামোগত সহযোগিতা আফগানিস্তানের অর্থনীতির জন্য উপকারী হতে পারে, তবে সামরিক সহযোগিতা বা গোয়েন্দা, তথ্য বিনিময়ে অংশ নেওয়া দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার জন্য ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনতে পারে। আফগানিস্তানের উচিত এমন একটি বহুমাত্রিক পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করা, যা একদিকে আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে ভারসাম্য বজায় রাখবে, অন্যদিকে মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ককে শক্তিশালী করবে। পাকিস্তান, ইরান, তুরস্ক ও কাতারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা আফগানিস্তানের জন্য শুধু ধর্মীয় ঐক্যের প্রতীক নয়, বরং বাস্তব নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার নিশ্চয়তা। এসব দেশের অভিজ্ঞতা, বাজার, ও রাজনৈতিক সমর্থন আফগানিস্তানকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শক্ত অবস্থান নিতে সহায়তা করবে। কূটনৈতিক প্রজ্ঞা ও আত্মসম্মান বজায় রেখে আফগানিস্তানের উচিত এমন এক পথ বেছে নেওয়া, যা তাদের স্বাধীনতা, ইসলামি মূল্যবোধ ও জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন