জুলাই সনদ সই হলে বাস্তবায়নের পথ কতটা মসৃণ

প্রথম আলো সৈয়দ হাসিবউদ্দীন হোসেন প্রকাশিত: ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৩:১২

অন্তর্বর্তী সরকার ১৭ অক্টোবর জুলাই সনদ সই করার আয়োজন করছে এবং তার তিন দিন আগে সনদের দলিল সব রাজনৈতিক দলের কাছে পৌঁছে দিয়েছে।


সনদে এটি পরিষ্কার, তিন সপ্তাহ ধরে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া স্পষ্ট করার যে কাজ চলছিল, তা বিফলে গেছে এবং কী প্রক্রিয়ায় সংবিধান সংস্কার করা হবে, সেটি আরও ঘোলাটে হয়ে পড়েছে।


কমিশন খুব সরলভাবে বলেছে, সনদে যেসব সংস্কার প্রস্তাব লেখা আছে, স্বাক্ষরকারীরা সেগুলো বাস্তবায়ন করবে। কীভাবে তারা সে কাজ করবে, তা তারা বলা থেকে বিরত থেকেছে। চোখ বন্ধ রাখলেই সমস্যা সমাধান হয়ে যায় না।


বাস্তবায়ন নিয়ে প্রধান সমস্যা হলো, সনদে যে ৮৪টি প্রস্তাব আছে, তার মাত্র ২৭টিতে ঐকমত্য কমিশনে অংশ নেওয়া সব কটি দল একমত হয়েছে। এর মধ্যে খুব বড় সংস্কার প্রস্তাব হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, সংসদে স্থায়ী কমিটিগুলোয় বিরোধী দল থেকে সভাপতি করা, বিচার বিভাগকে সরকারের প্রশাসনিক বিভাগ থেকে বিচ্ছিন্ন করে তাদের জন্য আলাদা সচিবালয় তৈরি করা, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ এবং স্বাধীন পুলিশ কমিশন তৈরি করা।


তা ছাড়া ৭০ ধারার প্রয়োগ কমিয়ে আনার বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট থাকলেও যতটুকুতে ঐকমত্য আছে, ততটুকু বাস্তবায়ন করা গেলে সংসদ কার্যকর হওয়ার পথে আমরা পা বাড়াতে পারব।


এই ২৭টি প্রস্তাবে সবাই যেহেতু একমত হয়েছে, সেহেতু এই প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করা সহজ হবে বলে ভাবা যেতে পারে। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি হলো, এগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন করা যাবে, সেটা নিয়ে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য নেই।


এই প্রস্তাবগুলো গণভোটে তোলা হবে—এ বিষয়ে ঐকমত্য থাকলেও কীভাবে সেই গণভোট ডাকা হবে, সেটা নিয়ে শেষ পর্যন্ত ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি।


অতএব এই সনদে সব কটি দল সই করলেও সম্পূর্ণ ঐকমত্যে আসা প্রস্তাবগুলোরও বাস্তবায়ন হবে না, যতক্ষণ না পর্যন্ত দলগুলো কীভাবে গণভোট ডাকা হবে, সে বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারছে।


বড় সমস্যা অবশ্য যেসব বিষয়ে দলগুলোর পরিষ্কার দ্বিমত আছে বা অংশবিশেষ নিয়ে আপত্তি আছে (নোট অব ডিসেন্ট), সেসব নিয়ে। সম্পূর্ণ দ্বিমত আছে—এমন ৭টি প্রস্তাব আছে, যেখানে ৫টির বেশি দল সম্পূর্ণ দ্বিমত প্রকাশ করেছে। তার মধ্যে একটি প্রস্তাব, যেখানে সাতই মার্চের ভাষণ সংবিধান থেকে ফেলে দেওয়ার প্রস্তাব এসেছে, তার বিপক্ষে ৯টি দলের সম্পূর্ণ দ্বিমত আছে। ৩টি কর্ম কমিশন করার বিষয়ে ৭টি দলের আপত্তি আছে।


বড় দল বিএনপি আপত্তি করেছে ১৫টি প্রস্তাবে, যার মধ্যে একইভাবে ৯টি প্রস্তাবে আপত্তি করেছে এনডিএম, বারোদলীয় জোট ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট। একদম কোনো প্রস্তাবে আপত্তি তোলেনি মাত্র ৪টি দল—ইসলামী ঐক্য জোট, এনসিপি, গণসংহতি আন্দোলন ও বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।


অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি প্রস্তাবে আপত্তি দিয়েছে বাসদ। তাদের আপত্তি ১৬টিতে। বিএনপির আপত্তি ১৫টিতে এবং বারো দলের ১৩টিতে। কিন্তু ঐকমত্য কমিশনে দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় বিভাজন আছে কিছু প্রস্তাব নিয়ে, যেগুলোয় কিছু কিছু দল নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে রেখেছে। তার মধ্যে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা নিয়ে আপত্তি ৯টি দলের, তত্ত্বাবধায়ক সরকার কীভাবে তৈরি হবে তা নিয়ে আপত্তি ৭টি দলের, উচ্চকক্ষে ভোটের অনুপাতে সিট দেওয়া নিয়ে আপত্তি ৭টি দলের। আর সাংবিধানিক পদ ন্যায়পাল, মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক কমিশনার কীভাবে নিয়োগ পাবেন, সেটা নিয়েও আপত্তি সেই ৭টি দলের।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও