দৈনন্দিন জীবনে সবাই ক্লান্ত হয়। অফিস, পরিবার, দায়িত্ব— সব মিলিয়ে যেন নিঃশেষ হয়ে যাওয়া।
তবে, ক্লান্তির আসল কারণ কি শুধুই ব্যস্ততা?
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সান্তা বারবারার প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক পল লিওনার্ডি সিএনএন ডটকম -এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেন, "এর পেছনে রয়েছে এক নতুন ধরনের মানসিক চাপ— ‘ডিজিটাল এক্সসশন’ বা প্রযুক্তিগত ক্লান্তি।
তার নতুন বই ‘ডিজিটাল এক্সসশন: সিম্পল রুলস ফর রিক্লেইমিং ইয়োর লাইফ’-এ তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, কীভাবে মস্তিষ্ক ক্রমাগত ‘অ্যাপ’, ‘প্ল্যাটফর্ম’ ও কাজের মধ্যে ঘোরাঘুরি করতে করতে অবসন্ন হয়ে পড়ছে।
একটানা পরিবর্তন করার চাপ
লিওনার্ডি বলেন, “এখন প্রতিনিয়ত এক অ্যাপ থেকে আরেক অ্যাপে, এক চিন্তা থেকে আরেক চিন্তায়, এক কাজ থেকে অন্য কাজে সরে যাচ্ছি। প্রতিবারই মস্তিষ্ককে নতুনভাবে মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করতে হয়, নতুন নিয়মে চিন্তা করতে হয়। তবে মানুষের মস্তিষ্ক এত দ্রুত ‘সুইচ’ বা ‘একটা থেকে অন্যটায়’ মনোযোগ দেওয়ার জন্য তৈরি নয়।”
শরীর ক্লান্ত বুঝে, তবে মস্তিষ্ক নয়
“শরীর জানে কখন বিশ্রাম দরকার, তবে মস্তিষ্ক তা বুঝে না”— এমনটাই বলেন লিওনার্ডি।
“শারীরিকভাবে ক্লান্ত হলে শরীর আমাদের থামিয়ে দেয়, তবে অফিসে কম্পিউটারের সামনে বসে থেকে মস্তিষ্ক ক্লান্ত হলেও আমরা তা টের পাই না। ফলাফল— দিনের শেষে মনে হয় যেন একটা ভারী গাড়ি আমাদের গায়ে ধাক্কা দিয়েছে।”
বাড়ি থেকে কাজ: এক নতুন ক্লান্তি
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিশেষজ্ঞ বলেন, "যারা বাড়ি থেকে কাজ করেন, তারা আরও বেশি ক্লান্ত বোধ করেন। কারণ, তাদের জীবনে কাজ ও ব্যক্তিগত সময়ের মাঝে কোনো স্পষ্ট সীমা থাকে না।"
“অফিসে করিডোরে কথা বলতে পারেন, সরাসরি মিটিং করতে পারেন— সেটা মানসিক বিরতি দেয়। তবে বাসায় সবই প্রযুক্তি নির্ভর, তাই মস্তিষ্কের বিশ্রাম মেলে না,” বলেন লিওনার্ডি।