
বিএনপি কর্মীকে হত্যা : কয়েক মিনিটে গাড়িতে ২২টি গুলি, ৪ সন্দেহভাজন আটক
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত বিএনপি কর্মীর গাড়িতে ২২টি গুলির চিহ্ন দেখা গেছে। গাড়িটির সামনের দুটি চাকা গুলিতে ফুটো হয়ে যায়। সামনের কাচে এবং মূল বডিতে চারটি, নিহত আবদুল হাকিমের বাম পাশের জানালার কাচে ১২টি এবং চালকের আসনের পাশের জানালায় করা হয় ৬টি গুলি।
আজ বুধবার দুপুরে মদুনাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সামনে রাখা আবদুল হাকিমের গাড়িতে এসব গুলির চিহ্ন দেখা গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, নিহত আবদুল হাকিমের গাড়ি থেকে প্রায় সাড়ে ৮ লাখ নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। তবে কী কারণে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে, তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। রাজনীতির পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যের দ্বন্দ্ব থেকেও এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে বলে ধারণা পুলিশের।
ঘটনাস্থলের ২০০ মিটার দূরত্বে মদুনাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সামনে গিয়ে দেখা যায়, দল বেঁধে লোকজন গুলি করা গাড়িটি ঘিরে ধরে দেখছেন। গাড়িটির সামনে এবং দুই পাশে ২২ গুলির চিহ্ন। সামনের দুটি চাকা গুলিতে ফুটো হয়ে গেছে।
এদিকে, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চারজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়। রাউজানের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আজ দুপুরে তাঁদের আটক করা হয়। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।
সন্দেহভাজনদের আটকের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন হাটহাজারী সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মো. তারেক আজিজ। তবে আটক ব্যক্তিদের নাম পরিচয় জানানো হয়নি। তিনি বলেন, সন্দেহভাজন হিসেবে তাঁদের আটক করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই করে আদালতের মাধ্যমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।
থমথমে মদুনাঘাট বাজার
প্রকাশ্যে ব্যবসায়ী ও বিএনপি কর্মী আবদুল হাকিমের হত্যাকাণ্ডের পর মদুনাঘাট এলাকায় লোকসমাগম কমে গেছে। বাজারের দোকানপাট খুললেও ক্রেতার সংখ্যা তুলনামূলক কম দেখা গেছে।
আজ দুপুরে মদুনাঘাট বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ঘটনাস্থল মদুনাঘাট পানি শোধনাগার প্রকল্পের মূল ফটকের সামনের সড়কের পাশের প্রতিরক্ষা দেয়ালের কিছু অংশ গুলি লেগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাজারের মানুষের সমাগম অন্যদিনের তুলনায় অনেক কম ছিল। ব্যবসায়ীরা গতকালের ঘটনা নিয়ে বেশি কিছু বলতে রাজি হচ্ছেন না। আতঙ্ক কাজ করছে তাঁদের মধ্যে।
ঘটনাস্থলের ঠিক অপর পাশের স্টিলের আলমারির শো রুমের মালিক দিদারুল আলমের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, সকাল থেকে কোনো ক্রেতা নেই। গতকাল বিকেলে যখন গুলির ঘটনা ঘটেছিল তখন তিনি পাশের রেস্টুরেন্টে নাশতা করছিলেন। গুলির শব্দ শুনে দৌড়ে তাঁর দোকানের সামনে এসে তিনি দেখেন তিনজন অস্ত্রধারী হেলমেট পরা যুবক একটি প্রাইভেট কার লক্ষ্য করে গুলি করছেন। এভাবে কয়েক মিনিটি ১৫ থেকে ২০ বার গুলি করা হয়। পরে হামলাকারীরা মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যান।