বিবিসিতে তারেক রহমান : একটি পর্যবেক্ষণ

যুগান্তর অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল প্রকাশিত: ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৩:১৬

প্রায় সতেরো বছর পর গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে দেখা গেল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে। এর আগে টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় তিনি তার দলের নেতৃত্বের শীর্ষে যেমন ছিলেন না, তেমনি অভিজ্ঞতার ঝুলিটাও এতটা সমৃদ্ধ ছিল না।


আজকের মতো অনির্ধারিত প্রশ্নোত্তর, সতেরো বছরের লম্বা বিরতি, জমে থাকা হাজারও প্রশ্ন, বিব্রতকর জিজ্ঞাসা, ব্যক্তিগত পারিবারিক তথ্যানুন্ধান সুদীর্ঘ কথোপকথন এসব কিছুর মুখোমুখি হয়ে কতটা সপ্রতিভ থাকতে পারবেন তিনি, সে জিজ্ঞাসা ছিল অনেকেরই। শুরুতে আড়ষ্টতা কিছুটা ছিল না, তেমন বোধ হয় বলা যাবে না। তবে সময় যত গড়িয়েছে ততটাই স্বাচ্ছন্দ্যে তিনি সব প্রশ্ন সামলেছেন।


পুরোটা দেখে সেটাই মনে হয়েছে উত্তর দেওয়ার সময় তার মাঝে কোনো অস্পষ্টতা ছিল না। তিনি অন্তর দিয়ে যেটা বিশ্বাস করেন সেটাই বলেছেন নির্দ্বিধায়, প্রচলিত রাজনীতিতে অস্পষ্টতা রেখে, পরোক্ষ বা গা বাঁচানো উত্তর দেওয়াটাই যখন প্রায় প্রথাসিদ্ধ বলেই সবাই জানে। কোনো প্রশ্ন পাশ কাটানোর চেষ্টা করেছেন এমনও নয়, কথা বলেছেন বলিষ্ঠ আত্মবিশ্বাসী অবস্থান থেকে, এটা তার অনুসারী, দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দীপ্ত করবে সন্দেহ নেই।


কথা বলার সময় তিনি যতটা না দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের অবস্থান থেকে কথা বলেছেন তার চেয়ে অনেক বেশি সচেষ্ট ছিলেন, তার কথোপকথনে জাতীয় ঐক্যের সুরটা যেন আরও বেশি বলিষ্ঠ শোনা যায়। তার বক্তব্যের এ ধারা দেশের রাজনৈতিক সুস্থতার জন্য অনেক প্রয়োজনীয়। প্রতিপক্ষকে অনাবশ্যক আক্রমণের সুযোগ যেমন নেননি, ঠিক তেমনি ব্যক্তিগত প্রসঙ্গে এক সাধারণ মানুষের মতো ভদ্রোচিত অস্বস্তিতে ছিলেন, যেন তার কোনো কথাতেই আত্মম্ভরিতা বা অহংকার প্রকাশিত না হয়, শ্রোতা দর্শকের কাছে তার এ অভিব্যক্তি নিশ্চয়ই নজর এড়াবে না। সাবেক রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর সন্তান, এমন সৌভাগ্যের সঙ্গে জনগণকে তাচ্ছিল্য করার প্রচলিত সংস্কৃতির সঙ্গে প্রায় অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া দর্শক শ্রোতাকে আবারও সেই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়নি, সেটাও এ সাক্ষাৎকারে অন্যতম প্রাপ্তি।


তার দেশে ফেরা নিয়ে এতদিন যে প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে দলের নেতাকর্মীরা প্রায়ই অস্পষ্টতার আশ্রয় নিতেন, আজকের সাক্ষাৎকারে তিনি নিজেই সেটা স্পষ্ট করেছেন অনেকটাই। বলেছেন, কিছু সংগত কারণে এখনো দেশে ফেরা হয়ে উঠেনি। এখন ফেরার সময় চলে এসেছে। দ্রুতই দেশে ফিরব ইনশাআল্লাহ। সেই সংগত কারণের মধ্যে নিরাপত্তা ছাড়াও হয়তো এমন কিছু বিষয় রয়েছে, যেটা আমাদের মতো সাধারণের বোধের বিষয় নয়। তবে তার বা জিয়া পরিবারের নিরাপত্তার সঙ্গে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব আর বাংলাদেশের খোলনলচে বদলে যাওয়ার মতো ঝুঁকি যে আছে, সেটা সম্ভবত সাধারণের অজানা নয়। স্পষ্ট করে বলেছেন, নির্বাচনের সময় কেমন করে দূরে থাকব? নির্বাচনের সময় জনগণের সঙ্গে, জনগণের মাঝেই থাকব ইনশাআল্লাহ।


জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মাস্টার মাইন্ড হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাননি, সবিনয়ে যথার্থই বলেছেন, এখানে মাস্টার মাইন্ড কোনো ব্যক্তি বা দল নয়। দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণই গণ-অভ্যুত্থানের মাস্টার মাইন্ড। এ উপলব্ধি সর্বজনীন হলে আমরা জাতীয় ঐক্যের অনেক কাছাকাছি পৌঁছাতে পারতাম।


পতিত স্বৈরাচারের বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে সাবলীলভাবে নিজের অবস্থান তুলে ধরেছেন, ‘নির্যাতনকারী প্রত্যেকের বিচার হতে হবে। এটা প্রতিশোধের বিষয় নয়। এটা ন্যায়ের কথা, আইনের কথা। দল হিসাবে আওয়ামী লীগ অন্যায় করে থাকলে দেশের আইন অনুযায়ী তারও বিচার হতে হবে।’ এ স্পষ্ট কথাগুলো বলে তিনি আওয়ামী লীগকে নিয়ে তার দলের বিরুদ্ধে তথাকথিত প্রশ্রয় বা নমনীয়তা নিয়ে যে অভিযোগ বা অনুযোগ রয়েছে সেটার নিষ্পত্তি তিনি কোনো রাখঢাক ছাড়াই করে দিয়েছেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও