You have reached your daily news limit

Please log in to continue


ছিলেন রাষ্ট্রপ্রধান, হলেন কয়েদি

২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫। প্যারিসের একটি ফৌজদারি আদালতের চারপাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সতর্ক চৌকস সদস্যরা কৌতূহলী জনতা, সংবাদকর্মীদের সামলাতে এবং একই সঙ্গে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রাণান্ত। আশপাশের রাজপথে যানবাহনগুলোকে অন্য পথে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেদ করে কাউকে প্রয়োজন ছাড়া আদালতের ত্রিসীমানায় ঘেঁষতে দেওয়া হচ্ছে না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উৎসুক দর্শক-শ্রোতাদের কৌতূহল মেটাতে সংবাদকর্মীরা তাঁদের ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে সরাসরি নানা ভাষায় ধারাবিবরণী শুরু করে দিয়েছেন। ক্যামেরা আর অ্যান্টেনার ঘন জঙ্গলে ঢাকা পড়েছে আদালত প্রাঙ্গণ। ‘স্বাধীনতা, ভ্রাতৃত্ব এবং সাম্য’—এই তিন মূলমন্ত্রে দীক্ষিত ফরাসি জাতি একটি ঐতিহাসিক এবং অতি চাঞ্চল্যকর রায়ের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছেন। সব জল্পনার অবসান ঘটতে চলেছে।

আদালতের কাঠগড়ায় ‘অসাধারণ’ এক আসামি উপস্থিত আছেন। দেশের সবাই তাঁকে চেনেন। কারণ, একসময় এমন একটি দিন ছিল না যে তাঁকে সংবাদমাধ্যমগুলো ভুলে থেকেছে। সংবাদপত্রের প্রথম পাতার আকর্ষণীয় সব খবর ছিল তাঁকে নিয়ে। আজও তিনি রাজনীতির মাঠে সরব। তথাপি আদালতের নিয়ম মেনে, বিচারকদের সামনে দাঁড়িয়ে নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে বেশ খানিকক্ষণ নীরব থাকলেন। একবার নিজের চারপাশে তাকালেন। তাকালেন আদালতে উপস্থিত তাঁর সুন্দরী তৃতীয় ভার্যা, ৫৭ বছর বয়সের ক্লারা ব্রুনির দিকে। দেখলেন নিজের উদ্বেগাকুল ছেলেকে। তারপর শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে জনাকীর্ণ আদালতকক্ষে কাকে যেন খুঁজলেন। এই প্রথম তাঁকে অনেকটা অসহায় দেখাল। চিরচেনা তাঁর তেজদীপ্ত চেহারা একটু ম্লান হলো। ভরাট কণ্ঠে নিজের পরিচয় ব্যক্ত করলেন।

নাম নিকোলা সারকোজি, অন্য কোনো নাম নেই। বয়স ৭০ বছর। ফরাসি নাগরিক, বিবাহিত। পেশায় আইনজীবী। তবে যে পরিচয় তিনি ঊহ্য রাখলেন, তা হলো তিনি পরাশক্তি ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট। ২০০৭ থেকে ২০১২ সাল—পাঁচ বছর এলিজি প্রাসাদের স্বর্ণকক্ষে বসে দেশ চালিয়েছেন দোর্দণ্ডপ্রতাপে। শেষের এই পরিচয়ে বিচারকদের তেমন কোনো আগ্রহ নেই। তাঁরা আজ একজন অভিযুক্ত আসামির বিচার চূড়ান্ত করবেন, এর বেশি কিছু নয়।

আদালতে বাদীপক্ষের আনা অভিযোগ আসামিকে পড়ে শোনানো হলো। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ, লিবিয়ার প্রয়াত সুপ্রিম গাইড মুয়াম্মার গাদ্দাফির কাছ থেকে নিজের নির্বাচনী প্রচারের জন্য মোটা অঙ্কের অর্থ গ্রহণ, নির্বাচনী প্রচারণার সময় অবৈধভাবে অতিরিক্ত ব্যয়। অভিযোগ আমলে নিয়ে বিচারের স্বচ্ছতার জন্য দীর্ঘ ১০ বছর ধরে চলে তদন্ত, অনুসন্ধান। পুরো ৭৩ কার্যদিবস ধরে বাদী-বিবাদীপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তি, পাল্টা যুক্তি, উত্তপ্ত বাদানুবাদে আদালত কক্ষ সরগরম হয়েছে। ৫৪ বার খানাতল্লাশ চালানো হয়েছে বিভিন্ন স্থানে, বাড়িতে, দপ্তরে। মোট ২০টি দেশের কাছে আবেদন করা হয় আন্তর্জাতিক সহায়তার। পাহাড়সমান নথি জমা হয়েছে আদালতে।

অবশেষে বহুপ্রতীক্ষিত মামলার রায় অর্থাৎ নাটকের শেষ দৃশ্য মঞ্চস্থ হলো বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫। দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ, মুয়াম্মার গাদ্দাফির কাছ থেকে অনৈতিকভাবে অর্থ গ্রহণ এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বিধিমালা লঙ্ঘন করে অতিরিক্ত ব্যয়ের অভিযোগ থেকে তাঁকে খালাস দিলেও, ‘দুর্বৃত্তদের সঙ্গে যোগসাজশের’ অভিযোগে প্যারিসের ফৌজদারি আদালতে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন। এই অপরাধে আদালত তাঁকে পাঁচ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে আটকাদেশ দেন। সেই সঙ্গে তাঁকে ১ লাখ ইউরো জরিমানা করা হয়। মুহূর্তেই সে খবর ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। ‘ব্রেকিং নিউজ’ শিরোনামে দেশব্যাপী প্রচার হতে থাকে এই খবর। অনেকে তুলনা করেন সুনামির সঙ্গে।

কে এই নিকোলা সারকোজি? অভিবাসী বাবার সন্তান, মাত্র ২০ বছর বয়সে ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে জড়িত হন। সাহসী, মাথাভর্তি ঝাঁকড়া চুল, উজ্জ্বল চোখের চমৎকার বক্তা, সহজেই তিনি স্থানীয় নেতাদের দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম হন। মাত্র ২৮ বছর বয়সে নিজের শহরের মেয়র নির্বাচিত হন। এরপর তিনি জাতীয় নেতাদের সুদৃষ্টি, আনুকূল্য অর্জনে সুনিপুণ দক্ষতার পরিচয় দেন। রাষ্ট্রক্ষমতার সোনার হরিণের পেছনে ছুটতে গিয়ে নিজের ছায়াকেও অনেক পেছনে ফেলে দ্রুত এগিয়ে যান তিনি। তবে তাঁর সম্পর্কে একটা কথা চালু আছে, তা হলো, যাঁদেরকে তিনি ক্ষমতায় পৌঁছবার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করেছেন, ক্ষমতার ধাপে ধাপে পৌঁছে তাঁদের থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন