নির্বাচন পেছানোর রাজনীতি কি ব্যাকফায়ার করছে

যুগান্তর জিয়া আহমদ প্রকাশিত: ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৫১

২০২৪-এর সফল গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকেই দেশের বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনের বিষয়ে অনাগ্রহ প্রকাশ করে আসছিল। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপি এ রাজনৈতিক দলগুলোর পুরোধা হিসাবে কাজ করে আসছে। প্রথমদিকে এ দলগুলো দাবি করছিল, নির্বাচনের আগেই পতিত স্বৈরাচার ও তার দোসরদের বিচার করতে হবে এবং শাস্তি দিতে হবে, নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে, জুলাই সনদ প্রকাশ ও তার আলোকে নির্বাচন হতে হবে এবং সর্বোপরি সংস্কার কার্যক্রম সমাপ্ত করতে হবে।


অন্তর্বর্তী সরকার দেশের বিভিন্ন খাতের সংস্কারের লক্ষ্যে প্রথমে ৬টি এবং পরে আরও ৫টি, মোট ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। এ কমিশনগুলোর প্রতিবেদন পাওয়ার পর সরকার সেখান থেকে মূল সংস্কার কার্যক্রমের একটি তালিকা তৈরি করে তা দেশের জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠায় তাদের সম্মতি, অসম্মতি এবং তাদের বিকল্প প্রস্তাবনার জন্য। এ পর্যায়ে দেখা যায়, বেশকিছু প্রস্তাবের সঙ্গে দেশের বড় কয়েকটি রাজনৈতিক দলের দ্বিমত রয়েছে। সে প্রেক্ষাপটে সরকারের সৃষ্ট ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’ সরকারের নির্দেশক্রমে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার মতপার্থক্য কমিয়ে আনার লক্ষ্যে দেশের মূল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সিরিজ বৈঠক শুরু করে। এতে বেশকিছু ক্ষেত্রে ঐকমত্য সৃষ্টি হলেও নতুন সংবিধান প্রণয়ন, ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়নের সময় ও পদ্ধতি ইত্যাদি বিষয়ে ঐকমত্য হয়নি। এ বিষয়ে দ্বিমতকারী রাজনৈতিক দল বিএনপির বক্তব্য হলো দেশে একটি সংবিধান বলবৎ থাকার পর সেই সংবিধানকে পাশ কাটিয়ে কোনো ধরনের সাংবিধানিক মৌলিক সংস্কার করা সম্ভবপর নয়। এ ধরনের সংস্কারের জন্য একটি জাতীয় সংসদ থাকা জরুরি; এবং জাতীয় সংসদের নির্বাচিত সদস্যরাই কেবল এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে আইনগতভাবে যোগ্য। তাদের পরামর্শ হলো, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিজয়ী সংসদ-সদস্যরা জাতীয় সংসদে বসে সংস্কারের লক্ষ্যে সংবিধান সংশোধন করবেন; এবং সেভাবেই প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো বাস্তবায়িত হবে।


কিন্তু অন্য দুটি দল অর্থাৎ জামায়াত ও এনসিপি দেশ সংস্কারের এ দায়িত্ব পরবর্তী সংসদের ওপর ছেড়ে দিতে আগ্রহী নয়। তারা চাইছে নির্বাচনের আগেই সংবিধান সংশোধনসহ এ সংস্কারগুলো কার্যকর করতে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে এনসিপির প্রতীক হিসাবে ‘শাপলা’ চাওয়া এবং জামায়াতে ইসলামীর আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘পিআর পদ্ধতির’ বাস্তবায়ন অর্থাৎ ভোটার সংখ্যানুপাতিক হারে জাতীয় সংসদের সদস্যপদ বণ্টনের দাবি।


এসব দাবির ফলে সবার প্রত্যাশার বাইরে যে পক্ষটা এর সুবিধা পাচ্ছে, সেটা হলো পতিত আওয়ামী লীগ। গণ-অভ্যুত্থানের পরের ছয় মাস বা এক বছরের মধ্যেও যদি জাতীয় নির্বাচনটা অনুষ্ঠিত হতো, তাহলে এতদিনে একটি যথার্থ নির্বাচিত সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্বে থাকত। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত সেই সরকারের পেছনে থাকত দেশের কোটি কোটি মানুষের সমর্থন। সে কারণে তারা জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী সর্বসম্মত সংস্কার কাজগুলো সম্পন্ন করে ফেলতে পারত এতদিনে। তাছাড়া স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিচারও একটা গতি পেত। একইসঙ্গে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে আওয়ামী লীগের বিচারের বিষয়টিও হালে পানি পেত। কিন্তু দেশের কতিপয় রাজনৈতিক দলের ক্ষুদ্র স্বার্থের কারণে ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের অর্জনগুলোই এখন হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। এক মাস আগেও পতিত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা হঠাৎ একটা মিছিল করলেও তা ৮-১০ জনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকত, এছাড়া এগুলো আওয়ামী ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বিশেষ দিনেই অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু মাসখানেক আগে বিএনপি যখন ঘোষণা করল যে তারা আর আওয়ামী লীগের মিছিলে বাধা দেবে না, তারপরই আওয়ামী লীগ অনুসারীরা পূর্ণ-উদ্যমে মাঠে নেমে পড়ল। এখন প্রায় প্রতিদিনই আওয়ামী নেতাকর্মীরা ঢাকার ৫-৬টি জায়গাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ১৫-২০টি করে মিছিল করছে এবং এ মিছিলে অংশগ্রহণের পরিমাণও বাড়ছে দিন দিন। তাছাড়া আওয়ামী লীগ তো শুধু তার নেতাকর্মীদের ওপর নির্ভর করে না, তাদের নির্ভরতার অন্যতম জায়গা হলো দেশের অবসরপ্রাপ্ত আমলা-পুলিশ সদস্যরা ও দেশের বাজারে সিন্ডিকেট সৃষ্টিকারী ব্যবসায়ীরা, যাদের হাতে রয়েছে গত পনেরো বছরে অবৈধ পথে উপার্জিত কোটি কোটি টাকা। এরাও এখন সক্রিয় হতে শুরু করেছে এবং সে কারণেই আওয়ামী সমর্থকদের অবৈধপথে সংগৃহীত এ টাকাও এখন কথা বলা শুরু করছে। আরও উদ্বেগজনক একটি খবর সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে, যাতে দেখা যাচ্ছে যে ভারত থেকে ছাপানো দুই লাখ কোটি টাকার জাল মুদ্রা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে দেশের অর্থনীতিকে একদম ধ্বংস করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও