
খুনের ৫২ শতাংশ মামলায় সব আসামি খালাস, কারণ কী
রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের হামলা, পারিবারিক বিরোধ, শত্রুতা কিংবা ডাকাতি-ছিনতাই; কারণ যা-ই হোক না কেন, খুনের ঘটনায় করা ৫২ শতাংশ মামলায় আসামিরা খালাস পান। অন্যভাবে বলা যায়, দেশে খুনের ঘটনায় যত মামলা হয়, তার মধ্যে অর্ধেকের বেশি মামলায় শেষ পর্যন্ত আসামিদের কোনো সাজা হয় না।
কিছু ক্ষেত্রে খুনের মামলায় আসামিরা ধরা পড়ার পর হয়তো সাময়িকভাবে জেলে যান, কিন্তু বিচার শেষে খালাস পেয়ে যান তাঁরা। পুলিশের গবেষণাতেই এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
‘হত্যা মামলার সাজার হার কম হওয়ার কারণ অনুসন্ধান’ শীর্ষক এই গবেষণা করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। চলতি বছরের মে মাসে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে পিবিআই।
গবেষণায় উঠে এসেছে, মূলত চারটি কারণে খুনের ঘটনায় করা অর্ধেকের বেশি মামলার আসামিরা খালাস পান। এর মধ্যে–
- বাদী এবং বিবাদীর সমঝোতার কারণে সবচেয়ে বেশি মামলার আসামিরা খালাস পান
- মামলার এজাহারের দুর্বলতা
- তদন্তে ত্রুটি
- তদন্তে দীর্ঘ সময় নেওয়া
- তদন্ত কর্মকর্তার অদক্ষতা ও প্রভাবিত হওয়া
- এজাহার, সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে মিল না থাকা
- ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে অসংগতি
- রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো
- সাক্ষীদের আদালতে হাজির করার ক্ষেত্রে ব্যর্থতা
- সাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখানো
- জবানবন্দি সঠিকভাবে না নেওয়া
আরও বিভিন্ন কারণে অনেক মামলায় আসামিরা খালাস পেয়েছেন। এ ছাড়া বিচারের দীর্ঘসূত্রতার কারণেও অনেক ক্ষেত্রে আসামি খালাস পেয়ে যান।
পিবিআইয়ের গবেষণায় ২৩৮টি খুনের মামলা পর্যালোচনা করা হয়েছে। এসব মামলার রায় হয়েছে ২০১৫ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে। মামলাগুলো হয়েছিল ১৯৮৬ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে। এর মধ্যে ১২৩টি মামলায় সব আসামি খালাস পেয়েছেন। ১১৫টি মামলায় আসামিদের সাজা হয়েছে।
গবেষণার জন্য যেসব মামলা বিশ্লেষণ করেছে পিবিআই, তার মধ্যে রয়েছে সম্পত্তি ও পারিবারিক বিরোধের কারণে খুন। মাদক ব্যবসা ও জুয়ার টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে খুন, আর্থিক লেনদেনের বিরোধ থেকে খুন, ডাকাতি-ছিনতাইকালে খুনের ঘটনা এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপর হামলা ও দলীয় কোন্দলের কারণে খুন।
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- আসামি খালাস