You have reached your daily news limit

Please log in to continue


পানিসম্পদ ‘উপদেষ্টাকে কাকুতি-মিনতির কথাটা জানাবেন’

‘পা ধরি বাবা, হামার বাড়িটা বাঁচান বাবা। কয়টা বস্তা দিয়া ভাঙা বন্ধ করি দেও। আল্লাহ তোমার ভালো করবে বাবা।’ সম্প্রতি ব্রহ্মপুত্র নদের বাঁ তীরে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী-রাজীবপুর উপজেলায় ভাঙন পরিস্থিতি দেখতে গিয়েছিলাম। তখন রৌমারী উপজেলার ঘুঘুমারিতে ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে বয়স্ক এক নারী হাতজোড় করে কথাগুলো বলছিলেন।

ওই স্থানে অনেকেই যখন ভাঙন বন্ধের ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করছিলেন, তখন আমার পাশের চেয়ারে বসা পার্শ্ববর্তী মসজিদের ইমাম আবদুল মজিদের দুচোখ গড়িয়ে পানি পড়ছে। অশ্রুসিক্ত ইমাম। তাঁর ভিটেমাটি এখন যেকোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হবে। ভাঙনের আশঙ্কায় ঘর তুলে একটু দূরে রেখেছেন। ৪০টি ফলবান সুপারিগাছসহ সব গাছ কেটে ফেলতে হয়েছে। কোথায় যাবেন, কী করবেন জানেন না। কেবলই দুচোখ গড়িয়ে পানি পড়ছে।

রৌমারী উপজেলার পাখি ধরা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক রইচ উদ্দীন ভাঙনের কথা বলতে গিয়ে ডুকরে ডুকরে কাঁদছিলেন। তাঁর কান্নার সময় উপস্থিত নারী-পুরুষ অনেকেই কাঁদছিলেন। স্কুলশিক্ষক বলছিলেন, ‘মানুষের বাঁশের ঝোপের তলায় কোনাকাঞ্চিতে কোনোমতে মানুষের জমিতে একটা ছাপরা (চালা) তুলে থাকা যে কী বেদনাদায়ক, সেটা আপনারা জানেন কি না আমি বুঝি না। আমি আপনাদের পায়ে ধরে মিনতি করি, আমাদের আর নিরাশ করবেন না, আর নিঃস্ব করবেন না, বাস্তুহীন করবেন না। মাননীয় উপদেষ্টা মহোদয়কে আমাদের আকুতি-মিনতির কথাটা জানাবেন।’

চর মেন্দার আলগায় গিয়েছিলাম ভাঙন দেখতে। সেখানে অনেক বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এখনো অনেক বাড়ি ভাঙবে বলে মনে করছেন নদীতীরের বাসিন্দারা। চিৎকার করে কেঁদে কেঁদে এক ব্যক্তি সহায়তা চাইলেন সরকারের। কাঁদতে থাকা ব্যক্তিটির বাড়ি নদীতে গেলে সন্তান নিয়ে কোথায় যাবেন, এই অনিশ্চয়তা তার। ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনকবলিত মানুষদের সঙ্গে কথা বলছিলাম, এমন সময় এক প্রবীণ নারী কোথা থেকে ছুটে এসে আহাজারি করতে থাকলেন। ভাঙন থেকে মুক্তি চান। নাম তাঁর হয়রান বেগম। রাষ্ট্র তাঁকে যেন চরম হয়রানির মধ্যে রেখেছে।

কুড়িগ্রাম জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের বাঁ তীরের দুই উপজেলা রাজীবপুর ও রৌমারী। এ দুই উপজেলার পাশ দিয়ে ব্রহ্মপুত্র প্রায় ৪২ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়। এর মধ্যে প্রায় ১৪ কিলোমিটারে তীব্র ভাঙন আছে। বাঁ তীরে কয়েকটি স্থানে ভাঙনকবলিত মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, বর্তমানে যেখানে নদী আছে, অর্ধশত বছর আগে নদী সেখান থেকে স্থানবিশেষে প্রস্থে কোথাও ১০-১২ কিলোমিটার, কোথাও ৭-৮ কিলোমিটার দূরে ছিল নদী।

রাজীবপুর উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নের পাইকানটাড়ি পাড়ায় নজরুল ইসলাম জোতদার নামে সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়। যে স্থানে কথা বলছিলাম, সেই স্থানে প্রস্থে ১২-১৪ কিলোমিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ওই স্থানে ভাঙন রোধে কোনো সরকার অতীতে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। হাজারো বাড়িঘর ভেঙে গেলেও কোনো সরকার একজন ব্যক্তিকেও পুনর্বাসন করেনি। বাড়ি ভেঙে গেলে দু-একবার কয়েক কেজি চাল দিয়েছে।

একই কথা বলেছেন যে কয়েকটি ভাঙনকবলিত এলাকায় কথা বলেছি তাঁদের সবাই। অনেকে জানালেন, এ নদী এ রকম ছিল না। বর্ষা মৌসুমে জোরপূর্বক দুই কিলোমিটার প্রস্থে ছিল। এখন সেটি কোথাও কোথাও প্রায় ১৪ কিলোমিটারে পরিণত হয়েছে।

যে কয়েকটি এলাকায় ভাঙনকবলিত মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি, সেখানে শিশুদের চেহারা একই রকম। বোঝা যাচ্ছে, শিশুরা অপুষ্টিতে ভুগছে। মোনাজাত উদ্দীন গত বছর আশির দশকে চিলমারীর জীবন নিয়ে যেসব প্রতিবেদন করেছিলেন, সেই প্রতিবেদনে থাকা শিশুদের মুখচ্ছবি যেন দেখতে পাচ্ছিলাম। করুণ মুখগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকা যায় না। অনেকবার বাড়ি ভেঙেছে—এ রকম অনেকের সঙ্গে দেখা হলো। একজন জানালেন, ১৬ বার তাঁর বাড়ি ভেঙেছে।

নৌপথে যখন ব্রহ্মপুত্রের বাঁ তীর ঘেঁষে যাচ্ছিলাম, দেখলাম অনেক স্থানে বাড়ি ভাঙছে। অনেক স্থানে কাটা হচ্ছে গাছ, অনেক স্থানে ঘরবাড়ি সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। কয়েকটি সড়ক দেখলাম, যেগুলো নেমে গেছে নদীতে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন