
মাদক পাচার: ইয়াবার আঁতাতে জড়িত সবাই
কক্সবাজার হয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ ইয়াবা বড়ি দেশে ঢুকছে। মিয়ানমারের সিন্ডিকেট, স্থানীয় চক্র ও রোহিঙ্গাদের সহযোগিতায় প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার মাদক আসছে। প্রশাসন কঠোর নজরদারির কথা বলে এলেও বাস্তবে ইয়াবার স্রোত থামছে না। বরং বলা হচ্ছে, মাদক পাচার আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেড়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, খোদ পুলিশ এবং মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কিছু ব্যক্তির সঙ্গে মাদক পাচারকারীদের সম্পৃক্ততা সর্বনাশা মাদককে কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা দুরূহ করে তুলেছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা স্বয়ং মাদক নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি—এ সোজাসাপ্টা স্বীকারোক্তি দিয়ে বলেছেন, ‘মাদক কর্মকর্তাদের সঙ্গে গডফাদাররা চা-কফি খাচ্ছে।’
কক্সবাজারের অন্তত ২১টি সীমান্ত পথ দিয়ে ইয়াবা ও ক্রিস্টাল মেথ মাদক দেশে ঢুকছে। স্থানীয়রা মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মিলে এসব চালান সরবরাহ করছে। মিয়ানমারের সিন্ডিকেট সীমান্ত পার করে কক্সবাজার থেকে অনায়াসে চট্টগ্রাম হয়ে খোদ রাজধানী ঢাকা পর্যন্ত চালান পৌঁছে দিচ্ছে। এই সিন্ডিকেটে জড়িয়ে পড়েছেন মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থারই কিছু অসাধু কর্মকর্তা। মাঝেমধ্যে মাদকের কিছু চালান অন্য বাহিনীর হাতে ধরা পড়লেও পুরো চক্র অক্ষতই থেকে যায়। আটক হয় মূলত চালান বা সাধারণ বাহকেরা।
২০১৯ সালে আত্মসমর্পণ করা এক সময়ের শীর্ষ ইয়াবা গডফাদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কী পরিমাণ ইয়াবা আর আইস টেকনাফ দিয়ে ঢুকছে, সেটা আপনাদের কল্পনার বাইরে। মাঝখানে কিছুটা কমেছিল। তবে এখন পাচার আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। মিয়ানমারের পার্টি এখন শহর পর্যন্ত চালান পৌঁছে দিচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সব ঠেকাতে পারছে না। ২০টি চালান গেলে সর্বোচ্চ একটা ধরা পড়ে। অনেক সময় সেটাও হয় সমঝোতা না হওয়ার কারণে।’
জাতিসংঘের মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (ইউএনওডিসি) বলছে, বাংলাদেশে প্রবেশ করা মাদকের মাত্র ১০ শতাংশ ধরা পড়ে, বাকি ৯০ শতাংশ অদৃশ্য থেকে বাজারে ছড়িয়ে যায়।
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- ইয়াবা
- মাদক পাচার