You have reached your daily news limit

Please log in to continue


জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলীয় জোটের ভবিষ্যৎ

বাংলাদেশের রাজনীতিতে দল নিষিদ্ধ করার দাবি যেন এক পুনরাবৃত্ত ইতিহাস। যে দল ক্ষমতায় থাকে, তারা প্রায়ই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিষিদ্ধ করার পথ খোঁজে, আর একটি পক্ষ ‘ফাঁকা মাঠে গোল করার মওকা’ মিলবে ভেবে তাতে সমর্থন জোগায়—যেন নিষিদ্ধ করাই সংকট সমাধানের একমাত্র উপায়। কিন্তু ইতিহাস বলছে, এই কৌশল কখনো স্থায়ী সমাধান আনেনি। সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের পতন ও দলটির কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার পর নতুন করে সেই দাবির তির ছুটে যাচ্ছে তাদের দীর্ঘদিনের শরিক ১৪ দলীয় জোট ও জাতীয় পার্টির দিকে। প্রশ্ন উঠছে—দল নিষিদ্ধ করলে কি সত্যিই রাজনৈতিক সংকট প্রশমিত হবে, নাকি পরিস্থিতি আরও ঘনীভূত হয়ে বিস্ফোরণের দিকে ধাবিত হবে? কারণ, এসব দলের সঙ্গে শুধু নেতৃত্ব নয়, জড়িয়ে আছে লাখো কর্মী-সমর্থকের রাজনৈতিক জীবন ও অস্তিত্ব। তাঁদের রাজনৈতিক আশ্রয় কেড়ে নিলে তাঁরা কোথায় যাবেন, কোন নতুন ছায়াতলে দাঁড়াবেন—এই প্রশ্নের উত্তর এখনো অনিশ্চিত, আর সেই অনিশ্চয়তাই বর্তমান রাজনীতিকে আরও অস্থির করে তুলছে।

বাংলাদেশের ইতিহাসে দেখা গেছে, দল নিষিদ্ধ করে রাজনৈতিক সমস্যা সমাধান হয়নি। পাকিস্তান আমলে আওয়ামী লীগকে দমন করার চেষ্টা হয়েছিল; শেখ মুজিব ও তাঁর সহযোদ্ধাদের কারাগারে বন্দী করে রাজনৈতিক কার্যক্রম স্তব্ধ করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু ফল হয়েছিল উল্টো—রাজনৈতিক দমননীতি আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল। বাংলাদেশের ইতিহাসে দেখা গেছে, দল নিষিদ্ধ করে রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান হয়নি।

একইভাবে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করা হয়। পরে নির্বাহী আদেশে দলটিকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়। সরকারের ধারণা ছিল, জামায়াত নিষিদ্ধ হলে তাদের সাংগঠনিক শক্তি ভেঙে পড়বে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল উল্টো চিত্র—আওয়ামী লীগের পতনের পর জামায়াত ঠিকই নতুন উদ্যমে কার্যক্রম চালাচ্ছে। এমনটাও দেখা যাচ্ছে যে জামায়াতের কর্মী-সমর্থকেরা খোদ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনে পরিচয় গোপন রেখে কার্যক্রম চালিয়েছেন, এমনকি নেতৃত্বের আসনও বাগিয়েছেন। অর্থাৎ দল নিষিদ্ধ করা হলেও তাদের জনভিত্তি বা সংগঠন শেষ হয়ে যায়নি।

আরও পেছনে গেলে দেখা যায়, ব্রিটিশ আমল ও পাকিস্তান আমলে কমিউনিস্ট পার্টিকে একাধিকবার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সরকার মনে করত কমিউনিস্ট আন্দোলন তাদের শাসনব্যবস্থার জন্য হুমকি। পাকিস্তান সরকারও একইভাবে কমিউনিস্ট পার্টিকে ভয় পেত। তাই তারা বারবার দলটিকে নিষিদ্ধ করেছে, নেতাদের কারাগারে পাঠিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে নিষিদ্ধ করার পরও কমিউনিস্ট পার্টির কার্যক্রম বন্ধ হয়নি। তারা আত্মগোপনে কিংবা সমমনা সংগঠনের ব্যানারে থেকে আন্দোলন চালিয়েছে, কৃষক-শ্রমিকদের মধ্যে সংগঠন গড়ে তুলেছে। ফলে নিষিদ্ধ হলেও দলটি রাজনৈতিকভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছে।

এই ঐতিহাসিক উদাহরণগুলো থেকে বলা যায়, দল নিষিদ্ধ করে তাদের রাজনীতি বন্ধ করা যায় না। বরং অনেক সময় নিষিদ্ধ করা হলে তারা আরও তৃণমূলভিত্তিক বিস্তৃতি এবং আন্ডারগ্রাউন্ড শক্তিতে পরিণত হয়, যা সরকার ও রাষ্ট্রের জন্য আরও অস্থিরতা তৈরি করে। আজ জামায়াত যেভাবে নিষিদ্ধ হয়েও টিকে আছে, বা অতীতে কমিউনিস্ট পার্টি যেভাবে বারবার দমন-পীড়ন সত্ত্বেও কার্যক্রম চালিয়েছে, তা প্রমাণ করে রাজনৈতিক শক্তিকে নিষিদ্ধ করে নিশ্চিহ্ন করা যায় না।
আওয়ামী লীগের পতনের পর তাদের দীর্ঘদিনের শরিক ১৪ দলীয় জোট এখন কার্যত ছত্রভঙ্গ। দুই দশকের বেশি সময় ধরে ক্ষমতার সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে তারা মূলত আওয়ামী লীগের ওপর নির্ভরশীল রাজনীতি করেছে। ফলে সরকারের পতনের সঙ্গে সঙ্গে শরিক দলগুলোর রাজনৈতিক জমিনও ভেঙে পড়েছে। একসময়ের তেজি ছাত্র গণ-আন্দোলন বা মাঠের সংগ্রামের জায়গায় এই দলগুলো অনেক দিন ধরেই নির্বাচনের আসন ভাগাভাগি, মন্ত্রিত্ব আর সুবিধা পাওয়াকেই মুখ্য মনে করেছে। কিন্তু ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের পর যখন শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলো এবং আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হলো, তখন শরিক দলগুলো একপ্রকার অনাথ হয়ে গেল।

ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, ন্যাপ—এমন দলগুলো এখন কার্যত নামমাত্র অস্তিত্ব নিয়ে টিকে আছে। দলের সভাপতি বা জ্যেষ্ঠ নেতারা কেউ কারাগারে, কেউ আত্মগোপনে, কেউ আবার চুপচাপ। তাঁদের কর্মীরা কর্মসূচি দিতে পারছেন না, রাজনীতির মাঠে নামতে পারছেন না। শুধু দিবসভিত্তিক ছোট ছোট আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া রাজনৈতিক তৎপরতা নেই বললেই চলে। এই দীর্ঘস্থায়ী নিষ্ক্রিয়তা তাঁদের টিকে থাকার সম্ভাবনাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, যদি এভাবে আরও কিছু বছর যায়, তবে এসব ছোট শরিক দল ইতিহাসের পৃষ্ঠায় নাম হিসেবে থাকবে বটে, কিন্তু বাস্তব রাজনীতিতে কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন