চল্লিশ ও পঞ্চাশের দশকে চলচ্চিত্রশিল্পকে অনেকেই ‘ভদ্রলোকের পেশা’ ভাবতেন না। বিশেষ করে নারীদের জন্য তো এ পেশা ছিল একরকম সামাজিক বর্জনের নাম। কিন্তু সেই সময়েই কিশোরী বয়সে কাজ শুরু করেছিলেন অনেক বড় তারকা। তাঁদেরই একজন গীতা বালি। মাত্র ১২ বছর বয়সে কাজ শুরু করেন তিনি। পরে কেদার শর্মার ছবি ‘সোহাগ রাত’ তাঁকে রাতারাতি তারকা বানায়।
দারিদ্র্যের শৈশব থেকে তারকা হয়ে ওঠা
গীতা বালির ছেলে আদিত্য রাজ কাপুর এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘মায়ের জীবন একেবারেই বদলে যায় “সোহাগ রাত”–এর পর। আমার নানা একদিকে পণ্ডিত ছিলেন, পরে শিখ ধর্ম গ্রহণ করেন। তিনি দর্শনচর্চা করতেন, মা তাঁর সঙ্গে যেতেন ভজন গাইতে। কিন্তু এতে পেট চলে না। তাই মাকেই থিয়েটার ও অভিনয়ে নামতে হয়।’
সমাজের বর্জন সয়ে মাত্র ১৩–১৪ বছর বয়সে লাহোরে পালিয়ে যান গীতা। যোগ দেন অল ইন্ডিয়া রেডিওতে, সেখানেই শুরু হয় তাঁর গানের ক্যারিয়ার। লাহোরে দুটি ছবিতে কাজ করার পর চলে আসেন বোম্বেতে, সেখানেই কেদার শর্মার চোখে পড়েন তিনি। এরপর একে একে অভিনয়ের সুযোগ পান, আর অচিরেই হয়ে ওঠেন জনপ্রিয় তারকা।
শাম্মী কাপুরের সঙ্গে প্রেম আর হঠাৎ সংসার
গীতার সঙ্গে তখন প্রেমে পড়েন শাম্মী কাপুর। সেই সময় অভিনেতার টানা ১৫টি ছবি ফ্লপ হয়েছিল। কিন্তু গীতা ছিলেন প্রতিষ্ঠিত তারকা। তবু তিনি কোনো দ্বিধা না করে সংসার বেছে নেন। মুহূর্তেই ছেড়ে দেন তারকাখ্যাতি।
কেদার শর্মার স্মৃতিচারণা
১৯৯৯ সালে মৃত্যুর কয়েক মাস আগে এক সাক্ষাৎকারে কেদার শর্মা বলেছিলেন, ‘গীতা শিক্ষিত ছিল না, কিছুই ছিল না তার হাতে। কিন্তু ও জানত, পরিশ্রম করলে কেউ আটকাতে পারবে না। গীতা ওর অন্ধ বাবার সঙ্গে রেললাইনের ধারে একটা ঘরে থাকত। ওখানেই গিয়ে ওকে প্রথম দেখি। বসার মতো চেয়ারও ছিল না, কাঠের পাটাতন এনে বসতে দিয়েছিল। সেখানেই প্রথম দেখা আমার গীতার সঙ্গে। আমি ওকেই বেছে নিলাম।’