You have reached your daily news limit

Please log in to continue


শান্তির নীল হেলমেট : বাংলাদেশের গৌরব

স্বাধীনতার পর থেকে আমাদের দেশ মানবতা, ন্যায় ও শান্তির পক্ষে অবস্থান নিয়ে বিশ্ব দরবারে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এ অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করেছে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী বাহিনীর অবদান। নীল হেলমেটধারী এ সৈনিকরা আজ নিষ্ঠা, সততা ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসাবে বিশ্বে সমাদৃত।

আজ আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে, লাল-সবুজের পতাকাকে ৩৭ বছর ধরে বিশ্বের বুকে সমুন্নত রেখেছেন বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা। আজকের এই বিশেষ দিনে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী বাহিনীর যে সদস্যরা নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আত্মত্যাগ করেছেন, তাদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী বাহিনী : বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী বাহিনী হলো বাংলাদেশের সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনুষঙ্গিক নিরাপত্তা বাহিনী, যারা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করে। ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ প্রথমবার জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সেনাবাহিনী পাঠায় এবং সেই থেকে আজ পর্যন্ত দেশের সামরিক ও পুলিশ বাহিনী বিশ্বজুড়ে শান্তি রক্ষা ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় অবদান রেখে আসছে।

বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী বাহিনী শান্তি রক্ষার পাশাপাশি মানবিক সহায়তা, শরণার্থী সুরক্ষা, সংঘর্ষ নিরসন এবং পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ১৯৮৮ সালে ইউএন ইরান-ইরাক মিলিটারি অবজারভেশন গ্রুপ (ইউনিমগ) মিশনে মাত্র ১৫ জন সেনা পর্যবেক্ষক প্রেরণের মাধ্যমে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছিল। এরপর বাংলাদেশকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। পরবর্তী কয়েক বছর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বেশ সুনামের সঙ্গে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে কাজ করে গেছে। সে সময় অর্থাৎ ১৯৯৩-৯৪ সালে সবচেয়ে আলোচিত রুয়ান্ডা, সোমালিয়া ও বসনিয়া-এ তিনটি শান্তি মিশনে দক্ষতার পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসে। দরিদ্র দেশের সেনাবাহিনী দক্ষতা এবং সামরিক জ্ঞানে রুয়ান্ডায় বেলজিয়ান, সোমালিয়ায় আমেরিকান এবং বসনিয়ায় ফরাসি সেনাবাহিনীকে যে টেক্কা দিতে পারে, তা জাতিসংঘসহ সংশ্লিষ্ট দেশের কর্মকর্তাদের ধারণার বাইরে ছিল। ফলে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় হতে থাকে।

১৯৯৪ সালে আফ্রিকার রুয়ান্ডায় গণহত্যার সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি ব্রিগেড গ্রুপ সেখানে নিয়োজিত ছিল। প্রায় ১০০ দিনের গৃহযুদ্ধে তখন ছয় লক্ষাধিক মানুষ নিহত হয়েছিল। উল্লিখিত শান্তি মিশনে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে বেলজিয়ানসহ আফ্রো-ইউরোপিয়ান ব্যাটালিয়নগুলো দ্রুত প্রত্যাহার করে তাদের মিশন গুটিয়ে ফেললেও বাংলাদেশের সেনাসদস্যরা বুকে সাহস নিয়ে মিশন এলাকায়ই থেকে যান। ফলে গণহত্যায় মৃত্যুর হার অনেক কম হয়েছিল। জাতিসংঘের সিদ্ধান্তে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকেও সেখান থেকে প্রত্যাহার করতে হয়েছিল। বাংলাদেশি সৈনিকদের এ সাহস ও দক্ষতা দেখে তখন সবাই মুগ্ধ হয়েছিল। সোমালিয়া থেকে যখন শান্তি মিশন গুটিয়ে নেওয়া হয়, আমেরিকান সেনাদের দাবি ছিল, তাদের শেষ সৈনিক সোমালিয়া না ছাড়া পর্যন্ত বাংলাদেশের সেনাদের তাদের সঙ্গে থাকতে হবে। সোমালিয়ার জনগণের হৃদয় জয় করে বাংলাদেশিরা নিজেদের অবস্থানকে সেখানে সুদৃঢ় করে নিয়েছিলেন।

স্থানীয় জনগণের আস্থা আর ভালোবাসাই জাতিসংঘ মিশনে বাংলাদেশি সেনাদের মূল শক্তি। প্রতিটি মিশনেই বাংলাদেশিদের এ দক্ষতা জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের মুগ্ধ করেছে। ব্যক্তিগত শৃঙ্খলা, প্রশাসনিক আর সামরিক দক্ষতার জন্য যে কোনো সামরিক কমান্ডারের কাছে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা অপরিহার্য হয়ে উঠেছেন। বিশেষ করে ইউরোপ-আমেরিকান সেনাপতিরা বাংলাদেশি সামরিক কর্মকর্তাদের দক্ষতা ও সাহসিকতায় মুগ্ধ ও আস্থাশীল।

১৯৯৫ সালে ইউরোপের একমাত্র শান্তি মিশন বসনিয়ায় ফ্রান্স ব্যাটালিয়ন প্রত্যাহার করলে বাংলাদেশি সেনারা তাদের জায়গায় কাজ শুরু করেন। ৩৪টি দেশের সেনাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তখন বাংলাদেশের ব্যাটালিয়নকে শান্তি রক্ষার কাজে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে হয়েছিল। সবারই ধারণা ছিল, দরিদ্র দেশের সেনারা ফরাসি সেনাদের জায়গায় কাজ করতে পারবেন না। কিন্তু পরবর্তী সময়ে দেখা গেছে, যেখানে ডাচ আর ইউক্রেনীয় সেনারা বসনিয়ার ‘স্রেব্রেনিচা’ ও ‘জাপা’ নামক দুটি শহরে গণহত্যা ঠেকাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে, সেখানে বাংলাদেশি সেনারা তাদের তুলনায় অনেক হালকা অস্ত্র নিয়েও শুধু সাহস, দক্ষতা আর দৃঢ় মনোবল দিয়ে বসনিয়ার ‘বিহাচের’ মতো গুরুত্বপূর্ণ বিরাট শহরের জনগণকে রক্ষা করতে সমর্থ হয়েছেন।

১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ ৪ হাজার সদস্য নিয়ে তৃতীয়, ২০০০ সালে ৫ হাজার ৬০০ সদস্য নিয়ে দ্বিতীয় এবং ২০০১ সালে ৬ হাজার সদস্য নিয়ে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে শীর্ষে উঠে আসে। ২০১১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসের শেষদিন পর্যন্ত ২৮ মাসের মধ্যে ২০ মাসই বাংলাদেশ শীর্ষে ছিল। বর্তমানেও বাংলাদেশ শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। আড়াই যুগেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বের ৪০টি দেশের ৫৪টি মিশনে শান্তি রক্ষায় অনন্য ভূমিকা রেখে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা দেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন। মিশনে বাংলাদেশি সেনা-কর্মকর্তাদের মধ্যে ছয়জন ফোর্স কমান্ডার ও সাতজন ডেপুটি ফোর্স কমান্ডার সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের গৌরব অর্জন করেন। ১৯৯৩ সাল থেকে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী শান্তি মিশনে দায়িত্ব পালন করে আসছে। বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা ১৯৮৯ সাল থেকে এ মিশনে অংশ নিচ্ছেন। এ পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার বাংলাদেশি নারী শান্তিরক্ষী এরই মধ্যে বিভিন্ন মিশন এলাকায় সাফল্যের সঙ্গে তাদের দায়িত্ব সম্পন্ন করেছেন। শান্তি মিশনে এ পর্যন্ত ১৬৮ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী প্রাণ দিয়েছেন (সেনাবাহিনী : ১৩১ জন, নৌবাহিনী : ৪ জন, বিমানবাহিনী : ৯ জন, এবং পুলিশের প্রায় ২২২৪ জন)। আহত হয়েছেন আনুমানিক ২৬৬ জন। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর সদস্য ২৪১ জন, নৌবাহিনীর ৯ জন, বিমানবাহিনীর ৭ জন এবং পুলিশের ৭ জন (সূত্র : Armed Forces Division - AFD)।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন