You have reached your daily news limit

Please log in to continue


‘অতিরিক্ত’ সংস্কৃতি ও অস্তিবাদী জিরাফের ব্যক্তিগত গলা

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবুল ফয়েজ মো. আলাউদ্দীন খানকে সম্প্রতি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এটা নতুন খবর নয়। এটা সংস্কৃতিজনের জানা হয়ে গেছে, অতিরিক্ত সচিব তার ওপর অর্পিত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বের ‘অতিরিক্ত দায়িত্ব’ হিসেবে মহাপরিচালকের এই দায়িত্ব পালন করবেন বলে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি একটি স্বায়ত্তশাসিত জাতীয় প্রতিষ্ঠান, যা সারাদেশের শিল্প-সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করে—সেটি পরিচালনা করবেন একজন সচিব তার মূল কাজের বাইরে অতিরিক্ত কাজ হিসেবে! অর্থাৎ বাংলাদেশের শিল্প-সংস্কৃতির চর্চা মূলধারার বাইরের অতিরিক্ত কোনো বিষয়? এর মাধ্যমে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় আমাদের কী বার্তা প্রদান করল? রাষ্ট্রের চোখে শিল্প-সংস্কৃতি মূল ধারার কোনো বিষয় নয়, বরং ‘অতিরিক্ত’ বা ‘অবান্তর’ কোনো বিষয়?

এর আগে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ পদত্যাগ করেছিলেন মন্ত্রণালয় তথা সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর অযাচিত হস্তক্ষেপের অভিযোগ এনে। পদত্যাগ করে লিখিত বক্তব্যে সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেন, “উপদেষ্টা ও মন্ত্রণালয়ের অযাচিত হস্তক্ষেপ, আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতার জটিলতা, একাডেমির সচিবকে ‘ফোকাল পারসন’ হিসেবে মনোনীত করে মহাপরিচালকের বিধিসম্মত দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদান, বাজেট কর্তন, শিল্পকলার ভেতর থেকে ফাইল গায়েব করে দেওয়া, একাডেমির অভ্যন্তরে বিভিন্ন কর্মকর্তাকে প্ররোচিত করে কাজের পরিবেশ ব্যাহত করা এবং দুর্নীতিবাজ চক্রের নানা অপতৎপরতার কারণে আমি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি।”

সৈয়দ জামিল আহমেদের মতো একজন বিদগ্ধ মানুষ সরাসরি অভিযোগে এনে দায়িত্ব ছাড়ার পরও মন্ত্রণালয়ের কোনো বিকার চোখে পড়েনি। তাকে ফিরিয়ে আনার কোনো চেষ্টা তো করা হয়ইনি, বরং মহাপরিচালক হিসেবে অন্য কাউকে নিয়োগ দেওয়ার ব্যবস্থা না করে তৎকালীন শিল্পকলা একাডেমির সচিবকে দিয়ে ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক হিসেবে কার্যাবলি পরিচালনা করা হয়। সংস্কৃতিজনেরা মনে করেন, এটা করা হয়েছিল, যাতে করে সংস্কৃতি উপদেষ্টা তার খেয়ালখুশি মতো সব করতে পারেন।

ফল যা হবার তা-ই হলো। সৈয়দ জামিল আহমেদ দায়িত্ব নেওয়ার পর শিল্পকলা একাডেমি যে গতি পেয়েছিল তা মন্থর হয়ে গেল। তার চলে যাওয়ায় সংস্কৃতি উপদেষ্টা নিজেকে শিল্পকলা একাডেমির নিয়ন্ত্রক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করলেন এবং তার প্রেসক্রিপশনেই চলতে থাকল শিল্পকলা একাডেমি। এমনকি সৈয়দ জামিল আহমেদ দায়িত্ব নেওয়ার পর পরিচালনা পরিষদের একটি সভা হওয়ার পর আর কোনো সভাও অনুষ্ঠিত হয়নি। এসব অযাচিত নিয়ন্ত্রণ ও উদাসীনতার চূড়ান্ত রূপই হলো এই মহাপরিচালকের দায়িত্বকে ‘অতিরিক্ত দায়িত্ব’ হিসেবে বিবেচনা করা। এই সিদ্ধান্ত যেন এক ধরনের প্রতীকী ঘোষণা—শিল্পকলার মতো রাষ্ট্রীয় সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানকে মূল দায়িত্ব নয়, অবান্তর যোগ-বিয়োগের অঙ্গ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এর আগে আমরা দেখেছি শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন মুস্তাফা নূরউল ইসলাম, আজাদ রহমান, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, মুস্তাফা মনোয়ার, মনজুরে মওলা, কামাল লোহানী, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মুস্তাফা জামান আব্বাসীর মত বিদগ্ধজনেরা। তারা প্রত্যেকেই ছিলেন শিল্প ও সংস্কৃতির নিবেদিতপ্রাণ কর্মী; তাদের মধ্যে কেউ ছিলেন সৃষ্টিশীল শিল্পী, কেউ গবেষক, কেউবা নীতিনির্ধারণে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। অথচ সৈয়দ জামিল আহমেদ সরে যাওয়ার পর ছয় মাস শিল্পকলার সচিবকে দিয়ে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব চালানোর পর আরেকজন অতিরিক্ত সচিবকে নিয়োগ দেওয়া হলো অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে। ছয় মাসেও কেন একজন যোগ্য মহাপরিচালক বেছে নেওয়া গেল না? মন্ত্রণালয় ও উপদেষ্টার বিনা বাধায় ছড়ি ঘোরানোর জন্য? নাকি সংস্কৃতিকে একটি প্রশাসনিক শাখা-প্রশাখার অধীন করে রাখার জন্য?

অথচ শিল্পকলা একাডেমির মতো স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে বাজেট বরাদ্দ ব্যতীত অন্যান্য কার্যক্রমে মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ না করার বিধান রয়েছে। এটি কেবল আইন নয়, সাংস্কৃতিক স্বাধীনতার ন্যূনতম শর্ত। যখন আইনকে অগ্রাহ্য করে আমলাতন্ত্রকে শিল্পের নেতৃত্বে বসানো হয়, তখন তা কেবল ক্ষমতার খেলা নয়; এটি আসলে শিল্পের আত্মাকে খর্ব করার এক নিঃশব্দ প্রচেষ্টা।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন