অনেকে ভাবেন, যিনি স্লিম বা হালকা গড়নের, তাঁর নিশ্চয়ই কোনো হার্টের অসুখ থাকতে পারে না। স্লিম হলে রক্তে কোলেস্টেল বাড়বে না, উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসও হবে না। এ রকম ধারণা একেবারেই ঠিক নয়। সত্যি হলো, স্লিম বা পাতলা ব্যক্তির শরীরেও উচ্চ রক্তচাপ, বাড়তি কোলেস্টেরল কিংবা হৃদ্রোগ দেখা দিতে পারে।
স্লিম থাকা সত্ত্বেও কেন হৃদ্রোগ হয়
আমরা যদি হৃদ্রোগের ঝুঁকিগুলো খতিয়ে দেখি, তাহলে দেখব, হৃদ্রোগের ঝুঁকিগুলো দুই ধরনের।
● অপরিবর্তনীয় ঝুঁকি
বংশগতির প্রভাব বা রক্তের সম্পর্ক আছে, এমন কারও হৃদ্রোগের পারিবারিক ইতিহাস। বয়স বাড়তে থাকা। পুরুষ এবং মেনোপজ–পরবর্তী নারী।
● পরিবর্তনযোগ্য ঝুঁকি
ডায়াবেটিস; উচ্চ রক্তচাপ; রক্তে উচ্চমাত্রার খারাপ কোলেস্টেরল; ধূমপান; উচ্চতা অনুযায়ী অতিরিক্ত শারীরিক ওজন; কায়িক শ্রমের অভাব।
এখানে স্লিম বা হালকা গড়নের ব্যক্তির হয়তো অতিরিক্ত ওজন–সম্পর্কিত ঝুঁকিটি নেই, কিন্তু তাঁর অন্য হৃদ্রোগের ঝুঁকি যে নেই, তা তো নয়। গবেষণা বলছে, বর্তমানে দক্ষিণ এশীয়দের মধ্যে বংশগতির প্রভাবে হৃদ্রোগের হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রার কথা যদি বলি, তাহলে বলব, যাঁরা স্লিম, তাঁদের রক্তে উচ্চমাত্রায় খারাপ কোলেস্টেরল বাড়বে না, এ কথা বলা যাবে না। কারণ, বাইরে থেকে শরীর মেদমুক্ত মনে হলেও শরীরের ভেতর বিভিন্ন অঙ্গে চর্বি জমে থাকতে পারে। একে ভিসেরাল ফ্যাট বলে। এ ক্ষেত্রে রক্তে উচ্চমাত্রায় খারাপ কোলেস্টেরল থাকতে পারে। আবার স্লিম হলেও কেউ যদি নিয়মিত ব্যায়াম না করেন, তাহলে শরীরের মাংসপেশি দুর্বল হয়ে যায় এবং ভেতরে–ভেতরে চর্বি জমতে থাকে। ফাস্ট ফুড, ভাজাপোড়া ও মিষ্টিজাতীয় খাবার, কোমল পানীয় শরীরের ওজন না বাড়িয়েও রক্তে কোলেস্টেরল বাড়াতে পারে। এ ছাড়া ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ধূমপান ও মদ্যপান এবং পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই শুকনা–পাতলা ভেবে নিশ্চিন্তে বসে থাকার সুযোগ নেই।