
তিন বছরে চাষের মাছের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০০ টাকা
রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার রিকশাচালক মো. ইরফান গত মাসে, অর্থাৎ আগস্টে মাত্র দুইবার মাছ কিনেছেন। একবার দেড় কেজি ওজনের পাঙাশ, আরেকবার প্রায় দুই কেজির তেলাপিয়া। এ জন্য তাঁর খরচ হয়েছে প্রায় ৭৫০ টাকা। এই মাছ দিয়ে ইরফানের চার সদস্যের পরিবারের টেনেটুনে ছয় দিন চলেছিল। মাসের বাকি সময় তাঁদের কেটেছে ডিম, ব্রয়লার মুরগি কিংবা শাকসবজি খেয়ে।
প্রথম আলোকে মো. ইরফান বলেন, ‘মাছের দাম তো অনেক বেশি। কামাই (আয়) ভালো হইলে মাঝেমধ্যে তেলাপিয়া, পাঙাশ, সিলভার কার্প মাছ কিনি। না হইলে শুধু ডিম, মুরগি, সবজি খাই।’
বাজারে এখন সব ধরনের মাছের দামই চড়া। বিশেষ করে ‘গরিবের মাছ’ (কম দামি) বলে পরিচিত পাঙাশ, তেলাপিয়া ও কই ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত তিন বছরে এসব মাছের দাম কেজিতে ৮০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। তাতে তিন–চার বেলার মাছ কিনতেই একটি পরিবারের ৩০০ টাকার বেশি খরচ হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে রিকশাচালক ইরফানের মতো দরিদ্র কিংবা নিম্ন আয়ের মানুষেরা কম দামি মাছ খাওয়াও কমিয়ে দিয়েছেন।
মাছচাষি ও খুচরা বিক্রেতারা জানান, গত কয়েক বছরে চাষের মাছের উৎপাদন বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে চাহিদাও। তবে মাছ চাষের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ বিল, মজুরি ও খাবারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যাংকঋণের সুদহারও চড়া। এসব কারণে আগের তুলনায় মাছের উৎপাদন খরচ বেশি পড়ে। বদৌলতে বাজারে মাছের দাম বাড়তি। আর বছরের এই সময়ে চাহিদার তুলনায় মাছের সরবরাহ কিছুটা কম থাকে। এটিও দাম বাড়ার আরেকটি কারণ।