
এই সরকারও পুরোনো পথে, প্রশাসনে পদ ছাড়াই পদোন্নতি
জনপ্রশাসনে এখন নিয়মিত উপসচিব পদ রয়েছে এক হাজারের মতো। কিন্তু এই পদে কর্মকর্তা রয়েছেন ১ হাজার ৫৯৬ জন। পদের চেয়ে কর্মকর্তার সংখ্যা আগে থেকেই বেশি ছিল। তারপরও গত মাসে ২৬৮ জনকে উপসচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়।
পদোন্নতি দেওয়ার পর কর্মকর্তাদের দ্রুত পদায়ন করা যায় না। কারণ, পদায়নের মতো জায়গা কম, খালিও থাকে না। তখন কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিয়ে আগের পদেই রেখে দেওয়া হয়, তাঁরা আগের কাজই করেন। শুধু বাড়ে বেতন ও ভাতা। পাশাপাশি উপসচিব পদে তিন বছর চাকরির পর গাড়ি কেনার জন্য বিনা সুদের ঋণসুবিধা পাওয়া যায়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ১ সেপ্টেম্বরের প্রজ্ঞাপনে উপসচিব পদে পদোন্নতি পাওয়া ৫২ জন কর্মকর্তাকে আগের পদেই পদায়ন (ইনসিটু) করা হয়েছে। সব মিলিয়ে গত ২৮ আগস্ট উপসচিব পদে পদোন্নতি পাওয়া এ রকম ২৬৮ জন কর্মকর্তার বেশির ভাগের দায়িত্বে কোনো পরিবর্তন হয়নি।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এভাবে পদ ছাড়াই পদোন্নতি দেওয়া হতো। অনেকেই মনে করেন, আওয়ামী লীগ একতরফা ও পাতানো নির্বাচনে ক্ষমতায় থাকার জন্য আমলাদের খুশি রাখার চেষ্টা করত। এ জন্য গাড়ি ও বাড়ি কিনতে বিনা সুদে ঋণসুবিধা দেওয়া শুরু করে। পদোন্নতি দেওয়াও বাড়ানো হয়। পদোন্নতিতে এই সরকারও একই পথে হাঁটছে। একদিকে আমলারা পদোন্নতির জন্য চাপ দিচ্ছেন, সরকারও নমনীয় হয়ে তা মেনে নিচ্ছে। জনপ্রশাসনে সংস্কারের জন্য গঠিত সংস্কার কমিশনের বড় কোনো সুপারিশও সরকার বাস্তবায়ন করেনি। তবে বেতন বাড়াতে গঠন করা হয়েছে বেতন কমিশন।
অন্তর্বর্তী সরকারের জনপ্রশাসনবিষয়ক কমিটির সদস্য ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান প্রথম আলোকে বলেন, পদোন্নতির সংখ্যা ও যোগ্য কর্মকর্তা বাছাই করে সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড (এসএসবি) ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। জনপ্রশাসনবিষয়ক কমিটি মূলত পদোন্নতি ও পদায়নের ক্ষেত্রে যোগ্যতা ঠিক আছে কি না, সেটি দেখে। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত কর্মকর্তাদের পদায়নে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।