অনৈক্যের সানাই বাজাচ্ছে জুলাই সনদ

বিডি নিউজ ২৪ সালেহ উদ্দিন আহমদ প্রকাশিত: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৩০

জুলাই ঘোষণাপত্রটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস গত ৫ অগাস্ট সংসদ ভবনে সবার সামনে পড়েছেন। এই অনুষ্ঠান নিয়ে অনেক আতশবাজি জ্বালানো হয়েছিল, কিন্তু বাস্তবে অনুষ্ঠানটি ছিল আলোবিহীন। যাদের অনুরোধে এই ঘোষণাপত্রটি লেখা হয়েছিল, জুলাই আন্দোলনের নেতারা অধিকাংশই ওই অনুষ্ঠান বয়কট করেছেন। দু-একজন যারা এসেছিলেন, তারা মুখ গোমড়া করে অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে ছিলেন। অন্যরা, যাদের এই বিষয়ে তেমন উৎসাহ ছিল না, তারা মঞ্চে দাঁড়িয়ে শুধু সৌজন্য রক্ষা করেছেন।


জুলাই জাতীয় সনদের অবস্থা আরও ত্রাহি ত্রাহি। খসড়া তৈরি হলেও তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐকমত্য হয়নি এবং এর বাস্তবায়ন কীভাবে হবে, তা নিয়েও রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি। এই জট খোলার জন্য দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশন আবার বৈঠকে বসছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, জট খোলার যত চেষ্টা হচ্ছে, ততই জট বাড়ছে।


২.


জুলাই ঘোষণাপত্রে কেমন যেন ফরমায়েশিভাবে ইতিহাস লেখা হয়েছে। রাজনীতিবিদরা এতে তাদের মতামত দিয়েছেন এবং নিজেদের ইতিহাস যোগ করেছেন। সবকিছু মিলিয়ে যে ইতিহাস তৈরি হয়েছে, তাতে কেউই খুশি নন—সবারই কিছু না কিছু অপ্রাপ্তি রয়ে গেছে। এই ইতিহাস কি ইতিহাসবিদদের যাচাই-বাছাইয়ে টিকবে?


জুলাই সনদের দুটি অধ্যায় রয়েছে। প্রথম অধ্যায়ে, অনেকগুলো ‘যেহেতু’ দিয়ে আমাদের জাতির ইতিহাসের একটি সংক্ষিপ্ত পাঠ দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায়ে রয়েছে জুলাই ঘোষণার অঙ্গীকার। অঙ্গীকার নিয়ে কেউ তেমন বিরোধ বা বিরাগ জানায়নি। আমাদের রাজনীতিবিদরা অঙ্গীকারে অভ্যস্ত। তবে এই অঙ্গীকারের বাইরেও বিএনপি, এনসিপি, জামায়াত—সবারই নিজস্ব দলীয় অঙ্গীকার রয়েছে।


ঝামেলা হয়েছে ইতিহাসের পাঠ নিয়ে। সবাই চান ইতিহাসে নাম লেখাতে। কারও কারও কৃতিত্ব লেখা হয়েছে, কিছু কিছু বাদ পড়েছে। এখানেই হয়েছে সমস্যা। কিন্তু এভাবে তো ইতিহাস লেখার কথা নয়। যে ইতিহাস ঘটে গেছে, তার অনেক কিছু এ দেশের জনগণ স্বচক্ষে দেখেছে, অনেক কিছু ‘সত্যিকার ইতিহাস’ বইয়ে লেখা হয়ে গেছে। তাই আমি বলব, ইতিহাসের অংশটি না থাকলে প্রফেসর ইউনূস অনেক বিতর্ক থেকে রক্ষা পেতেন।


৩.


তবে তারও কোনো উপায় ছিল না। জুলাই আন্দোলনের নেতারা যেভাবে ইতিহাসকে চিন্তা করেন, তা যদি ঘোষণাপত্রে না থাকত, তাহলে ঘোষণাপত্র লেখা হতো না। ঘোষণাপত্র না লেখা হলে জুলাই সনদ লেখা যেত না। সনদ ছাড়া নির্বাচন দেওয়া যেত না। আর নির্বাচন না হলে বিকল্প কী ছিল?


ঘোষণাপত্রের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করা এই লেখার উদ্দেশ্য নয়। আমরা শুধু দেখব স্টেকহোল্ডারদের মতামত ও প্রতিক্রিয়া। স্টেকহোল্ডার বলতে রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও জুলাই আন্দোলনের শরিকদের বোঝাচ্ছি। আসল স্টেকহোল্ডার যে জনগণ, তাদের কোনো মতামত নেওয়া হয়নি—গণভোটের মাধ্যমে বা অন্য কোনোভাবে। পুরো বিষয়টিতে তারা অনুপস্থিত বা নির্লিপ্ত। অবশ্য ঘোষণায় বলা হয়েছে, “৫ আগস্ট ২০২৪ সালে গণ-অভ্যুত্থানে বিজয়ী বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হিসেবে এই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করা হলো।”


বিএনপি ঘোষণাপত্র নিয়ে মোটামুটি খুশি। তারা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় ছিল এবং এ দেশের অনিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির দায়ভার তাদেরও কম নয়। তাদের বিরুদ্ধে ‘যেহেতু’ অংশে কোনো নেতিবাচক কথা নেই। তাদের একমাত্র অভিযোগ, এনসিপির বক্তব্যকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও