দেশে সবাই আমাকে উপেক্ষা করেছে

প্রথম আলো বদরুদ্দীন উমর প্রকাশিত: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬:১৬

বদরুদ্দীন উমর, লেখক-গবেষক ও বামপন্থী রাজনীতিক। ৯৪ বছর বয়সে ঢাকার একটি হাসপাতালে আজ রোববার তাঁর মৃত্যু হয়। ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান শহরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিপিই ডিগ্রি নেন। দেশে ফিরে এসে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। গভর্নর মোনায়েম খানের স্বৈরতান্ত্রিক আচরণের প্রতিবাদে ১৯৬৮ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ছেড়ে সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেন। পরবর্তীতে সার্বক্ষণিক লেখালেখিতে আত্মনিয়োগ করেন। তাঁর ৯০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে এই সাক্ষাৎকারটি নেওয়া হয়। প্রকাশিত হয়েছিল ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর। আলোচিত সাক্ষাৎকারটিতে উঠে এসেছে বদরুদ্দীন উমরের সামাজিক, রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবনা। প্রথম আলোর পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি আবার প্রকাশিত হলো।


আপনাকে ৯০তম জন্মবার্ষিকীর শুভেচ্ছা। আপনার অনুভূতি জানতে চাই।


বদরুদ্দীন উমর: আমি এত দিন যে বাঁচব, ভাবিনি। অনেকে জিজ্ঞেস করেন, আপনি কীভাবে জীবন যাপন করেছেন যে এত দিন বেঁচে আছেন? কিন্তু আমি তো বলতে পারব না কীভাবে জীবন যাপন করার ফলে এত দিন বেঁচে আছি। সবাই তো একই কারণে বাঁচে না। কে, কী কারণে বাঁচে, তা বলা মুশকিল। তবে সুস্থভাবে বাঁচার জন্য সবার একটা জিনিস খুব বেশি করে করা দরকার, সেটা হলো, খাওয়াদাওয়ার হেফাজত। বেহিসাবি খাওয়াদাওয়া করলে কোনো মানুষই বেশি দিন বাঁচে না।


আপনার বেঁচে থাকা তো শুধু নিজের জন্য না, অন্যদের জন্যও বেঁচে থাকা। তাদের কতটা প্রাণিত করতে পেরেছেন?


বদরুদ্দীন উমর: সেটা তো বুঝতে পারি না। আমার বেঁচে থাকা মানুষকে অনুপ্রাণিত করলে, বাস্তবে তো দেখতাম। আমি বলব, আমি একধরনের উপেক্ষিত। আমি যে এত কাজ করেছি, আমাকে নিয়ে কোনো জায়গায় কোনো লেখা পাবেন না। এখানে এত লোকের ওপর লেখা হয়, কিন্তু আমার লেখা নিয়ে কোনো আলোচনা হয় না। এমনকি আমার ভাষা আন্দোলনের বইয়ের ওপরও কোনো আলোচনা নেই। কলকাতায় আমার বই ও লেখার ওপরে অনেক আলোচনা হয়েছে। অনেক কৃতবিদ্য মানুষ আমার ওপরে লিখেছেন। সেটা বাংলাদেশে চিন্তাও করা যায় না। কাজী আবদুল ওদুদ, মৈত্রেয়ী দেবী, নারায়ণ চৌধুরী, অন্নদাশঙ্কর রায়, বিষ্ণু দে, সমর সেন, বিনয় ঘোষ, অশোক মিত্র—এঁরা আমার কাজ নিয়ে লিখেছেন, আলোচনা করেছেন। এঁরা বুদ্ধিবৃত্তিক দিক থেকে উঁচু স্তরের মানুষ। দলনির্বিশেষে তাঁরা আমার ওপরে লিখেছেন। কিন্তু এখানে দলনির্বিশেষ উপেক্ষা করা হয়েছে।


উপেক্ষা করার পেছনে কারণ কী? ভয়ও পায় বোধ হয়?


বদরুদ্দীন উমর: আমি যে একজন কমিউনিস্ট, সেটাই এখানকার লোকে জানে না। তারা আমাকে বুদ্ধিজীবী বলে। ভয় পায় এ কারণে যে আমি লোকের ভণ্ডামি, নির্বুদ্ধিতা, মূর্খতা, এসব প্রকাশ করি। আমি ঘটনা বিশ্লেষণ করি, ভুলত্রুটি নির্দেশ করি এবং অনেকের মুখোশ খুলে দিই। এটাই হচ্ছে আমার ওপর তাদের রাগের কারণ।


উপমহাদেশের রাজনীতির বড় ক্ষতটা তৈরি করেছে ১৯৪৭ সালের দেশভাগ। সেটা কি এড়ানো যেত না?


বদরুদ্দীন উমর: ইতিহাসে যেটা ঘটে গেছে, সেটা এড়ানো যেত কি না, বলে লাভ নেই। একটা বিষয় বলা যেতে পারে, কী কারণে ভারত ভাগ ও বাংলা ভাগ হলো। ভারত ভাগ জিন্নাহ করেননি। ভারত ভাগ করেছে কংগ্রেস ও হিন্দু মহাসভা। ভারতের সব গ্রহণযোগ্য ইতিহাস এটা এখন স্বীকার করে। দ্বিজাতিতত্ত্ব এসেছে উনিশ শতকে, হিন্দু মেলার মাধ্যমে। নবকুমার মিত্র, রাজ নারায়ণ রায় এর প্রবক্তা। মুসলমানরা পিছিয়ে, এখন তাঁরা যদি হিন্দুদের ধরে ফেলে—সেই চিন্তা থেকেই এই দ্বিজাতিতত্ত্ব। আমি সম্প্রতি একটা লেখায় লিখেছি, হিন্দুদের দ্বিজাতিতত্ত্ব ছিল অফেনসিভ। আর মুসলমানদের যে দ্বিজাতিতত্ত্ব, সেটা ডিফেন্সিভ। গান্ধী, নেহরু, প্যাটেল দ্বিজাতিতত্ত্বের ধারক। সে কারণেই ভারত ভাগের পর মাউন্টব্যাটেনকে ভারতের গভর্নর জেনারেল করা হয়েছিল। এর থেকে বড় কেলেঙ্কারি কি হতে পারে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও