‘টাকা দিয়ে ভোট কেনা’ : কতটা রটনা, কতটা ঘটনা

যুগান্তর মো. ফিরোজ মিয়া প্রকাশিত: ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১২:০৯

এ দেশের জনগণ নির্বাচনকে উৎসব মনে করে। তারা মনের আনন্দে নির্বাচনি কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে এবং ভয়ের পরিবেশ না থাকলে সাধারণ ভোটাররা মনের আনন্দে ভোট দেয়। অতি সাধারণ নারী-পুরুষ, দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষও উপার্জনের কথা না ভেবে নিজের পয়সায় পরিবহণ ভাড়া করে ভোটকেন্দ্রে যায়। তারপরও যদি সাধারণ ভোটারদের ত্যাগের কথা চিন্তা না করে তাদের ওপর ভোট বিক্রির অপবাদ দেওয়া হয়, তাহলে এ অপবাদ তাদের আহত করে, তাদের মর্যাদা ও সম্মানহানি ঘটায়।


যারা ভোট বিক্রির কথা বলেন, তারা কি কখনো নিজেরা ভোট বিক্রি করেছেন অথবা টাকা দিয়ে ভোট কিনেছেন অথবা ভোট বেচাকেনা প্রত্যক্ষ করেছেন! যদি তা না করে থাকেন, তাহলে কোন তথ্যের ভিত্তিতে এরূপ অভিযোগ এনে সাধারণ ভোটারদের সম্মানহানি করছেন? অভিযোগকারীদের এরূপ অভিযোগ আমার মতো অসংখ্য সাধারণ ভোটারকে আহত করে।


নির্বাচনের সঙ্গে যারা কখনো প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন না, নির্বাচন ও নির্বাচনি ব্যবস্থাকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেননি, কেবল বাইরে থেকে নির্বাচন দেখেছেন বা নির্বাচনের গল্প শুনেছেন, তাদের কাছে সাধারণ ভোটারের ভোট বেচাকেনার রটনা বিশ্বাসযোগ্য হতে পারে। সুদীর্ঘ চাকরিজীবনে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব পালন ছাড়াও প্রিসাইডিং অফিসার ও রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করার অভিজ্ঞতা এবং ব্যক্তিগত জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, সাধারণ ভোটারের ভোট বেচাকেনা আদৌ কোনো ঘটনা নয়, এটা কেবলই রটনা।


তবে এদেশে শ্যাম নির্বাচন কিংবা গ্রহণযোগ্য নির্বাচনেও প্রার্থীকে প্রচুর টাকা ব্যয় করতে হয়। প্রার্থীর ব্যয়িত টাকার একটা বড় অংশ ব্যয় হয় মনোনয়ন কেনার জন্য, কোনো কোনো ক্ষেত্রে দলের সমর্থন লাভের জন্য। অন্য একটি অংশ ব্যয় হয় নির্বাচনি টাউট, ধান্ধাবাজ ও গুন্ডাপান্ডাদের পেছনে। একটা অংশ ব্যয় হয় পুলিশসহ স্থানীয় প্রশাসন এবং ভোটকেন্দ্র ম্যানেজের পেছনে।


ভোট বেচাকেনা যে কেবলই রটনা, তা এ দেশের নির্বাচনব্যবস্থাকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে সহজেই বোঝা যাবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে, বিশেষ করে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নির্বাচনে যেখানে প্রায় প্রত্যেক ভোটারকে প্রার্থীরা চেনে এবং ভোটাররাও প্রার্থীদের চেনে, সেক্ষেত্রে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে সর্বোচ্চ পঞ্চাশ থেকে একশ ভোটের ব্যবধানের সম্ভাবনা থাকার ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নিশ্চিত কিছু ভোটারের মধ্য থেকে ব্যক্তিগত পরিচিত কিছু ভোটারের ভোট কেনার সুযোগ কোনো প্রার্থী নিতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রেও অতি গোপনে এবং অতিসাবধানে ভোটের বেচাকেনা করতে হয়। কারণ উভয়ে জানে ভোট বেচাকেনা ফৌজদারি অপরাধ। এছাড়া ভোট বিক্রির বিষয় প্রকাশ পেলে সমাজ তাকে কী চোখে দেখবে এবং তাকে এবং তার পরিবারকে সমাজে কতটা হেয় হতে হবে, সেটা সে ভালো করেই জানে। অপরদিকে প্রার্থীও জানে টাকা দিয়ে ভোট কেনার বিষয় প্রকাশ পেলে তার পক্ষের যারা সাধারণ ভোটার আছে, তারা তার বিপক্ষে চলে যাবে এবং এক্ষেত্রে পরাজয় নিশ্চিত। যে জন্য ভোট কেনার ঝুঁকি কোনো প্রার্থী নেয় না। তবে অনেক সময় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ভোটারদের বিভ্রান্ত করে তাদের ভোট পাওয়ার আশায় এক প্রার্থী অন্য প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট কেনার রটনা রটায়। এছাড়া পরাজিত প্রার্থীও সমাজে তার অবস্থান ধরে রাখার জন্য বিজয়ী প্রার্থীর বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনার অপবাদ রটায়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও