দেশে গ্যাসের মজুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। উৎপাদন কমছে ধারাবাহিকভাবে। নতুন গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান না পেলে এবং নতুন খনি থেকে উত্তোলন শুরু না হলে আগামী আট বছরেই দেশীয় মজুত শেষ হয়ে যেতে পারে।
বর্তমানে দেশীয় গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে দিনে ১৮০ কোটি ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হয়। ২০১৭ সালে তা ছিল ২৭০ কোটি ঘনফুটের আশপাশে। অর্থাৎ দেশীয় গ্যাসের উত্তোলন ৩৩ শতাংশ কমেছে।
দেশের খনি থেকে উৎপাদন কমে গেলে গ্যাসের আমদানিনির্ভরতা বাড়ে। সে জন্য বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হয়। ফলে চাপ বাড়ে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভে।
২০১৮ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার গ্যাস আমদানি শুরু করে। এখন যে ডলারের দাম বেড়ে ১২৩ টাকা হয়েছে, সব পণ্যের দাম বেড়ে গেছে, তার পেছনে বড় একটি কারণ গ্যাসের আমদানিনির্ভরতা। আমদানি করতে গিয়েই রিজার্ভ কমেছে। ডলারের দাম বেড়েছে। সঙ্গে দফায় দফায় গ্যাসের দাম বাড়াতে হয়েছে।
এর মাশুল দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। ভোজ্যতেল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, রান্নার প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি এবং তার ফলে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় এতটা বাড়ত না, যদি দেশীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে প্রয়োজনীয় গ্যাস উৎপাদন বাড়িয়ে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা যেত।
দেশীয় গ্যাসের প্রতি ইউনিট (ঘনমিটার) দাম পড়ে তিন টাকার আশপাশে। আর বিদেশ থেকে আমদানিতে খরচ ৫৫ টাকার মতো। তা–ও এখন গ্যাসের দাম কম বলে খরচ কম পড়ছে।
অর্থনীতিবিদ ও শিল্পমালিকেরা বলছেন, বিভিন্ন দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কারোপের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি খাত ও বিনিয়োগে একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এই সম্ভাবনা ধরার ক্ষেত্রে জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে এবং তা সাশ্রয়ী দামে। সে জন্য দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানো জরুরি।