
৫ দুর্বল ব্যাংক একীভূতকরণে অর্থায়ন নিয়ে শঙ্কা
শরিয়াহ পরিচালিত পাঁচ দুর্বল ব্যাংক একীভূতকরণের প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ লক্ষ্যে ব্যাংকগুলোর ফরেনসিক অডিট শেষ হয়েছে, ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও চেয়ারম্যানদের নিয়ে কয়েক দফা বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী অক্টোবরে চুক্তির মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে একীভূত হয়ে যাবে ব্যাংকগুলো। তবে এ কাজটি করতে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হবে, তা পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
একীভূতকরণের প্রক্রিয়া শুরু হওয়া শরিয়াভিত্তিক ব্যাংক পাঁচটি হলো ইউনিয়ন ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, সংকটাপন্ন এ ব্যাংকগুলো একীভূতকরণে সামগ্রিক ব্যয় হতে পারে ৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি। এই অর্থের ২০ হাজার কোটি সরকারের কাছ থেকে, ১০ হাজার কোটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আমানত বিমা ট্রাস্ট তহবিল থেকে এবং বাকি প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা বিশ্বব্যাংক ও এডিবিসহ বিভিন্ন বহিঃসংস্থান থেকে নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে ৩৫ হাজার কোটি টাকা দিয়ে প্রক্রিয়া শুরু করতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রাথমিক ব্যয়ের মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকা মূলধন হিসেবে বিনিয়োগের জন্য সরকারের কাছে চিঠি দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ছাড়া ১০ হাজার কোটি টাকা আমানত বিমা ট্রাস্ট তহবিল থেকে ঋণ হিসেবে নেওয়া হতে পারে। বাকি অর্থ বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ বিভিন্ন বিদেশি উৎস থেকে ‘পুনরুদ্ধার তহবিল’ হিসেবে নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব অর্থ পাওয়া মোটেও সহজ নয়। আমানত বিমা ট্রাস্ট তহবিল থেকে ঋণ নেওয়ার যে কথা ভাবা হচ্ছে, সেটি করার জন্য ‘ব্যাংক আমানত বিমা আইন’ সংশোধন জরুরি, যা এ সময়ের মধ্যে কতটুকু সম্ভব, সে প্রশ্ন থেকেই যায়। বিদ্যমান ব্যাংক আমানত বিমা আইনে বলা আছে, ‘তহবিলের অর্থ ধারা ৭-এর বিধান মোতাবেক অবসায়িত ব্যাংকের আমানতকারীর পাওনা পরিশোধ এবং এই তহবিল রক্ষণাবেক্ষণের খরচ ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যয় করা যাইবে না।’
জানা গেছে, আমানত বিমা ট্রাস্ট তহবিলে বর্তমানে ১৬ হাজার কোটি টাকা জমা আছে। তবে অর্থ সব ব্যাংকের জন্য রাখা। কেবল পাঁচটি ব্যাংককে একীভূত করার পেছনে সেখান থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা পাওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। কারণ বিষয়টি নিয়ে এর মধ্যে তুমুল বিতর্ক দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে গভর্নরসহ সরকারের উচ্চপর্যায়ে পক্ষে-বিপক্ষে কথা হচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে, আরও অন্তত ৮টি ব্যাংক আমানতকারীদের টাকা চাহিদামতো ফেরত দিতে পারছে না। তাহলে এসব ব্যাংকের গ্রাহকের টাকা ফেরত দেওয়ার ন্যূনতম অর্থ কোথা থেকে আসবে?