-679917b541fe4-68a7a52db2c76.jpg)
সিরাজগঞ্জ-বগুড়া রেলপথ নির্মাণ হয়নি ৭ বছরেও
সিরাজগঞ্জ-বগুড়া সিঙ্গেল-ডুয়েলগেজ লাইন নির্মাণ ২০১৮ সালে একনেকে অনুমোদন হয়। ওই সময় রেলওয়েসংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী পরিকল্পনা দপ্তরের জোর দাবি ছিল-নতুন রেলপথটি যেন ডাবল লাইনে নির্মাণ করা হয়। এমন দাবি এখনো উত্তরবঙ্গের মানুষের।
ভারতীয় এলওসির অর্থায়নে দীর্ঘ ৭ বছরে এ প্রকল্পের অগ্রগতি ১ শতাংশেরও (ক্রমপুঞ্জিত আর্থিক অগ্রগতি) কম! সর্বশেষ এলওসির এ প্রকল্প বাতিল করা হয়। নতুন করে বিকল্প অর্থায়ন খোঁজা হচ্ছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ঢাকা-বগুড়া যাত্রায় সময় কমবে ৪ ঘণ্টার বেশি। আর ডাবল লাইন নির্মাণ হলে এ পথে অর্ধশতাধিক ট্রেন চালানো সম্ভব হবে। সরাসরি উপকৃত হবে উত্তরবঙ্গের ৮ জেলার মানুষ, কৃষি ও অর্থনীতি।
রেলে নতুন করে লাইন নির্মাণ হলে তা অবশ্যই ‘ডাবল লাইন’ হবে-এমন কড়া বার্তার পরও শুধু লুটপাট করতে বার্তাটি মানা হচ্ছে না। কোথাও সিঙ্গেল, কোথাও ডুয়েলগেজ লাইন নির্মাণ চলছে। সিঙ্গেল-ডুয়েলগেজ লাইন তথা এসবের রোলিংস্টক সামগ্রী পুরো বিশ্বেই দুষ্প্রাপ্য।
খোদ রেলওয়ে পরিকল্পনা দপ্তরের বক্তব্য-সিঙ্গেল লাইন কিংবা ডুয়েলগেজ লাইন নির্মাণ মানেই পরবর্তী সময়ে ওইসব প্রকল্প ঘিরে নতুন প্রকল্প গ্রহণ-বাস্তবায়নের পথ খোলা রাখা। আর এর মাধ্যমে বারবার দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান মঙ্গলবার রাতে যুগান্তরকে বলেন, সিরাজগঞ্জ-বগুড়া রেলপথ নির্মাণ খুবই জরুরি। এ রুট হবে রেলের জন্য দ্রুত সেবা ও সাশ্রয়ের। এলওসির অর্থায়নে এ প্রকল্পটি হওয়ার কথা ছিল। এখন আমরা বিকল্প অর্থায়ন খুঁজছি। চাহিদা অনুযায়ী এ প্রকল্পটি ডাবল লাইন নির্মাণও জরুরি। আমরা নিরাশ হচ্ছি না। অর্থায়ন প্রাপ্তি এবং সব বিষয় বিবেচনায় আমরা সর্বোচ্চটাই করব। আমরা জানি, ডাবল লাইন নির্মাণ হলে পর্যাপ্ত ট্রেন পরিচালনার সঙ্গে সেবা ও সময় দারুণ সাশ্রয় হবে। এ প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আরও বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। রেলে যথাযথ উন্নয়ন ও সুদূরপ্রসারী প্রকল্প বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি। সেবা বাড়িয়ে কীভাবে আয় আরও বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে সম্মিলিত কর্মপরিচালনা-নির্দেশনা প্রদান করা হচ্ছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রকল্পটি বিকল্প অর্থায়নে করতে কোমর বেঁধেছে। তবে এখন পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের উদ্বোধন কিংবা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেনি। ডাবল লাইনের এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গের দূরত্ব কমবে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার। সময় বাঁচবে প্রায় চার ঘণ্টা। ঢাকা থেকে সড়কপথে বগুড়া পৌঁছাতে লাগে ৬ ঘণ্টা, সেখানে ট্রেনে যেতে লাগে ১০-১১ ঘণ্টা। নতুন এ লাইন হলে বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ হয়ে মাত্র ৫ ঘণ্টায় ঢাকায় পৌঁছানো সম্ভব।
চলতি বছরের জুনে এ প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণে ১৯০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। ডাবল লাইন অনুযায়ী জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। রেলওয়ে কর্মকর্তাদের ভাষ্য-‘এ প্রকল্প ডাবল লাইন করা হোক। ডুয়েলগেজ নয়। ডাবল লাইন হলে বর্তমান প্রাক্কলিত ব্যয়ের (৯ হাজার ১০০ কোটি টাকা) চেয়ে ২৫ শতাংশেরও কম ব্যয় বাড়বে। ডাবল লাইন হলে ওই পথে প্রায় অর্ধশত ট্রেন পরিচালনা সম্ভব হবে। এটি হবে রেলের সবচেয়ে লাভজনক রুট।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ে পরিকল্পনা দপ্তরের এক কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, শুরুতেই প্রকল্পটি ডাবল লাইনে নির্মাণ করার জোর দাবি জানিয়ে আসছিল রেল এবং উত্তরবঙ্গের সাধারণ মানুষ। কিন্তু ওই সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রেলপথমন্ত্রী ও সচিবদের চাপে ডুয়েলগেজ লাইন প্রকল্প নির্মাণের কাজ শুরু হয়।