You have reached your daily news limit

Please log in to continue


থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সংঘাতের স্থায়ী সমাধান কত দূর

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৮ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধই ছিল পৃথিবীতে প্রথম বড় ধরনের সামরিক সংঘাত। ১৯৪৭ সালের ৩০ নভেম্বরের জাতিসংঘ প্রস্তাবের নাম করে বস্তুত ব্রিটিশ ও মার্কিন মদদে ১৯৪৮ সালের ১৪ মে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে স্বাধীন ইসরায়েল রাষ্ট্র ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতেই ওই যুদ্ধের শুরু এবং একধরনের চাপিয়ে দেওয়া কৃত্রিম যুদ্ধবিরতির মধ্য দিয়ে ১৯৪৯ সালের ১০ মার্চ এর আপাত সমাপ্তি। কিন্তু বাস্তবে ওই যুদ্ধ আজ পর্যন্ত কখনোই থামেনি। বরং থেমে থেমে ক্ষণে ক্ষণে নানা নামে ও অছিলায় তা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে প্রায় আট দশকজুড়েই কমবেশি অব্যাহত আছে। বস্তুত এর সবই হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের তেলক্ষেত্রসমূহের ওপর ছলেবলে কৌশলে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার লক্ষ্যে পশ্চিমা শক্তিসমূহের একধরনের চতুর কৌশল, যেগুলোর নাম কখনো ইরাক-ইরান যুদ্ধ, কখনো ইরাকের পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ, কখনো সিরিয়া ও ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধ, আবার কখনোবা ইসরায়েল-ইরান সংঘাত। অন্যদিকে এ সময়ের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে আর যেসব সামরিক সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে, যেমন ব্রিটেন ও আর্জেন্টিনার মধ্যকার ফকল্যান্ড যুদ্ধ, সাইপ্রাসকেন্দ্রিক গ্রিস-তুরস্ক যুদ্ধ, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ—সেগুলোও কার্যত মধ্যপ্রাচ্য ও তৎপশ্চিম দেশীয় ঘটনা।

মোটকথা, ১৯৫০-৫৩-এর কোরীয় যুদ্ধ, ১৯৫৫-৭৫-এর ভিয়েতনাম যুদ্ধের পর মধ্যপ্রাচ্যের পুবে আর তেমন বড় ধরনের কোনো সামরিক সংঘাতের ঘটনা ঘটেনি। আর এরূপ বিশ্বপরিস্থিতিতে হঠাৎ করেই গত ২৪ জুলাই থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে মোটামুটি বড় ধরনের এক সামরিক সংঘাত শুরু হয়েছে। ওই সংঘাতের ঘটনায় এ পর্যন্ত দুই দেশে অন্তত ৩৬ ব্যক্তি মারা গেছে, বহুসংখ্যক আহত হয়েছে এবং নিহত-আহতদের অধিকাংশই বেসামরিক সাধারণ জনগণ। তদুপরি দেশ দুটির সংশ্লিষ্ট সীমান্ত এলাকার পৌনে ৩ লাখের বেশি মানুষ এখন বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে, অর্থাৎ তারা এখন বাস্তুচ্যুত। সৃষ্ট পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। একই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ জুলাই মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের মধ্যস্থতায় দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উভয় দেশই যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মেনে নিয়েছে, যার কার্যকারিতা শুরু হয়েছে ওই দিনই মধ্যরাত থেকে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এ যুদ্ধবিরতি পুরোপুরি কার্যকর হবে তো বা শেষ পর্যন্ত তা টিকবে তো? উল্লেখ্য, এর আগে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পরই থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই বলেছিলেন যে ‘কম্বোডিয়ার সঙ্গে সীমান্ত সংঘর্ষ যুদ্ধের রূপ নিতে পারে।’ তো দুই দেশের মধ্যে অন্তত একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী যদি বলেন যে সংঘর্ষ যুদ্ধে রূপ নিতে পারে, তাহলে সে সংঘাত বাস্তবে কতটা থামবে, সে বিষয়ে সন্দেহ থেকেই যায় বৈকি!

উল্লিখিত সংঘাত থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে ঘটলেও মনে রাখা দরকার, চলমান বিশ্বব্যবস্থায় কোনো দেশই এখন আর আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতির বাইরে নয়। বিষয়টি বোঝার জন্য সামনে আনা যেতে পারে এ তথ্য যে, ওই সংঘাতে থাইল্যান্ড যেখানে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি এফ-১৬ জঙ্গিবিমান দিয়ে বোমা আক্রমণ চালিয়েছে, সেখানে কম্বোডিয়া রকেট হামলা চালিয়েছে রাশিয়ায় তৈরি বিএম-২১ রকেট উৎক্ষেপণকারী ব্যবস্থা ও কিছু চীনা অস্ত্রের মাধ্যমে। অতএব এটি স্পষ্ট যে দেশ দুটির সঙ্গে ন্যূনতম পর্যায়ে হলেও ভিন্ন ভিন্ন বৃহৎ শক্তির কিছু না কিছু যোগাযোগ আগে থেকেই রয়েছে এবং এ সংঘাত সম্প্রসারিত হলে বা পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে রূপ নিলে, যা পৃথিবীর কোনো শান্তিকামী মানুষেরই কাম্য নয়, সেইসব বৃহৎ শক্তি কিছু না কিছু সুযোগ অবশ্যই নিতে চাইবে। আর তাই দুই সংলগ্ন প্রতিবেশীর মধ্যে স্পর্শকাতর এক মন্দিরকে নিয়ে দীর্ঘ এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে চলমান উত্তেজনার উত্তাপ থেকে সৃষ্ট সংঘাতের সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাইরের কেউ যাতে ফায়দা লুটতে না পারে, তজ্জন্য উল্লিখিত দেশ দুটির উচিত হবে নিজেদেরকে সংযত রেখে আলাপ-আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে অবিলম্বে উক্ত সংঘাতের স্থায়ী অবসান ঘটানো।

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, বিষয়টি দেশ দুটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ জনগণ বুঝলেও রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতারা বিষয়টি কতটা বোঝেন বা বুঝতে চান, সেটি একটি প্রশ্ন বৈকি। থাই প্রধানমন্ত্রীর (ভারপ্রাপ্ত) যুদ্ধবিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গির কথা তো ওপরে খানিকটা উল্লেখ করাই হলো, যা স্থায়ীভাবে সংঘাত থামানোর জন্য মোটেও যথেষ্ট ইতিবাচক নয়। অন্যদিকে সামরিক শক্তির দিক থেকে কম্বোডিয়া খানিকটা দুর্বল হলেও এবং সামরিক কর্মকর্তা থেকে রাজনীতিতে আসা কম্বোডীয় প্রধানমন্ত্রী হুন মানেট এ বিষয়ে খানিকটা নমনীয় দৃষ্টিভঙ্গির হলেও বিবিসি নিউজের জোনাথন হেড ইতিমধ্যে এ ঘটনাকে হুন মানেটের একধরনের চাল হিসেবেই উল্লেখ করেছেন। এমনি পরিস্থিতিতে এ সংঘাত স্থায়ীভাবে থামবে কি না বা থামলেও কতটা থামবে, সে ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। কারণ অন্তত দুটি: এক. এ সংঘাতের পটভূমিতে রয়েছে দেশ দুটির মধ্যে মন্দির ও সীমান্ত নিয়ে শতাধিক বছরের পুরোনো বিরোধ, যা হঠাৎই থেমে যাওয়া প্রায় অসম্ভব; এবং দুই. এ সংঘাত টিকে থাকলে যাদের সমূহ লাভ, সেইসব বহিঃশক্তির গোপন ইন্ধন। এর মানে হচ্ছে, এ ক্ষেত্রে যুদ্ধবিরতি আপাতত কার্যকর হলেও পরবর্তী সময়ে তা কতটা টিকে থাকবে এবং কখনো আবার তা নতুন করে শুরু হয় কি না, সে ব্যাপারে যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে।

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার মধ্যকার সংঘাতের বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য গত ২৫ জুলাই জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সে বৈঠকের বিষয়ে আর কিছুই জানা গেল না। পরিবর্তে শুধু খবর পাওয়া গেল যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং শিগগিরই তাঁদের মধ্যে সমঝোতার পর যুদ্ধবিরতি শুরু হবে, যা ইতিমধ্যে কার্যকর হয়েছে। সমঝোতামূলক আলাপ-আলোচনার পর উল্লিখিত যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়া নিঃসন্দেহে একটি সুখবর। কিন্তু এই সুবাদে জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যবস্থা কার অঙ্গুলি হেলনে কীভাবে চলছে, সেটিও বিশেষভাবে লক্ষণীয়। ফলে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে স্থায়ী সমঝোতার ভিত্তিতে যুদ্ধ-সংঘাতের স্থায়ী সমাপ্তি ঘটবে কি না কিংবা সেখানে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে কি না, সেটি এখন বস্তুতই উল্লিখিত ওই বিশ্বব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণাধীন। এর মানে হচ্ছে, উল্লিখিত সংঘাতের পেছনে যে দুটি কারণ থাকার কথা ওপরে উল্লেখ করা হয়েছে, সে দুটি কারণ দূরীভূত না হওয়া পর্যন্ত থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সংঘাতের স্থায়ী অবসান হওয়ার কোনোই সম্ভাবনা নেই। তন্মধ্যে প্রথম কারণটি অপনোদনের জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন হচ্ছে অতীতের সব রেষারেষিকে বিসর্জন দিয়ে সংশ্লিষ্ট দেশ দুটির জনগণের মধ্যে উদার সদিচ্ছা ও ঐকমত্যের চিন্তাকে জাগ্রত করে তোলা এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের দৃঢ়তায় সেটি খুবই সম্ভব বলে মনে করি। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে দ্বিতীয়টির ব্যাপারে। নানা কূটচাল ও হীনকৌশল দ্বারা ভারাক্রান্ত বর্তমান ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় সেটি দূরে সরিয়ে রাখা কতটা সম্ভব হবে, তা একটি গুরুতর প্রশ্ন বৈকি!

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন