বন্ধুত্বের কূটনীতি ও মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার

বিডি নিউজ ২৪ মালয়েশিয়া ঝুমুর বারী প্রকাশিত: ২০ আগস্ট ২০২৫, ১৭:৩১

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের মালয়েশিয়ায় দ্বিপাক্ষিক সফরের শেষ দিন। বিমানবন্দরে যখন দূতাবাসের কর্মকর্তা ও মালয়েশিয়ার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ড. ইউনূসকে বিদায় জানাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই ফোন আসে মালয়েশিয়ার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দাতো সেরি আনোয়ার ইব্রাহিমের কাছ থেকে। তিনি প্রধান উপদেষ্টার ঘনিষ্ঠ বন্ধুও বটে। বিদায়ের মুহূর্তে ফোনে এক বন্ধু আরেক বন্ধুকে বললেন, যারা বর্তমানে অনিয়মিতভাবে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন, তাদের বৈধ করার একটি সুযোগ দেওয়া হবে। বিষয়টি ইতোমধ্যে মালয়েশিয়ার মন্ত্রিসভায় উত্থাপিত হয়েছে। অনানুষ্ঠানিক আলাপে বন্ধুত্বের কূটনীতি আরেকবার জয়ী হলো।


মালয়েশিয়ায় অনিয়মিতভাবে অবস্থানকারী বাংলাদেশির সংখ্যা কেউ বলেন ৩ লাখ, কেউ বলেন ৫ লাখ। সংখ্যা যাই হোক, প্রতি বছর যদি দেড় লাখ নতুন কর্মী যায়, তবুও এই সংখ্যা নিঃসন্দেহে বেশি। এর ওপর এই কর্মীরা দীর্ঘদিন মালয়েশিয়ায় থাকার কারণে ভাষা, কাজ ও সংস্কৃতি সবই আয়ত্ত করে ফেলেছেন। বিষয়টি আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু যারা নতুন করে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার অপেক্ষায় আছেন, তাদের জন্য কী সংবাদ?


ফোনে কথা হচ্ছিল আমার পিতামহের দিকের এক আত্মীয়ের সঙ্গে। সে মালয়েশিয়া যেতে চায়। যশোর এলাকার মানুষ। সীমান্ত অনেকবার দেখেছে, এবার বিমানে উঠতে চায়। স্কুলের বারান্দা পেরিয়েছে, কিন্তু মন পড়ে আছে মালয়েশিয়ায়। উচ্চশিক্ষার খরচের তুলনায় এখনই মালয়েশিয়ায় ভালো চাকরি পাওয়া গেলে মন্দ কী? দালাল তাকে অন্তত এটাই বুঝিয়েছে। ড. ইউনূসের মালয়েশিয়া সফর তার জন্য অন্তত আনন্দের এক বার্তা। তাকে বললাম, সিকিউরিটি গার্ড এবং কেয়ার গিভার হতে পারে প্রাধান্যের ক্ষেত্র। সে কেয়ার গিভার হতে পারবে না, তবে সিকিউরিটি গার্ড হতে প্রস্তুত। পাঁচ লাখ টাকার হিসাবও সে করে ফেলেছে। তখন মনে হলো, বাজার তো খুলবে, কিন্তু যে স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশিরা মালয়েশিয়ায় যেতে চান, তা কতটা বাস্তব?


১৯৮৯ সাল থেকে নিয়মিতভাবে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী যাওয়া শুরু হয়। কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের কর্মীরা শোষণ, প্রতারণা ও নানা হয়রানির শিকার হয়েছেন। এসব কারণে মালয়েশিয়া সরকার ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৯, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। মূল কারণ ছিল উচ্চ অভিবাসন ব্যয়, নিয়োগকারীদের সামর্থ্যের বাইরে অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ এবং অনিয়মিতভাবে অবস্থানকারী বাংলাদেশি কর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধি।


এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ২০১২ সালের নভেম্বরে দুই দেশের মধ্যে ‘জিটুজি’ পদ্ধতিতে কর্মী নিয়োগের একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এই পদ্ধতিতে একজন কর্মীর অভিবাসন ব্যয় ছিল ৩৫ হাজার টাকারও কম। কিন্তু এজেন্সিগুলোর সম্পৃক্ততা না থাকায় মাত্র ১০ হাজার কর্মী মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পর স্বার্থান্বেষী মহলের হস্তক্ষেপে প্রক্রিয়াটি বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৬ সালে ‘জিটুজি প্লাস’ নামে নতুন সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে মাত্র ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে কর্মী প্রেরণের দায়িত্ব দেয়। ২০১৮ সালে মালয়েশিয়ায় সরকার পরিবর্তনের পর কর্মী নিয়োগে আবার নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়।


২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর নতুন সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে ১০টি এজেন্সির পরিবর্তে ২৫টি এজেন্সি, পরে ১০০টি এজেন্সির সিন্ডিকেটে রূপ নেয়। জানা যায়, ওই সিন্ডিকেট ২০২২ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ৩১ মে পর্যন্ত ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৬৪২ জন কর্মীর ছাড়পত্র পেলেও, ১৬ হাজার ৯৭০ জন কর্মী নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্ত হওয়ায় মালয়েশিয়া যেতে পারেননি।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও