পুলিশকে আমলে না নিলে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ হবে অসম্ভব

জাগো নিউজ ২৪ শাহানা হুদা রঞ্জনা প্রকাশিত: ২০ আগস্ট ২০২৫, ১৭:২৩

গণপিটুনি নিয়ে লিখতে চাইছিলাম না, কেমন যেন গা-সওয়া অপরাধ হয়ে উঠেছে। দেশে একের পর এক গণপিটুনির ঘটনা ঘটছে। কিন্তু পরপর দুই/তিনটি ঘটনা এতোটাই ভয়াবহ, যা অতীতের সকল ভয়াবহতাকে ছাপিয়ে গেছে, যেমন রূপলাল দাস ও প্রদীপ দাস। সম্পর্কে তাঁরা ছিলেন জামাই-শ্বশুর। ভ্যান চোর সন্দেহে তাদের দুজনকে পৈশাচিকভাবে মারধর করার পর, যখন তাদের মরো মরো অবস্থা, সেই অবস্থাতে পুলিশ তাদের রক্ষা করতে এসে ফিরে যেতে বাধ্য হয়। উত্তেজিত জনতা পুলিশকে বাধা দিয়েছে এবং রুপলাল আর প্রদীপকে বাঁচাতে দেয়নি। বারবার ক্ষমা প্রার্থনা করেও ক্ষমা পায়নি।


মধ্যরাতে মাতাল ব্যক্তির মাতলামির অনেক কাহিনি প্রচলিত আছে। কিন্তু মাতলামির দায়ে মধ্যরাতে কোনো মাতালকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়নি। লালবাগে ঠিক তাই ঘটেছে দু-দিন আগে। মানুষ বিপদে পড়লে পুলিশকে ডাকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। সেই পুলিশই যদি মানুষকে বাঁচাতে না পেরে ফিরে যেতে বাধ্য হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ কার কাছে আশ্রয় চাইবেন? মানুষ বড়ই অসহায় হয়ে পড়েছে। অপরাধীদের কত বড় দুঃসাহস যে পুলিশকে গণপিটুনির ভয় দেখায়। এই অমানুষগুলোর সাহসের উৎস কী? কে তাদের রক্ষা করছে? তাদের কোনো ব্যক্তি রক্ষা করছে না, তাদের শেল্টার দিচ্ছে দুর্বল আইনি ব্যবস্থা। যদি বলি সরকার এইসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে তেমন কোনো অ্যাকশন নিচ্ছে না, তাও খুব একটা বাড়িয়ে বলা হবে না। এই দুর্বলতার সুযোগে সাধারণ মানুষও সন্ত্রাসী হয়ে উঠছে।


মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত গত ছয় মাসে পুলিশের ওপর ২২৫টি মব হামলার ঘটনা ঘটেছে। কোথাও কোথাও হামলা করে আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটেছে। বেশির ভাগ ঘটনা ঘটানো হয়েছে উচ্ছৃঙ্খল জনতার সংঘবদ্ধ আক্রমণে। পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ছয় মাসে দায়িত্ব পালনকালে পুলিশ সদস্যের ওপর হামলার ২২৫টি ঘটনার মধ্যে ৭০টি বড় ধরনের আলোচনা তৈরি করে। পুলিশের এই পরিসংখ্যানের বাইরেও সড়কে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে বিরূপ আচরণের বিভিন্ন ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মব তৈরি করে হামলাগুলো করছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পেশাদার অপরাধী ও রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরাও মব তৈরিতে ভূমিকা রাখছে। পুলিশের উপর এধরনের সংঘবদ্ধ হামলা খুবই ভয়াবহ পরিণাম বয়ে আনবে।


অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপরাধীরা পুলিশকে ভয় না পেলে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব হয়ে উঠবে। রাজনৈতিক নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে ছিনতাইকারী, মাদক কারবারিরাও যখন মব তৈরি করে পুলিশের ওপর হামলা করে, তখন এটি উদ্বেগের বিষয়। পুলিশের হাত থেকে অপরাধী ছিনিয়ে নেয়াও চলছে। পুলিশের হেফাজতে থাকার পরও অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মারধর করা হচ্ছে।


সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চলতি আগস্ট মাসের প্রথম ১০ দিনে দেশে অন্তত ১৩টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৯ জন, আহত হয়েছেন আরও ১৩ জন। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত জানুয়ারি থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত কমপক্ষে ১১১ জন মানুষ ‘মব’ বা উচ্ছৃঙ্খল জনতার সন্ত্রাসের শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন। আগস্টের প্রথম ১০ দিনের ১৩টি গণপিটুনির ঘটনা তথ্য অনুযায়ী ৮টিতেই চোর সন্দেহে মারধর করা হয়েছে। বাকি পাঁচটি ঘটনার কোনোটি চাঁদাবাজি, কোনোটি পূর্বশত্রুতার কারণে, কোনোটি বিরোধ থেকে ঘটানো হয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও