মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। এর ফলে, ভারতের রপ্তানির প্রায় ৭০ শতাংশ, যার আর্থিক মূল্য ৬০ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার, এখন যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্কের আওতায় পড়েছে। ভারতীয় আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক গবেষণা পরিষদের (আইসিআরআইইআর) এক প্রতিবেদন এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের।
এই পরিমাণ ভারতের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) মাত্র ১ দশমিক ৫৬ শতাংশ এবং মোট রপ্তানির ৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ। অর্থাৎ, ৩ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির জন্য এটিকে ভয়াবহ সংকট বলা যাবে না। তবে আইসিআরআইইআরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এই শুল্কের প্রভাব মূলত শ্রমঘন ও উচ্চমূল্যের খাতগুলোতে পড়বে। বিশেষ করে টেক্সটাইল ও পোশাক, রত্ন ও গয়না, গাড়ির যন্ত্রাংশ এবং কৃষিপণ্য—এর মধ্যে বিশেষ করে চিংড়ি রপ্তানিতে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব খাত শুধু যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের পণ্য রপ্তানির প্রধান ভিত্তি নয়, বরং এগুলো লাখ লাখ শ্রমিক ও কৃষকের জীবিকার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। টেক্সটাইল ও পোশাক খাত এখন প্রতিযোগী দেশ—যেমন বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভিয়েতনামের তুলনায় ৩০ শতাংশের বেশি শুল্ক-বৈষম্যের মুখে পড়বে, যা ভারতের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বড় ধরনের প্রতিযোগিতামূলক সংকট তৈরি করবে।
রত্ন ও গয়নার খাত—যার রপ্তানি আয় ১১ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার—তুরস্ক, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডের মতো প্রতিযোগীদের বিপরীতে একই সমস্যায় পড়বে। ভারতের রপ্তানির ৩ শতাংশ জুড়ে থাকা গাড়ির যন্ত্রাংশও ঝুঁকির মুখে। কৃষিপণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে চিংড়ি রপ্তানি। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত ৫০ শতাংশ শুল্ক ভারতীয় চিংড়ির প্রতিযোগী দেশ—যেমন ইকুয়েডর, ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামের তুলনায় অনেক বেশি। এর সঙ্গে রয়েছে আগের অ্যান্টি-ডাম্পিং ও কাউন্টারভেইলিং শুল্ক।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব খাতে মার্কিন আমদানিকারকেরা দ্রুত সরবরাহকারীর পরিবর্তন করতে পারে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে দর–কষাকষির ক্ষমতা বাড়বে এবং ভারতের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়বে।