
প্রতিদিন মাল্টিভিটামিন খেলেই কি লিভারের ক্ষতি হয়
আজকাল অনেকেই মনে করেন – শরীরে শক্তি নেই, মাথা ঘুরছে বা ক্লান্ত লাগছে মানেই মাল্টিভিটামিন খেলে সব ঠিক হয়ে যাবে। ওষুধের দোকান থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই কিনে খেয়ে নিচ্ছেন ভিটামিন ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল। প্রথমে হয়তো শক্তি ফিরে পাচ্ছেন, কিন্তু অজান্তেই শরীরে শুরু হচ্ছে অন্য ক্ষতি – বিশেষ করে লিভারের।
মাল্টিভিটামিন কীভাবে লিভারের ক্ষতি করে?
সব ভিটামিন সমান নয়। শরীরে সব ভিটামিনের চাহিদা একরকম নয়। আবার শরীরে ভিটামিন সঠিকভাবে শোষণ হওয়ারও কিছু শর্ত আছে। যেমন, ভিটামিন-এ, ডি, ই ও কে ফ্যাট-দ্রবণীয় ভিটামিন। এগুলো অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে শরীর সেগুলো প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দিতে পারে না, বরং সেগুলো লিভারে জমে থাকে।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অব হেলথ এর গবেষণা বলছে, দীর্ঘদিন অতিরিক্ত ভিটামিন-এ বা ডি নেওয়ার ফলে লিভারের কোষ ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, আকার বেড়ে যায়, প্রদাহ হয় এবং সিরোসিস পর্যন্ত হতে পারে-
>> অতিরিক্ত ভিটামিন-এ হেপাটোটক্সিসিটি বা লিভার টক্সিসিটি তৈরি করতে পারে।
>> ভিটামিন-ডি অতিরিক্ত হলে ক্যালসিয়াম জমে লিভারের কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে।
>> এমনকি, পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন, যেমন নিয়াসিন (বি৩), শরীরে অতিরিক্ত হয়ে গেলে তা রক্তের লিভার এনজাইম বাড়িয়ে লিভারের ক্ষতি ঘটাতে পারে।
গবেষণা বলছে, দীর্ঘদিন অতিরিক্ত মাল্টিভিটামিন সাপ্লিমেন্ট নেওয়ার ফলে আরও কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে –
>> হজমের সমস্যা: খাবার সঠিকভাবে হজম না হওয়া, অ্যাসিড রিফ্লাক্স, পেট ফাঁপার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
>> পেটের ডান দিকে ব্যথা: পেটের ডান পাশে, অর্থাৎ যেদিকে লিভার থাকে, সেই দিকটায় ব্যথা করতে পারে। বিশেষ করে খাওয়ার পর।
>> জন্ডিসের লক্ষণ: ভিটামিন-এ বা আয়রনের উচ্চমাত্রা লিভারে বিষক্রিয়া তৈরি করে ও রক্তে বিলিরুবিন বাড়িয়ে দেয়।