২০২৪ সালের আগস্টে যখন সালেহউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পান, তখন দেশের অর্থনীতি টালমাটাল অবস্থায় ছিল। প্রবৃদ্ধি কমছিল, মূল্যস্ফীতি দীর্ঘদিন ধরে দ্বিগুণ অঙ্কে স্থায়ী ছিল, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দ্রুত হ্রাস পাচ্ছিল। ব্যাংকিং খাত ছিল সংকটে। বিশেষ করে জ্বালানি খাতে বৈদেশিক দেনা বেড়ে যাচ্ছিল, আর রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রা থেকে অনেকটা পিছিয়ে ছিল।
বারো মাস পর অর্থনৈতিক সংকট অনেকটাই প্রশমিত হয়েছে, তবে পুরোপুরি ঠিক হয়নি।
'আমরা যখন দায়িত্ব নিই, সামষ্টিক অর্থনীতির অবস্থা ছিল বিপর্যস্ত,' সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেন অর্থ উপদেষ্টা। 'আমি বলব, এখন পরিস্থিতি মোটামুটি সন্তোষজনক। যখন আমি দায়িত্ব নিয়েছিলাম, তখন পরিস্থিতি ছিল খুবই অনিশ্চিত ছিল, কিন্তু এখন সবকিছু ভালোভাবে চলছে। রিজার্ভ বাড়ছে, রেমিট্যান্স বেড়েছে এবং রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ধীর হলেও স্থিতিশীল। আমরা বৈদেশিক মুদ্রার বাজারকে উন্মুক্ত করার পরেও এটি স্থিতিশীল রয়েছে।'
এই কথাগুলো অনেকের অনুভূতিরই প্রকাশ পায়: তাদের প্রধান সাফল্য হলো পরিস্থিতির অবনতি ঠেকানো, উল্টোদিকে ঘোরানো নয়। আরও গভীরভাবে দেখলে বোঝা যায় যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কিছু ক্ষেত্রে, বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি এবং রিজার্ভের ক্ষেত্রে উন্নতি করলেও, গভীরতর সংস্কারের চ্যালেঞ্জগুলো মূলত অমীমাংসিতই রয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, সরকারের পদক্ষেপগুলো পরিবর্তনমূলক না হয়ে গতানুগতিক ছিল। তিনি পর্যবেক্ষণ করেন, 'অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর পূর্ববর্তী সরকারের বাজেটই বাস্তবায়ন করেছে এবং একই সঙ্গে একটি নতুন বাজেট একইভাবে পেশ করেছে। এত বড় পরিবর্তনের পরেও আমরা কোনো পরিবর্তনের ছাপ দেখিনি। আমি বলছি না এটা ভালো না খারাপ। কিন্তু এটাই ঘটেছে। নতুন প্রেক্ষাপটে কোনো উদ্ভাবনী পরিবর্তন দেখা যায়নি।'