You have reached your daily news limit

Please log in to continue


ট্রাম্পের শুল্কনীতি : বাংলাদেশের কৌশলগত বিজয়

ডোনাল্ড ট্রাম্প গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে যে কেবল দেশটিতে বসবাসকারী অবৈধ অভিবাসীদের ওপর খড়্গহস্ত হয়ে সমগ্র অভিবাসী কমিউনিটির মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছেন তা নয়, তার নতুন শুল্কনীতি কার্যকর করে বিশ্বের অন্তত ৭০টি দেশের অর্থনীতিকে তছনছ করে ফেলার পর্যায়ে উপনীত করেছেন। গত ৭ আগস্ট থেকে ট্রাম্পের শুল্কনীতি কার্যকর হয়েছে। বিশ্বের বাণিজ্য চিত্রই পালটে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। বহু দেশের বিভিন্ন উৎপাদন খাতের শ্রমিক ছাঁটাই, কলকারখানা লে-অফ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আধুনিক বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ট্রাম্পের শুল্কনীতি নজিববিহীন। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক অংশীদারদের ওপর ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক ১৯৩৩ সালের পর সর্বোচ্চ। ওই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র অযৌক্তিকভাবে উচ্চহারে শুল্ক আরোপ করায় বিশ্বজুড়ে মহামন্দার সৃষ্টি হয়েছিল। ট্রাম্পের একগুঁয়েমিপূর্ণ অযৌক্তিক শুল্কহার বিশ্বকে আরেকটি মহামন্দার দিকে নিয়ে যাচ্ছে কিনা, সে সম্পর্কে সংশয় ব্যক্ত করতে শুরু করেছেন আন্তর্জাতিক অর্থনীতিবিদরা।

যুক্তরাষ্ট্র যেসব দেশ থেকে পণ্য আমদানি করে এবং বাণিজ্যে উদ্বৃত্ত, সেই দেশগুলোর ওপর গড়ে ১০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিকারী দেশ প্রায় ৪০টি। যেসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রে যে পরিমাণ পণ্য রপ্তানি করে, তার তুলনায় আমদানি করে কম; অর্থাৎ বাণিজ্যে ঘাটতি রয়েছে, সেসব দেশের আমদানি পণ্যের ওপর আরোপ করা হয়েছে ১৫ শতাংশ হারে শুল্ক। কিছু দেশ, যারা কোনো পণ্য প্রায় একচেটিয়াভাবে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে, যেমন ব্রাজিল; দেশটির কফির ওপর আরোপ করা হয়েছে ৫০ শতাংশ শুল্ক। বিশ্বের সবচেয়ে বড় কফি ভোক্তা দেশ যুক্তরাষ্ট্র। তাদের ৮০ শতাংশ কফি আমদানি করা হয় ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলো থেকে এবং এর মধ্যে ৩৫ শতাংশই আসে ব্রাজিল থেকে। এর ফলে ব্রাজিল বিশ্বের বৃহত্তম কফি উৎপাদনকারী দেশে পরিণত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ব্রাজিলকে কফির মূল্য হ্রাস করার পরামর্শ দিলে ব্রাজিল সম্মত না হওয়ায় ট্রাম্প ব্রাজিলের ওপর প্রতিশোধ গ্রহণ করছেন কফি আমদানির ওপর উচ্চহারে শুল্ক আরোপের মাধ্যমে।

শুধু ব্রাজিল নয়, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতির সঙ্গে প্রতিটি দেশকে তাদের জাতীয় অর্থনৈতিক ও পণ্য উৎপাদন নীতিমালার সামঞ্জস্য বিধান করা ছাড়া বিশ্বজুড়ে মন্দার আশঙ্কা দূর করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। কেবল ছোট অর্থনীতির দেশ নয়, যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় বাণিজ্যিক অংশীদার দেশ কানাডা, মেক্সিকো, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ, যুক্তরাজ্য, জাপান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম. কম্বোডিয়া, ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ডসহ বহু দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। প্রতিটি দেশের ওপর ট্রাম্পের শুল্কনীতির কম-বেশি বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়তে বাধ্য। সর্বত্র পণ্য ও সেবার মূল্য বৃদ্ধি পাবে, বেকারত্ব বাড়বে এবং পাশাপাশি বৃদ্ধি পাবে রাজনৈতিক অস্থিরতা। আমদানির ওপর প্রযোজ্য নতুন শুল্কহারের চরম খেসারত দিতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকে। প্রতিটি পণ্য ক্রয়ে ও সেবা গ্রহণে তাদের অধিক ব্যয় করতে হবে, যেহেতু ভোক্তা দেশ হিসাবেও যুক্তরাষ্ট্রের স্থান শীর্ষে। মূল্যস্ফীতি ও পণ্য মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যেহেতু কর্মজীবীদের আয় বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা নেই, অতএব সীমিত আয়ের কর্মজীবীরা বর্ধিত মূল্যে পণ্য ক্রয়ে বাধ্য হবে। করোনা মহামারির সময় থেকে ভোগ্যপণ্যের বাজারে মূল্যবৃদ্ধির যে ঢেউ আছড়ে পড়েছিল, তা হ্রাস পাওয়ার কোনো লক্ষণ কখনো দেখা যায়নি। কোনো কোনো ভোগ্যপণ্যের মূল্য মহামারি-পূর্ব সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ, এমনকি তিনগুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন দেশ থেকে যখন বর্ধিত শুল্ক আরোপিত ভোগ্যপণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আসবে, তখন যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে যে এক ঝড়ো পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে, তা প্রায় নিশ্চিত করেই বলা যায়। যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করছেন, তার গৃহীত নীতি ও পদক্ষেপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হচ্ছে, কিন্তু অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ট্রাম্প অর্থনৈতিক মন্দার দরজা উন্মুক্ত করে দিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ বিশ্বস্ত বাণিজ্যিক অংশীদার হিসাবে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে আসছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তীকাল থেকে। তবে একথা সত্য, দুই দেশের বাণিজ্যিক ভারসাম্য বরাবর বাংলাদেশের অনুকূলে; অর্থাৎ বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে যে পরিমাণে পণ্য রপ্তানি করে আসছে, সে পরিমাণে পণ্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করছে না। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে বাণিজ্য সম্প্রসারণের চেষ্টা করেও সফল হতে পারেনি প্রধানত চীন ও ভারতের কারণে। যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য ও সেবা চীন ও ভারতের পণ্য ও সেবার তুলনায় অনেক বেশি এবং শর্তও কঠিন। অতএব কম মূল্য, সহজ শর্তে বাংলাদেশ চীন থেকে ভোগ্যপণ্য থেকে শুরু করে অবকাঠামোগত নির্মাণ সেবা গ্রহণ করাকেই প্রাধান্য দেয়। অথচ বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের একক বৃহত্তম আমদানিকারক দেশ যুক্তরাষ্ট্র। তৈরি পোশাক আমদানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বড় উৎস বাংলাদেশ। ২০২৪ সালেও বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে ৮.৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে, অন্যদিকে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করেছে মাত্র ২.৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য ও সেবা। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ৬.১ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশের সঙ্গে চীন ও ভারতের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ আরও বেশি। কিন্তু ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর যেসব দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ বেশি, সেসব দেশকে তার প্রশাসন বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার অথবা কঠোর শুল্কনীতি মেনে নেওয়ার মধ্যে একটিকে বেছে নিতে বলেছে। দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য নির্বাচনি প্রচারাভিযানে তার মূল কথা ছিল ‘মেইক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’। নির্বাচিত হওয়ার পরও তিনি তার প্রতিপাদ্যে অটল রয়েছেন। নিজের দেশকে তিনি মহান করবেন, তা দোষের তো নয়ই, বরং দেশপ্রেমমূলক। আমেরিকার কাছে কিছু বেচতে চাইলে আমেরিকার কাছ থেকেও কিনতে হবে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, তৃতীয় বিশ্বের অধিকাংশ দেশের পক্ষেই যুক্তরাষ্ট্রের বেঁধে দেওয়া এ দুই অপশনের কোনোটিকে বেছে নেওয়া অসম্ভব। অতএব তারা অর্থনৈতিক মন্দার অনিবার্য শিকারে পরিণত হতে যাচ্ছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন