You have reached your daily news limit

Please log in to continue


আফগানিস্তানে তালেবানের শাসন: বাস্তবতা বনাম প্রচারণা

২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তানে তালেবান দ্বিতীয়বারের মতো রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করে। যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো বাহিনী আফগান মাটি থেকে বিদায় নেওয়ার পর দেশজুড়ে দ্রুতগতিতে বিস্তার ঘটে তালেবান আন্দোলনের এবং অবশেষে কোনো যুদ্ধ ছাড়াই তালেবান কাবুল দখল করে নেয়। এর পরের সময়টা পশ্চিমা গণমাধ্যম ও কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের জন্য ছিল একরকম রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় ভরা। অনেকে ভেবেছিলেন, হয়তো তালেবান ১৯৯৬ সালের মতোই এক কট্টর, পশ্চাৎমুখী শাসন চালাবে। কেউ কেউ আশাবাদী ছিলেন, নতুন প্রজন্মের তালেবান শাসকেরা হয়তো আরও নমনীয়, বাস্তববাদী এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার মতো কিছু সংস্কার আনবে। কিন্তু এই আশা আর বাস্তবতা মেলেনি।

এই সময়কালের মধ্যে আফগানিস্তান নিয়ে একধরনের ‘সফল রাষ্ট্র’-এর ভাবমূর্তি গড়ে তোলার চেষ্টা দেখা যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এই প্রচারণার মূল বক্তব্য হলো—তালেবান শাসনে এখন আফগানিস্তান দুর্নীতিমুক্ত, ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন নেই, বেকারত্ব নেই, মাদকমুক্ত, অপরাধ প্রায় শূন্য, ভিক্ষুক নেই, এমনকি ব্যক্তিগত খুনোখুনিও নেই। বলা হচ্ছে, আফগানিস্তান এখন এক আত্মনির্ভর, সুশাসিত, শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ রাষ্ট্র। এমনকি পশ্চিমা বা গণতান্ত্রিক দেশগুলোর তুলনাও টেনে দেখানো হচ্ছে যে, ‘তালেবান মডেল’ অনেক বেশি কার্যকর।

এই প্রচারণা শুধু বিভ্রান্তিকর নয়, বরং তা বাস্তবতা আড়াল করে একটি মানবিক সংকটকে গৌরবময় অর্জন হিসেবে সাজিয়ে তোলে। আর এর মধ্য দিয়ে তৈরি হচ্ছে এমন এক ধারণা, যেখানে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, নারীর স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা—সবকিছুকে যেন বিলাসিতা বা অকার্যকর ভাবা হচ্ছে, আর কেবল ‘শাস্তি ও ভয়ের শাসন’কেই উন্নয়নের পথ হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।

তালেবান শাসনে দুর্নীতি কমেছে—এ দাবির পেছনে আংশিক সত্যতা রয়েছে। ২০২১ সালের পর থেকে আফগানিস্তানে প্রশাসনিক দুর্নীতি, বিশেষত পুলিশ ও পাসপোর্ট অফিসে ঘুষের অভিযোগ কমেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। তালেবান সরকার অনেক ক্ষেত্রে সরকারি কাজকর্ম সরল করেছে এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে দুর্নীতির সুযোগগুলো নিয়ন্ত্রণ করেছে। তবে প্রশ্ন হলো—কোনো সিস্টেম যখন জবাবদিহিহীন, অগণতান্ত্রিক এবং সংবাদমাধ্যম, আদালত, বিরোধী দল বা নাগরিক সমাজের কোনো নজরদারি থাকে না, তখন সেই শাসনব্যবস্থাকে ‘স্বচ্ছ’ বলা যায় কি?

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বা অন্যান্য দুর্নীতি পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা তালেবান শাসনের আফগানিস্তানকে এখনো নিচের দিকের দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকাতেই রাখছে। কারণ, প্রকৃত দুর্নীতি মানে শুধু ঘুষ নয়—বরং ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বজনপ্রীতি, দমনপন্থা ও বিচারহীনতা। এসবই এখনকার আফগানিস্তানে প্রতিষ্ঠিত, শুধু অন্য নামে।

তালেবানপন্থীরা দাবি করছে, গত চার বছরে আফগানিস্তানে ধর্ষণের ঘটনা মাত্র তিনটি এবং সব ধর্ষককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তুলনায় তারা বলছে, আমেরিকায় বছরে ৫০ হাজার, ভারতে প্রতি ১৫ মিনিটে একজন, বাংলাদেশের অবস্থাও ভয়াবহ। প্রথমত, এসব তুলনা নির্লজ্জভাবে বিভ্রান্তিকর। দ্বিতীয়ত, ধর্ষণের সংখ্যা কমে গেছে বলে যেসব দাবি করা হচ্ছে, তার কোনো স্বাধীন উৎস বা তথ্যভিত্তিক প্রমাণ নেই। তালেবান শাসনের অধীনে আফগানিস্তানে সাংবাদিকতা প্রায় নিষিদ্ধ, নারীরা আদালতে যেতে পারেন না, এনজিও বা মানবাধিকার সংস্থা কাজ করতে পারে না। তাহলে ধর্ষণের শিকার নারীরা কোথায় গিয়ে অভিযোগ করবেন?

তালেবান শাসনের চার বছরজুড়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংগঠন বলেছে—আফগান নারীরা এই সময়ে সবচেয়ে বেশি নিপীড়িত জনগোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছেন। তাঁদের শিক্ষা, চাকরি, ভ্রমণ, এমনকি চিকিৎসাসেবাও নিয়ন্ত্রিত। তাঁরা বাইরে বের হতে পারছেন না, তথ্যপ্রবাহ থেকে বিচ্ছিন্ন—ফলে ধর্ষণের মতো ঘটনা লুকানো যাচ্ছে, রোধ করা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে শাস্তির ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ বন্ধ হয়েছে—এই দাবি একধরনের নির্মম রসিকতা ছাড়া কিছু নয়।

আরেকটি জনপ্রিয় প্রচারণা, কাবুল শহরে একটিও ভিক্ষুক নেই। বলা হয়, তালেবান সরকার ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে ভিক্ষুকদের নিবন্ধন করেছে, প্রত্যেককে প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা ও খাবার দেওয়া হয়। বাস্তবে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি), বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) ও ইউএস ইনস্টিটিউট ফর পিস-এর মতো সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী আফগানিস্তানে বর্তমানে ৯০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। শিশু অপুষ্টি, কাজের অভাব, খাদ্যাভাব—সব মিলিয়ে দেশটি মানবিক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় ‘ভিক্ষুক নেই’ বলার অর্থ হলো—হয় তারা ভয় পেয়ে পথে নামছে না, না হয় তাদের অস্তিত্বকেই অস্বীকার করা হচ্ছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন