‘মহানগর’ বানানোর পর আমাকে তুলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে: আশফাক নিপুন

প্রথম আলো প্রকাশিত: ০৫ আগস্ট ২০২৫, ১১:৪৮

শহীদ মিনারে দ্রোহযাত্রা, ফার্মগেটে দৃশ্যমাধ্যম শিল্পীসমাজের সমাবেশ কিংবা ফেসবুক—জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সব জায়গাতেই সক্রিয় ছিলেন নির্মাতা আশফাক নিপুন। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।


কোন তাড়না থেকে আন্দোলনে নেমেছিলেন?


আশফাক নিপুন: বহু বছর ধরেই আমার আন্দোলন চলছে, ১৫ বছর ধরেই চলছে। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের আগেও বিভিন্ন ইস্যুতে আন্দোলন করেছি। সাংবাদিক কাজল গুম, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল, কিশোর–মুশতাকের ওপর অত্যাচার থেকে খাদিজাকে গ্রেপ্তার—সব ক্ষেত্রেই আমি রাস্তায় সরব ছিলাম।
বিবেক থেকে আন্দোলনে নামার তাড়নাটা আসে, এটা আর কোনো কিছু না। এটার জন্য বড় কিছু হতে হয়, বড় কিছু করতে হয়, তা–ও না। গত ১৫ বছরে হওয়া অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করাটা আমার কাছে দরকার মনে হয়েছে। তখন আমার মনে হচ্ছিল, যা হচ্ছিল, সেটা ঠিক হচ্ছে না। সেই কারণেই তখন কাজের মাধ্যমে, অ্যাকটিভিজমের মাধ্যমে প্রতিবাদ করা কিংবা রাস্তায় দাঁড়ানোর তাড়নাটা সব সময়ই ছিল। এমন না যে জুলাইয়ে হঠাৎ করে তাগিদ অনুভব করলাম। তাড়নাটা আগে থেকেই ছিল।


সরকারের চোখরাঙানিকে উপেক্ষার সাহস কোথায় পেয়েছিলেন?


আশফাক নিপুন: আন্দোলনের সময় এলিটা (করিম)–কে ফোন দিয়ে, প্রযোজকদের ফোন দিয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে, আমাকে কীভাবে থামানো যায়? আমাকে (তুলে) নেওয়ার জন্য পরিকল্পনাও করছিল। আমার জন্য জুলাইটা অন্য ধরনের সেলিব্রেশন। কারণ, গত ১৫ বছর বিভিন্ন ইস্যুতে আমি দাঁড়িয়েছিলাম। তখন আমি ছিলাম একা। মহানগর বানানোর পর গোয়েন্দারা এসে আমাকে তুলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। বাসায় পুলিশ আসা, লুকিয়ে থাকা—এগুলো আমাকে এত দিন একা ফেস করতে হয়েছে। জুলাইয়ে আমার মনে হয়েছে, এখন আমি আর একা না। কোটি কোটি মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। এটা একটা কালেক্টিভ (সম্মিলিত) সাহস ছিল।


আগামীর বাংলাদেশকে আপনি কেমন দেখতে চান?


আশফাক নিপুন: বাংলাদেশকে সহনশীল ও মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চাই। আমরা রক্তক্ষয়ী গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এসেছি। এখনো অনেকের মধ্যে রাগ–ক্ষোভ, ক্রোধ রয়ে গেছে; এটা পুরোপুরি বের হয়নি। তবু বলব, আমরা একটা মানবিক রাষ্ট্র চাই; সব ধর্ম ও মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মানবিক রাষ্ট্র চাই। যেখানে যে কেউ নিজের মতামত প্রকাশ করতে ভয় পাবে না।


আমরা এখন যা ইচ্ছা তা–ই ফেসবুকে লিখতে পারি, এটা অবশ্যই আমাদের বড় অর্জন। আগে লিখতে পারতাম না। এখন ইউনূস সরকারকে ‘ইউসুফ সরকার’ও বলতে পারি, তাতে আমাদের কেউ ধরে নিয়ে যায় না। এটা অবশ্যই আমাদের একটা অর্জন। কিন্তু আমি এর চেয়েও বেশি কিছু চাই। হয়তো সরকারের কাছ থেকে কোনো প্রতিরোধ আসছে না, সেটা ঠিক আছে। তবে সরকার ছাড়া অন্য কোনো জায়গা থেকে প্রতিরোধ হলেও যেন আমার মতটা দিতে পারি, সেটা যেন নিশ্চিত করা যায়—ওই মানবিক রাষ্ট্রটা আমরা চাই।


এই রাষ্ট্র এক্সট্রিমিজমের (চরমপন্থা) দিকে চলে যাক, সেটা একেবারেই চাই না। সারা জীবনই ওটার বিরুদ্ধে আমার লড়াই ছিল, সামনেও জারি থাকবে। সুশাসনের বাংলাদেশ চাই। অপরাধীদের যেন বিচার নিশ্চিত হয়—এমন বাংলাদেশ চাই।


এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আওয়ামী লীগ আমলে ‘মহানগর’ বানানোর পর আপনি গোয়েন্দা নজরদারিতে ছিলেন, জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছিল...


আশফাক নিপুন: মহানগর বানানোর পর শুধু গোয়েন্দা নজরদারিতে ছিলাম, তা না। তাদের মেহমানও হতে হয়েছে। আমার বাসায় পুলিশ রেইড দিয়েছে। শুধু আমার না, আমার অভিনেতাদের বাসায় বারবার পুলিশ গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। অনেক ধরনের হেনস্তার মধ্যে যেতে হয়েছে। আমি পরিকল্পনা করেছি, আমি একটা সিনেমা অথবা সিরিজ বানাব। কোনো একজন শিল্পীকে যদি তাঁর শিল্পকর্মের জন্য হেনস্তার মধ্য দিয়ে যেতে হয়, তাহলে কী হতে পারে—সেটা নিয়ে শিগগিরই সিনেমা অথবা সিরিজ বানাব।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও