
মিছিলে গিয়ে কারাবন্দী হওয়া ১৮৮ প্রবাসী দেশে ফিরেছেন
‘স্বৈরাচারমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ার কাজে নিজেকে উৎসর্গ করতে চাই’, এমন দৃপ্ত অঙ্গীকারের কথা গত বছরের জুলাইয়ে ফেসবুকে লিখেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ওমর ফারুক। ফেসবুকে একই রকম পোস্ট (মন্তব্য করা) দিয়েছিলেন স্পেনপ্রবাসী আহসান সানী। তাঁদের মতো আরও অনেকে শুধু ফেসবুকে সরব ছিলেন বিষয়টি এমন নয়, দেশে দেশে রাজপথে নেমে এসেছিলেন প্রবাসীরা।
বৈষম্য নিরসনে গত বছরের জুলাই-আগস্টে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের একেবারে শুরু থেকেই সংহতি জানিয়ে আসছিলেন প্রবাসীরা। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানববন্ধন-মিছিল-সমাবেশের মতো নানা কর্মসূচি পালন করেছেন তাঁরা। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের অনুগত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্বিচার গুলি, হত্যা-নির্যাতন ও গণগ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে তাঁরা সোচ্চার ছিলেন।
ঝুঁকি আছে জেনেও গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে তখন বিক্ষোভ মিছিল করেছিলেন প্রবাসীরা। সেই মিছিল থেকে আটকের পর অনেককে কারাগারে যেতে হয়। অনুমতি ছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতে যেকোনো ধরনের মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যাঁরা মিছিল করে আমিরাতে কারাবন্দী হন, তাঁদের মুক্ত করতে উদ্যোগী হয় অন্তর্বর্তী সরকার। এখন পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ১৮৮ জন বাংলাদেশি কর্মী কারামুক্ত হয়ে দেশে ফিরেছেন।
ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে প্রবাসীদের অবদান স্মরণে আজ শনিবার (২ আগস্ট) ‘রেমিট্যান্স যোদ্ধা দিবস’ পালন করবে অন্তর্বর্তী সরকার। এ উপলক্ষে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আজ বিকেলে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। এই অনুষ্ঠানে গণ–অভ্যুত্থান নিয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করবেন রেমিট্যান্স যোদ্ধারা। অনুষ্ঠানে দুটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে। এর একটি রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের আন্দোলনের ওপর নির্মিত, অন্য তথ্যচিত্রে প্রবাসী অনলাইন অ্যাকটিভিস্টদের কার্যক্রম তুলে ধরা হবে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল প্রথম আলোকে বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের সময়ও প্রবাসীরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। গণ-অভ্যুত্থানের প্রতি সংহতি জানানোর কারণে যাঁরা চাকরি হারিয়ে মধ্যপ্রাচ্য থেকে দেশে ফিরে এসেছেন, তাঁদের বিশেষ সম্মাননা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে সরকার।