
১৫ ব্যয়বহুল ওষুধ উৎপাদনের সুযোগ হারাতে পারে দেশীয় ফার্মা
নিয়ন্ত্রক সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ৬০০টিরও বেশি নতুন ওষুধের নিবন্ধন প্রক্রিয়া এক বছরের বেশি সময় ধরে স্থগিত হয়ে আছে। ফলে বাংলাদেশের ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো অন্তত ১৫টি ব্যয়বহুল বায়োলজিক ওষুধ রয়্যালটি ছাড়াই উৎপাদনের সুযোগ হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
প্রায় ৫০টি ওষুধ কোম্পানি ক্যানসার ও দীর্ঘমেয়াদি রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত বায়োলজিক ওষুধসহ মোট ৬১৭টি নতুন ওষুধ নিবন্ধনের জন্য ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরে (ডিজিডিএ) আবেদন করেছে।
খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২৬ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উন্নীত হলে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) চুক্তির অধীনে পেটেন্ট মওকুফের সুবিধা হারাবে কোম্পানিগুলো।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আবদুল মুকতাদির দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যদি দ্রুত নিবন্ধন না পাই, তাহলে এলডিসি থেকে উত্তরণের পর রয়্যালটি ছাড়াই এসব ওষুধ উৎপাদনের সুযোগ আমরা হারাব।'
২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের বিষয়টি বহাল রাখার সিদ্ধান্ত গত মার্চে নেয় অন্তর্বর্তী সরকার।
আবদুল মুকতাদির বলেন, সাধারণত কোনো ওষুধ আবিষ্কারের তারিখ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত পেটেন্ট সুরক্ষা পাওয়া যায়। এই ১৫টি ওষুধের কিছু আবিষ্কারের পর ইতোমধ্যে ৫ থেকে ১০ বছর কেটে গেছে। ফলে এগুলো রয়্যালটি ছাড়াই বাংলাদেশে উৎপাদনের জন্য ১০ থেকে ১৫ বছরের একটি সুযোগ আছে।
'এই সময়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি সুযোগটি মিস করি, তাহলে পেটেন্টধারীদের রয়্যালটি দিতে হবে। এর অর্থ এসব জীবনরক্ষাকারী ওষুধের মূল্য বেড়ে যাবে এবং এর বোঝা রোগীদের ওপর পড়বে,' বলেন তিনি।
এই জটিলতার পেছনে মূল কারণ হলো—গত দুই বছর ধরে নতুন ওষুধের চূড়ান্ত অনুমোদন প্রদানকারী ড্রাগ কন্ট্রোল কমিটির কোনো সভা হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এখনো পর্যন্ত কমিটি পুনর্গঠনের কোনো পদক্ষেপও নেওয়া হয়নি বলে জানান ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা।
- ট্যাগ:
- ব্যবসা ও অর্থনীতি
- ওষুধ উৎপাদন