You have reached your daily news limit

Please log in to continue


প্রতিক্রিয়াশীলতার যুগে স্বাগত

আমাদের দেশে শিল্প-সাহিত্য-নাটক-সংগীত-চলচ্চিত্র হারাম হিসেবে পরিগণিত হয় বিশেষ একটি গোষ্ঠীর কাছে। এই গোষ্ঠীর কাছে ধর্ম যতটা নয়, তারচেয়ে বেশি বড় রক্ষণশীলতা, তাই প্রতিটি জায়গায় এরা চরম প্রতিক্রিয়া দেখায়। জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর যা বোঝা যাচ্ছে, তা হলো বাংলাদেশ যাদের খপ্পরে পড়েছে, তারা প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি। এক বছর ধরেই আমরা শুনতে পাচ্ছি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধের খবর, জানতে পারছি নাটক বা চলচ্চিত্রের শুটিং বন্ধের কথা।

সম্প্রতি উত্তরায় স্থানীয় কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে চিঠি লিখে শুটিং বন্ধের কথা বলা হয়েছে। সেখানে বলা হচ্ছে আবাসিক এলাকায় শুটিং হাউস পরিচালনা করা ‘নীতিমালার পরিপন্থী’, শুধু তা-ই নয়, এতে করে নাকি এলাকাবাসীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ‘ব্যাহত’ হচ্ছে। চিঠিতে ‘নিরাপত্তাহীনতা’, ‘শান্তি বিনষ্ট’ হওয়ার মতো কারণও দেখানো হয়েছে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, বিগত ২৫ বছর ধরে ওই ‘এলাকাবাসী’র তা মনে হয়নি। কারণ, উত্তরায় দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে শুটিং চলছে। এখন এসে কাদের গাত্রদাহ হচ্ছে, সেটা সহজেই অনুমেয়। তারা মনে করছে, বাংলাদেশে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের তারাই একমাত্র মালিক। তাই তারা শুটিং বন্ধ করা থেকে শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংকে নারীদের পোশাক কেমন হবে, সেটি নিয়েও আনুষ্ঠানিক চিঠিপত্র দেওয়া শুরু করেছে।

এই একই শক্তি গায়ের জোরে এবং তথাকথিত ‘গেল, গেল’ রব তুলে চলচ্চিত্রের প্রদর্শনীও বন্ধ করেছে জুন মাসে ঈদের সময়। আমরা খবরে পড়েছি, টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে নিরাপত্তা ও হুমকির মুখে ঈদ উপলক্ষে শাকিব খান অভিনীত ‘তাণ্ডব’ সিনেমা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন আয়োজকেরা। কেন বাধ্য হয়েছেন? পড়ুন প্রকাশিত সংবাদ থেকেই: ‘আন্দোলনকারী মাওলানা আব্দুল্লাহ বলেন, মসজিদ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদানে ক্ষতি হতে পারে। এ ছাড়া অসামাজিক কার্যকলাপ হতে পারে। সে জন্য হলটি বন্ধের জন্য বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।’ একটি ব্যাপারে আমরা নিঃসন্দেহ যে ধর্মের কথা বলেই চলচ্চিত্রসহ সব ধরনের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বন্ধের একটা উদ্যোগ লক্ষ করা যাচ্ছে। এটাকে অশনিসংকেত বললে কম করে বলা হয়। সংকেতের আর কিছু অবশিষ্ট নেই। সংকেত পেরিয়ে আমরা এখন ঝড়ের কবলে।

বিগত সরকার যেমন ধর্মীয় উগ্রবাদ, মৌলবাদ ও চরমপন্থার কাছে নতজানু হয়েছিল, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল, যার সুযোগে লেখক ও ব্লগারদের হত্যা করা হয়েছে, পাঠ্যবই থেকে সংস্কৃত নামের লেখকদের রচনা বাদ পড়েছে, এখনো

সেই একই নতজানু সংস্কৃতি চলছে। তাই এখনো পাঠ্যবইতে কাটাছেঁড়া চলছে। একই কারণে ‘মব’কে নরম করে বলা হচ্ছে ‘প্রেশার গ্রুপ’। অথচ আমরা দেখেছি মবের নামে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ করা, সিলেটে একজন নামী পরিচালককে সিনেমার শুটিং করতে না দেওয়া, ‘সঠিক পথে’ আনার নামে নারীদের লঞ্চে, রাস্তাঘাটে প্রহার ও হেনস্তা করা, আবার হেনস্তাকারীকে ফুলের মালা দিয়ে থানা থেকে বের করে আনা—সবই হচ্ছে। সরকার ও প্রশাসন সেই আগের মতোই নিশ্চুপ ও নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের এই সময়ে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা মন্ত্রী পদমর্যাদা নিয়ে উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, তিনিও অসহায় ওই গোষ্ঠীর কাছে। আজ চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী বন্ধ হচ্ছে, শুটিং করতে দেওয়া হচ্ছে না। একদিন যদি চলচ্চিত্র জিনিসটাকেই ‘হারাম’ ঘোষণা দিয়ে সব প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাতে আমি অবাক হব না। আশ্চর্য লাগে, সৌদি আরবের যেখানে পশ্চাৎপদতা থেকে উত্তরণ ঘটছে, সেখানে আমরা ক্রমাগত পেছনের দিকে যাচ্ছি। সৌদি আরবের বিভিন্ন শহরে নতুন নতুন সিনেমা হল তৈরি হচ্ছে, নিজেরা চলচ্চিত্র বানাচ্ছে। এই তো কয়েক বছর আগে, ২০১৮ সালে ফিল্ম কমিশন গঠন করে চলচ্চিত্রের ওপর ৩৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়ে চলচ্চিত্রচর্চায় মন দিয়েছে সৌদি আরব। ভুলে গেলে চলবে না সৌদি আরবে মক্কা অবস্থিত। সেখানে ধর্মীয় গোঁড়ামি ধীরে ধীরে কমছে। ২০২৪ সালে রিয়াদে তারা বড়সড় কয়েকটি আন্তর্জাতিক গানের আসর করেছে। আমার কথা হলো, যে দেশকে দেখে আমরা অনেক সময় ঈদের দিন-তারিখ ঠিক করি, তারা যদি চলচ্চিত্র তথা সংস্কৃতিকে গুরুত্ব দিয়ে এগোতে পারে, আমরা পিছিয়ে পড়ছি কেন?

হ্যাঁ, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডকে আমি প্রগতিশীলতার মাপকাঠি হিসেবেই দেখছি। অত্যন্ত পরিতাপের সঙ্গে লক্ষ করেছি, বাংলাদেশের একজন বুদ্ধিজীবী, যিনি উগ্র ধর্মীয় গোষ্ঠীর ভেতর মার্ক্সবাদ আবিষ্কার করেন, তিনি এক ডিম্বাকৃতির টেবিল বৈঠকে বলেছেন, পঞ্চাশ দশকের পর থেকে এখানকার প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীরা নাকি ‘বাঙালি জাতিবাদী সংস্কৃতি’র চর্চা করতে গিয়ে ধর্মকে বাদ দিয়ে দিয়েছেন। তাঁরা নাকি ‘ইসলাম নির্মূলের রাজনীতি’ করেছেন। আর এ কারণেই নাকি ‘ধর্মবাদী জাতিবাদে’র উত্থান ঘটেছে। তো এই যদি হয় ধর্ম, সমাজ ও রাজনীতি নিয়ে এদের বোঝাপড়া, তাহলে আমরা গরিবেরা কোথায় যাব?

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন