
মশা নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন দেশের প্রায় সব এলাকার জনগণ। এর আগে এই রোগ রাজধানী ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায় সীমাবদ্ধ থাকলেও এবার তা একযোগে সারা দেশে বিস্তার লাভ করেছে। চলতি বছরে ইতোমধ্যে ডেঙ্গুতে ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আক্রান্ত হয়েছেন ১৮ হাজার ৬২৫ জন। এডিস মশা থেকে বিভিন্ন ধরনের রোগ হলেও এবার ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। তাদের মতে, দেশের সিংহভাগ এলাকায় মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনার কাঠামো নেই। যদিও ঢাকার দুই সিটিসহ সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় কমবেশি জনবল রয়েছে। তবে বিজ্ঞানভিত্তিক উপায়ে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনা না করায় সেখান থেকে কার্যত সুফল মিলছে না। এর বাইরের এলাকায় মশক নিয়ন্ত্রণ কাঠামো বলে কিছুই নেই। এই অবস্থায় এডিসের বিস্তার যেমন হওয়ার কথা তেমনই হচ্ছে। সবমিলিয়ে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে এখন পর্যন্ত সরকার কার্যত ব্যর্থ বলে মন্তব্য করেছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
তাদের আরও অভিমত-বাংলাদেশ সরকার করোনা সংক্রমণ সফলভাবে মোকাবিলা করেছে। মানুষ থেকে মানুষে ছড়ানো এই ভাইরাসটি মোকাবিলা করা খুবই চ্যালেঞ্জিং ছিল। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নেতৃত্বে কার্যকর সমন্বয়ের ফলে এটা সম্ভব হয়। কিন্তু ২০০০ সালে শুরু হওয়া এডিস মশার উপদ্রব এখনো বলবৎ রয়েছে। শুরুর পর প্রতিবছরই কমবেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে মানুষ। ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, জিকা ভাইরাসসহ বহুবিধ রোগের বাহক এডিস মশার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সম্পর্কে সরকার অবগত হলেও কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় তা নিরসন হচ্ছে না।
তারা বলেন, ২০০০ সাল থেকে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া ভাইরাসে বাংলাদেশে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। এই ২৫ বছরে এডিস মশার কামড়ে কয়েক হাজার মানুষ পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন কয়েক লাখ। এসব জনগণের শারীরিক কষ্ট ভোগ করার পাশাপাশি চিকিৎসা ব্যয় নিজেদের গুনতে হয়েছে। অথচ বিশ্বের অনেক দেশে ডেঙ্গুর চিকিৎসা ব্যয় সরকার বহন করে। একদিকে সরকার মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ, অন্যদিকে চিকিৎসা ব্যয়ও বহন করছে না। তাহলে জনগণ যাবে কোথায়? সরকারকে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের উপায় বের করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।