
ছেলেরা সুযোগ পায় বেশি, মেয়েরা মুখ বুজে সহ্য করে যায়
কুশল বিনিময়ের পর শুরুতেই জানতে চাইলাম, ‘জুয়েল থিফ’-এর সফলতা কীভাবে উদ্যাপন করলেন? স্মিত হেসে নিকিতা বলেন, ‘আমি কখনোই কোনো সফলতাকে বড় করে উদ্যাপন করি না। এ ছবির ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। তবে অনেকেই আমাকে প্রশংসাভরা মেসেজ পাঠিয়েছেন। সেগুলো পড়ে খুব ভালো লেগেছে। আসলে সাফল্য আমার কাছে ক্ষণস্থায়ী ও আপেক্ষিক। তাই সফলতাকে মাথায় চড়তে দিই না।’
জুয়েল থিফ ছবিতে সাইফ ও জয়দীপের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে নিকিতা বলেন, ‘আমি কাছ থেকে বসে ওনাদের পর্যবেক্ষণ করতাম আর নিজেকে সমৃদ্ধ করতাম। এই দুই গুণী অভিনেতার সঙ্গে পর্দা ভাগ করে নেওয়া এবং তাঁদের আশপাশে থাকা আমার জন্য অনেক বড় ব্যাপার ছিল।’
ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রীদের বড় পর্দায় সুযোগ পেতে যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়, সে অভিজ্ঞতার কথাও জানান নিকিতা। তিনি বলেন, ‘আমাকেও বস্তাপচা, গোঁড়া চিন্তাভাবনার সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে। কবির সিং ছবিটাই আমাকে এই তথাকথিত চিন্তা থেকে বের করে আনে। এখন নির্মাতারা আমাকে নতুনভাবে ভাবেন, এর পুরো কৃতিত্ব আমি কবির সিং-কেই দিতে চাই। আর ওটিটি অবশ্যই আমার পথ অনেকটা সহজ করে দিয়েছে।’
অভিনয়জীবনের শুরুতে নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়েছে নিকিতাকে। ‘বহিরাগত’ হওয়ার কারণে একাধিকবার ‘নেপোটিজম’-এর শিকার হয়েছেন বলেও জানান। নিকিতা বলেন, ‘আমি জানি, আমার সঙ্গে অন্যায় হয়েছে। আর এটাও জানি, এটা কখনো পুরোপুরি বদলাবে না। তাই একে মেনে নিয়ে নিজের মনকে শান্ত রাখা ছাড়া উপায় নেই। আমাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হবে, ভাগ্যের ওপর আস্থা রাখতে হবে। আমরা আমাদের প্রতিভার মূল্য নিশ্চয়ই একদিন পাব।’
শুধু স্বজনপোষণ নয়, বলিউডে লিঙ্গবৈষম্যের অভিজ্ঞতাও নিকিতার হয়েছে। কিছুটা আক্ষেপ নিয়ে বলেন, ‘আপনার পুরুষ সহ-অভিনেতা আপনার চেয়ে বেশি সুযোগ ও সুবিধা পাবেন, এটা খুব স্বাভাবিক বিষয় বলে আমি দেখে এসেছি। শুধু আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে নয়, প্রায় সব ইন্ডাস্ট্রিতেই এই বৈষম্য আছে। আর দীর্ঘ সময় ধরে মেয়েরা তা মুখ বুজে মেনেও নিয়েছেন। এটা আমাদের সমাজেও,ছেলেরা সুযোগ পায় বেশি, মেয়েরা মুখ বুজে সহ্য করে যায়। তবে এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমার লড়াই এখনো চলছে।’
- ট্যাগ:
- বিনোদন
- লিঙ্গবৈষম্য
- নিকিতা দত্ত