
দুশ্চিন্তা ও আবেগ যেন আমাদের জীবন নিয়ন্ত্রণ না করে
দিনকাল এমন হয়েছে যে মানুষের মধ্যে বিভিন্ন কারণে দুশ্চিন্তা ও অতিচিন্তা করার প্রবণতা বেড়ে গেছে। চারদিকের অস্থিরতা মনকেও অস্থির করে তুলেছে। অবশ্য আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন, যারা আগে থেকেই যে কোনো তুচ্ছ বিষয় নিয়েই বেশি ভাবেন, বাড়তি কল্পনা করেন এবং দুশ্চিন্তা মগ্ন হন। আর এই ভাবনাগুলো অধিকাংশই নেতিবাচক, অর্থাৎ খারাপ চিন্তা করা। কেউ কোথাও যাত্রা করছে শুনেই তাদের আশঙ্কা হয় ঠিকমতো পৌঁছাবে তো? পথে কোনো ঝামেলা হবে না তো?
কেউ কেউ এমন আছেন যারা তার প্রিয়জনকে বিমানে তুলে দিয়েই ফ্লাইট ট্র্যাকিং করতে শুরু করেন। এই যে বিমানযাত্রা নিয়ে তার অতিরিক্ত চিন্তা সেটাই হলো দুশ্চিন্তার বিপজ্জনক মাত্রা। অন্য কাজের প্রতি মনোযোগ কমিয়ে এই ট্র্যাকিং করেই তিনি হয়তো ২১-২২ ঘণ্টা পার করে দিলেন।
কেউ কেউ আছেন যারা মিটিং বা কোথাও আড্ডা দেওয়ার পর মনে মনে ভাবতে থাকেন ‘আমি কি ভুল কিছু বলেছি?’ বা ‘আমার কথাটা কি তাদের খারাপ লেগেছে?’ মিটিংয়ে কিছু বলার পর সেই ব্যক্তি নিজেই ভাবতে থাকেন স্যার আমার কথাকে কীভাবে নিলেন? সহকর্মীরা হাসাহাসি করবে না তো? মিটিংয়ে কি আমার এই কথাটা বলা উচিত ছিল? সেখানে তিনি যা বলেছেন অথবা যা বলেননি, সেগুলোর যৌক্তিকতা নিয়ে অহেতুক ভাবতে থাকেন। ভাবতে থাকেন অন্য মানুষ কি তাকে বোরিং বা বিরক্তিকর ভাবছে? এসব ভাবতে গিয়ে তার ভবিষ্যৎ কাজকর্ম ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
যারা কোনো কিছু নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করেন, বুঝতে হবে, সেই মানুষগুলোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে একধরনের অক্ষমতা রয়েছে। অথবা তারা মনে করেন তাদের পছন্দ অন্যরা উপেক্ষা করতে পারেন। তাই কোনো রেস্তোরাঁয় খেতে যাবেন বা কোন কাপড় কিনবেন, কোথায় বেড়াতে যাওয়াটা ভালো হবে এসব ইস্যু নিয়ে অনেক বেশি ভাবতে থাকেন। নিজেদের ওপর আস্থাহীনতা থেকেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়, যা খুব ক্ষতিকর ফল বয়ে আনে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- নিরাপত্তা
- বিমান দুর্ঘটনা