মাইলস্টোন ট্রাজেডি: বিধ্বস্ত বিমান, অচেতন দায়িত্ববোধ

বিডি নিউজ ২৪ চৌধুরী আকবর হোসেন প্রকাশিত: ২২ জুলাই ২০২৫, ১২:৪৫

ক্লাস সবে শেষ হয়েছে। বন্ধুবান্ধবীদের কেউ কেউ বেরিয়ে গেছে। কেউ হয়তো মা-বাবার জন্য অপেক্ষা করছিল। কেউ কেউ নিশ্চয়ই ছিল গল্প আর আড্ডায় মেতে। হুট করে আকাশ থেকে যেন আগুন নামল।


ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ল একটি যুদ্ধবিমান। স্কুলটাই যেন পরিণত হলো এক অজানা যুদ্ধক্ষেত্রে—যেখানে কেউ কারোর শত্রু ছিল না। প্রাণ গেল শিশুদের, যারা ঘরে ফেরার জন্য ব্যাগ গুছিয়ে রেখেছিল। কেউ মারা গেছে ঘটনাস্থলেই। কেউ কেউ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে এখন। আশা করতে চাই, তাদের সবাই বেঁচে উঠবে। তাদের যারা বেঁচে থাকবে, তাদের কেউ কেউ নিশ্চয়ই আতঙ্ক নিয়ে কাটাবে বাকি জীবনটা। শুধু কী আক্রান্ত ওই শিশুগুলোই এমন আতঙ্কঘোরে থাকবে? আসলে আতঙ্ক আজীবনের হয়ে থাকতে পারে, মাইলস্টোনের যে অংশটি দুর্ঘটনায় পড়েনি, সেখানে দুর্ঘটনার সময় অবস্থান করা শিশুরাও।


এখন এই রাতে বিদেশবিভুঁইয়ে বসে যখন এই লেখাটি লিখছি, তখনই সংবাদমাধ্যমে দেখলাম হোস্টেল ছেড়ে যাচ্ছে মাইলস্টোনের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। যারা ঢাকার বাইরে থেকে পড়তে এসেছে, তারাও আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছে।


ঢাকায় থাকলে পেশাগত কারণেই দিনভর আমার ওখানে থাকার কথা ছিল। দূরে থাকার কারণে হয়তো উদ্বেগ হচ্ছে বেশি। ঢাকার মাইলস্টোনের সামনে সন্তানের খবর না পাওয়া মা-বাবার ছবি দেখে, হাসপাতালের ভিড় দেখে ঢাকাবাসী অন্য মা-বাবারা কি আজ দিনটা ভালো কাটাতে পেরেছেন? আসলে সন্তানহারা মা-বাবার কান্না সারা দেশের মানুষকে শোকার্ত করে তুলেছে।



প্রতিবারই কোনো না কোনো দুর্ঘটনা ঘটে এবং আমরা শোকাহত হই। তারপর আবার ভুলে যাই। কিন্তু দুর্ঘটনার নেপথ্য কারণগুলো আগের মতো রয়ে যায়। উদ্ধারকাজসহ সার্বিক বিষয়ে গাফিলতি হারিয়ে যায় শোকের সঙ্গেই।


মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর দেশব্যাপী চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। এই ধরনের সময়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো উদ্ধার, চিকিৎসা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। মা-বাবা, স্বজনরা অপেক্ষায় থাকেন প্রিয় মানুষের খবর জানার জন্য। সেই সময়ে কে ঘটনাস্থলে গেল, কে হাসপাতালে দেখতে গেল—তার প্রতি তাদের বিন্দুমাত্র আগ্রহ থাকে না।


দুর্ঘটনা মানেই প্রাণহানি নয়—সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবেই অনেক সময় প্রাণ হারায় মানুষ। আমাদের দেশে একটি আগুন লাগা, ভবন ধস বা বড় ধরনের সড়ক দুর্ঘটনার পর সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে যেটি, তা হলো—উদ্ধারকাজের সময় ঘিরে থাকা ভিড়। এই ভিড় কেবল কৌতূহলী জনতার নয়—এর মধ্যে থাকে স্থানীয় মানুষ, অসচেতন মিডিয়া, রাজনৈতিক কর্মী এবং সাম্প্রতিককালে যুক্ত হওয়া ইউটিউবার ও কনটেন্ট নির্মাতারা। একই রকম নাটকীয়ভাবে আহতদের দেখতে হাসপাতালে হয় ভিড়।


মাইলস্টোনে একই নাটকের দৃশ্যায়ন ঘটেছে। দুর্ঘটনার স্থান, হাসপাতাল—সবখানে উপদেষ্টা, রাজনৈতিক নেতা ও উৎসুক মানুষের ভিড়। এ ধরনের পরিদর্শন ‘সহানুভূতি দেখানোর নামে হলেও, বাস্তবে এটি দায়িত্বজ্ঞানহীন পদক্ষেপ।


একজন রাজনৈতিক নেতা বা সরকারের কোনো উচ্চপদের ব্যক্তি ঘটনাস্থলে গেলে তার সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে অনুসারী, সাংবাদিক, নিরাপত্তাকর্মীসহ একটি বিশাল ভিড় তৈরি হয়, যা উদ্ধারকাজের জন্য সংকুচিত জায়গাকে আরও সংকুচিত করে তোলে। কাজটা জটিল থেকে জটিলতর হয়। প্রশ্ন হলো, তাদের সেই সময়ে সেখানে উপস্থিতি কি আদৌ প্রয়োজন?

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও