১০ বছরেও সম্ভব হয়নি, ১০ মাসেই সম্ভব

জাগো নিউজ ২৪ মো. রহমত উল্লাহ্ প্রকাশিত: ২০ জুলাই ২০২৫, ১১:৪১

আবারও ‘সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরি ও হালনাগাদের নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। গত ১৪ জুলাই ২০২৫ তারিখে জারিকৃত পত্রে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়েবসাইটে প্রতিষ্ঠান পরিচিতি, প্রতিষ্ঠানের পাঠদানের অনুমতি ও স্বীকৃতি, শ্রেণি ও লিঙ্গভিত্তিক শিক্ষার্থীর তথ্য, শ্রেণিভিত্তিক অনুমোদিত শাখার তথ্য, পাঠদান সংক্রান্ত তথ্য (শিক্ষক, শিক্ষিকার নামসহ পূর্ণাঙ্গ রুটিন, পাঠ্যসূচি, বিবিধ নোটিশ ইত্যাদি), এমপিও, প্রতিষ্ঠানের ফোন/মোবাইল নম্বরসহ যোগাযোগের ঠিকানা, তথ্যসেবা কেন্দ্রের ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর, অভিযোগ নিষ্পত্তি কর্মকর্তার ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর, প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ সব শিক্ষক-কর্মচারীর তথ্য, ব্যবস্থাপনা কমিটির তথ্য হালনাগাদ রাখতে হবে।’


বিষয়টি অবশ্যই অনেক গুরুত্বপূর্ণ! কেননা, কোন প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট ওই প্রতিষ্ঠানকে ভার্চুয়ালি উপস্থাপন করে। আর সে উপস্থাপনটি হয় অত্যন্ত ব্যাপক পরিসরে, পৃথিবীজুড়ে। তাই মাউশি নির্ধারিত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ডায়নামিক ওয়েবসাইট থাকা এবং সেখানে মাউশি নির্দেশিত বিষয়গুলোসহ প্রতিষ্ঠানের অন্য তথ্যাদি ও কৃতিত্ব উপস্থাপিত থাকা অত্যাবশ্যক। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, অনুরূপ আদেশ বারবার দেওয়ার পরেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এসব আদেশ পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করছে না অথবা বাস্তবায়ন করতে পারছে না!


একটু পেছনে তাকালে দেখা যায় যে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অনুরূপ আদেশ সম্বলিত প্রথম পরিপত্রটি জারি করা হয়েছিল ০২ মে ২০১৫ তারিখে। যেটির বিষয় ছিল 'সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ডায়নামিক ওয়েবসাইট তৈরি ও হালনাগাদকরণ।' এরপরে শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে গত ২৪ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে এবং গত ১৯ আগস্ট ২০২৩ তারিখে এ সংক্রান্ত আরও দুটি আদেশ জারি করা হয়েছিল। অর্থাৎ সেই ২০১৫ সাল থেকে গত ১০ বছর ধরে বারবার আদেশ/পুনরাদেশ দেওয়া হলেও বাংলাদেশের সব স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখনো ডায়নামিক ওয়েবসাইট তৈরি করানো এবং সব তথ্য সংযুক্ত করে হালনাগাদ রাখানো সম্ভব হয়নি!



মাঠ পর্যায়ের বাস্তবতা হচ্ছে, যখনই ডায়নামিক ওয়েবসাইট তৈরির আদেশ দেওয়া হচ্ছে তখনই অনেক ভূঁইফোড় ও নামসর্বস্ব সফটওয়্যার/ আইটি প্রতিষ্ঠান স্বল্পমূল্যে ওয়েবসাইট তৈরি ও পরিচালনা করবে বলে চটকদার বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, মোবাইল ফোনে এসএমএস দিচ্ছে, লোকজন ধরাধরি করছে, প্রতিষ্ঠানে এসে ধরনা দিচ্ছে। কোনো কৌশলে চুক্তিবদ্ধ হয়ে যেনতেন কাজ করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এসব সফটওয়্যার কোম্পানির বৈধতা কোন অথরিটির কেমন সনদ দেখে নিশ্চিত হতে হবে তা জানা নেই অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানের। অবশ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বৈধ সফটওয়্যার/ আইটি প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো তালিকা দেওয়া হলে তারাও আবার সিন্ডিকেট করে অতিরিক্ত চার্জ ধার্য করার কৌশল নিতে পারে।


অপরদিকে নামিদামি সফটওয়্যার/ আইটি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের এককালীন ও মাসিক চার্জ অস্বাভাবিক বৃদ্ধি করছে। তাদের সফটওয়ারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব ডাটা আপলোড করা হলে প্রতি বৎসর চার্জ বাড়ানোর কৌশল করছে। ফলে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই নিজস্ব ডাইনামিক ওয়েবসাইট তৈরি করতে ও পরিচালনা করতে ব্যর্থ হচ্ছে। বিশেষ করে অসচ্ছল ও কম সচ্ছল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো প্রকৃত ডায়নামিক ওয়েবসাইট প্রস্তুত করার এককালীন ব্যয় এবং রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। সারাদেশে এমন অনেক স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা আছে যেখানে শিক্ষার্থীরা মাসিক বেতনই ঠিক মতো দেয় না এবং শিক্ষকরা তাদের প্রতিষ্ঠান অংশ থেকে তেমন কিছুই পান না!


আরেকটি বাস্তবতা হচ্ছে, ওয়েবসাইট নিয়মিত হালনাগাদ করা ও সমস্যা হলে সমাধান করার মতো দক্ষ জনবল অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেই নেই। আউটসোর্সিং করতে গেলে যে বাড়তি টাকার প্রয়োজন সেটিও অনেক প্রতিষ্ঠানে নেই। দুঃখজনক হলেও সত্য যে অধিকাংশ আইসিটি টিচার ও কম্পিউটার অপারেটর প্রাক্টিক্যাল/ ডিজিটাল কাজে অত্যন্ত দুর্বল। সাধারণ শিক্ষকদের কথা আর কী বলব! প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কম্পিউটার অপারেটরকে ওয়েবসাইট আপডেট রাখার বিষয়ে গাইড করার মতো যোগ্যতা, আগ্রহ ও দায়িত্ব বেশিরভাগ আইসিটি টিচারের নেই! অথচ প্রতিষ্ঠানের বৃহত্তর স্বার্থে সব শিক্ষককেই শিক্ষা কার্যক্রমের পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রম ও অন্যান্য কার্যক্রম সম্পাদন করতে হয়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও