তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা নিয়ে বিএনপি–জামায়াত–এনসিপির ৩ মত

প্রথম আলো প্রকাশিত: ১৭ জুলাই ২০২৫, ১১:২২

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত। কিন্তু এই সরকারের রূপরেখা কেমন হবে, তা নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতভিন্নতা রয়েছে। বিশেষ করে এ সরকারে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে আলাদা আলাদা প্রস্তাব দিয়েছে।


সংবিধান সংস্কার কমিশন জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের প্রস্তাব করেছিল। তবে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এনসিসির প্রস্তাব বাদ দেওয়া হয়। এর ফলে সংস্কার কমিশনের দেওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার রূপরেখার সুপারিশও বাদ হয়ে যায়।


গত বৃহস্পতিবার ঐকমত্য কমিশন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা নিয়ে একটি নতুন প্রস্তাব হাজির করে। তবে তাতে ঐকমত্য হয়নি। এর মধ্যে গত রোববার বিএনপি ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় একটি প্রস্তাব উত্থাপন করে। পরদিন সোমবার কমিশনের কাছে আলাদা প্রস্তাব জমা দেয় জামায়াত। আর এনসিপি প্রস্তাব দিয়েছিল গত মে মাসে। আগামী সপ্তাহে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে এসব প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হতে পারে।


বিএনপির প্রস্তাব


বিএনপি গত রোববার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একটি রূপরেখা প্রস্তাব করে। এতে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগপ্রক্রিয়ায় পাঁচটি বিকল্প রাখা হয়েছে।



১. রাষ্ট্রপতি যত দূর সম্ভব সংসদে প্রতিনিধিত্বশীল দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার যোগ্য ব্যক্তিদের মধ্য থেকে একজনকে নিয়োগ দেবেন। ২. এভাবে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব না হলে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, নিম্নকক্ষের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা হবে। কমিটির সভাপতি হবেন রাষ্ট্রপতি। তবে তাঁর ভোটাধিকার থাকবে না। ৩. এভাবেও সম্ভব না হলে সংসদীয় ওই কমিটিতে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী তৃতীয় সর্বোচ্চ দলের একজন প্রতিনিধি নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির ভোটাধিকার থাকবে। ৪. এ কমিটির মাধ্যমেও সম্ভব না হলে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, নিম্নকক্ষের স্পিকার ও সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী বিরোধী দলগুলোর মধ্যে (প্রধান বিরোধী দল ব্যতীত) যারা ন্যূনতম ৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে, তাদের প্রতিটি দলের পক্ষ থেকে একজন প্রতিনিধি থাকবে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির ভোটাধিকার থাকবে। পঞ্চম বিকল্প হিসেবে ত্রয়োদশ সংশোধনী অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ফিরে আসা যায়। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতিকে না রাখার বিষয়ে সব দল ইতিমধ্যে একমত হয়েছে। তবে সর্বশেষ পন্থা হিসেবে রাষ্ট্রপতিকে রাখা যায় কি না, বিবেচনা করা যেতে পারে।


জামায়াতের প্রস্তাব


জামায়াতে ইসলামী একাধিক রূপরেখা প্রস্তাব করেছে। তারা বলেছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ১২০ দিনের মধ্যে জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন সম্পন্ন করবে। কোনো কারণে তা সম্ভব না হলে মেয়াদ আরও ৬০ দিন বাড়বে। জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৫ থেকে ৩০ দিন আগে এবং মেয়াদের অবসান ব্যতীত অন্য কোনো কারণে সংসদ ভেঙে গেলে, ভাঙার সর্বোচ্চ ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের বিষয়টি চূড়ান্ত করতে হবে।


সংসদের মেয়াদ অবসানের ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের প্রথম প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রধান বিচারপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতার সমন্বয়ে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগে একটি বাছাই কমিটি হবে। প্রধান বিচারপতি হবেন কমিটির সভাপতি।


এনসিপির প্রস্তাব


এনসিপির প্রস্তাব হলো, আইনসভার নিম্নকক্ষ তথা সংসদ ভেঙে দেওয়ার অন্তত তিন সপ্তাহ আগে ১১ সদস্যবিশিষ্ট একটি সর্বদলীয় কমিটি গঠন করা হবে। প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে সর্বদলীয় কমিটিতে সংসদীয় দলগুলোর সদস্যসংখ্যা নির্ধারিত হবে। সংসদীয় কমিটিতে সদস্য অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে যেকোনো দলকে ন্যূনতম ৫ শতাংশ ভোটের অধিকারী হতে হবে।


আইনসভার যেকোনো কক্ষের (উচ্চকক্ষ, নিম্নকক্ষ) সদস্য এ কমিটির সদস্য হওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। সরকারি দল, প্রধান বিরোধী দল ও অন্যান্য বিরোধী দল নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী/ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে তিনজন করে মোট নয়জন নির্দলীয় প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করতে পারবে। কোন দল কোন কোন ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করেছে, জনগণের কাছে তা খোলাসা করতে হবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও