
বাক্সবন্দি মেশিন এখন ‘চায়ের টেবিল’, টেস্ট করাতে হয় বাইরে
আশরাফ হোসেনের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদরে। তিন হাসপাতাল ঘুরে সন্তানকে নিয়ে এসেছেন রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে। চার বছর বয়সী শিশুসন্তান ইমাম হোসেনের হার্টে একাধিক ছিদ্র। কোনো চিকিৎসক সার্জারি করতে সাহস পাচ্ছেন না। স্ত্রীর চাপে এখানে আসছেন সার্জারি করতে। কিন্তু সব টেস্টের সুযোগ না থাকায় পাশের বেসরকারি হাসপাতালে দৌড়াতে হচ্ছে তাকে।
একই অবস্থা মিরপুর-১১ থেকে আসা হাজেরা বেগমের (৪০)। তার বুকের ভাল্ভ-এর সমস্যায় সার্জারি করতে হয়েছে। রোগী আইসিইউতে। এই আইসিইউর রোগীরও টেস্ট করতে হয়েছে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। তার স্বামী মাসুদ গাজী জাগো নিউজকে বলেন, ‘হাসপাতালে টেস্ট হয় না। ডাক্তারের কথা মতো ভিক্টোরিয়া ডায়াগনস্টিক ল্যাব ও শিশু হাসপাতাল থেকে টেস্ট করেছি।’
তার কাগজ দেখে জানা গেলো- ইকো, পিটি আইএনআরসহ কয়েকটি পরীক্ষার রিপোর্ট বাইরের। একই অবস্থা মো. রাজুর (৪০)। তিনি বেশ কয়েকটি পরীক্ষা করিয়েছেন বেসরকারি বায়োল্যাবে। মর্জিনা বেগম (৫৪) নামে একজনও পিটিআই এনআর ও এপিটিটি টেস্টের জন্য গেছেন বেসরকারি ক্যাপিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। ইমাম হোসেন, হাজেরা, রাজু, মর্জিনা শুধু নন, প্রতিদিন হাসপাতালটিতে সেবা নেওয়া ২০০০-২২০০ রোগীর বেশ কিছু টেস্টের জন্য যেতে হয় বাইরে।
মেশিন প্যাকেটবন্দি, রোগীকে যেতে হয় বাইরে
সরকারি হাসপাতালের রোগী কেন প্রতিদিন বাইরে যাবে টেস্ট করতে? এমন প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়ে উঠে এসেছে, হাসপাতালটিতে গত দুই-আড়াই বছর ধরে বন্ধ হার্টের রোগীদের জরুরি পিটি আইএনআর, এপিটিটিসহ কয়েকটি টেস্ট। অথচ হাসপাতালের স্টোরে গিয়ে দেখা যায়, ওইসব টেস্টের নতুন মেশিন মোড়কজাত অবস্থায় স্টোরে পড়ে আছে। সেগুলোর একটিকে চা বানানোর টেবিল হিসেবেও ব্যবহার করা হচ্ছে। মেশিনের ওপর চায়ের কেটলিসহ সরঞ্জাম পড়ে আছে। অদৃশ্য কারণে এগুলো ইনস্টল করা হচ্ছে না।
- ট্যাগ:
- স্বাস্থ্য
- মেডিকেল টেস্ট