অশান্ত বিশ্বে জাতিসংঘ ও বাবুরাম সাপুড়ে

জাগো নিউজ ২৪ ড. মো. ফখরুল ইসলাম প্রকাশিত: ০৫ জুলাই ২০২৫, ১৩:৩৫

বর্তমান বিশ্ব যখন একের পর এক যুদ্ধ, সংঘাত আর মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি, তখন একটি প্রশ্ন নতুন করে সামনে এসেছে তা হলো জাতিসংঘ আসলে কী করছে? এর কার্যকারিতা, নিরপেক্ষতা, কিংবা শক্তি আদৌ কতটা? ইরান ও গাজায় ইসরায়েলি ও মার্কিন আগ্রাসন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, সুদান কিংবা ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধ, সবখানেই জাতিসংঘের ভূমিকা অনেকটা "বাবুরাম সাপুড়ে"র গল্পের মতো। যে সাপুড়ে সাপকে বশ মানানোর নাটক করে, কিন্তু বাস্তবে কিছুই করতে পারে না।


জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, শান্তি রক্ষার মহান ব্রত নিয়ে। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় দেখা যাচ্ছে, এই সংস্থাটি যেন বড় শক্তিগুলোর ছায়ায় পরিচালিত এক নিষ্ক্রিয় প্রহসনে পরিণত হয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদের ভেটো ব্যবস্থা এই ব্যর্থতার অন্যতম প্রধান কারণ। মাত্র পাঁচটি দেশের হাতে এই বিশেষ ক্ষমতা থাকায়, কোনো একটি দেশ যুদ্ধ চালিয়ে গেলেও জাতিসংঘ কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে না। ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘন, গণহত্যা বা আগ্রাসনের ঘটনায় জাতিসংঘ শুধু বিবৃতি দেয়, নিন্দা জানায়, কিন্তু বাস্তব কোনো পরিবর্তন আনতে ব্যর্থ হয়।ৎ


গাজার বর্তমান পরিস্থিতিই এর বড় প্রমাণ। ইসরায়েলি হামলায় হাজার হাজার নারী-শিশু নিহত হওয়ার পরও জাতিসংঘের কোনো প্রস্তাব কার্যকরভাবে গৃহীত হয়নি। একেকটি প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার আগেই তা ভেটোর খাঁচায় আটকে যায়। ইরান ও ইউক্রেনেও মার্কিন ও রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একইরকম নিস্ক্রিয়তা দেখা গেছে। অন্যদিকে, আফ্রিকা কিংবা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ছোট দেশগুলোর বিষয়ে জাতিসংঘ তুলনামূলকভাবে কড়া পদক্ষেপ নিতে সক্ষম হলেও, বড় শক্তিগুলোর ক্ষেত্রে তাদের অবস্থান রহস্যজনকভাবে নিরুত্তাপ।



এই পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠাই স্বাভাবিক। কি দরকার এমন একটি সংস্থার, যেটি যুদ্ধ থামাতে পারে না, নিপীড়িতের পাশে দাঁড়াতে পারে না, বরং নিপীড়কদের ভাষ্যে মৃদু আপত্তি জানিয়েই দায়িত্ব সারতে চায়? জাতিসংঘ যেন কেবল চিঠি চালাচালি, বৈঠক আর বিবৃতির এক আন্তর্জাতিক কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে।


বর্তমান বিশ্বে ক্রমাগত যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিচারিতা ও মাতব্বরি নিয়ে বৈশ্বিক ক্ষোভ ও ঘৃণার কথা সেদেশের শান্তিকামী মানুষ ও নেতারাও জানেন। কিন্তু তাতে কর্তৃপক্ষের কোন আক্ষেপ নেই। তাদের টার্গেট কীভাবে জাতীয় বাজেটে ঘাটতি মেটানো যায় জন্য মারণাস্ত্র বিক্রির তৎপরতা অব্যাহত রাখা। বিশ্বে ক্রমাগত যুদ্ধ ও সংঘাতের পেছনে জাতিসংঘের ব্যর্থতার পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসী ভূমিকাও গভীরভাবে জড়িত।


আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নিজেকে মানবাধিকারের রক্ষক ও শান্তির দূত হিসেবে তুলে ধরলেও বাস্তবে যুক্তরাষ্ট্র বারবার তার স্বার্থের পক্ষে যুদ্ধকে উসকে দিয়েছে বা চোখ বন্ধ করে থেকেছে। ইরাক, আফগানিস্তান, লিবিয়া কিংবা সিরিয়ার মতো দেশগুলোতে মার্কিন হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে এনেছে, অথচ জাতিসংঘ সেই আগ্রাসন রুখতে ব্যর্থ হয়েছে মার্কিন ভেটোর ভয়ে। আর ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বর্বরতায় যখন বিশ্ববিবেক থমকে দাঁড়ায়, তখন যুক্তরাষ্ট্র নির্লজ্জভাবে তা সমর্থন করে বা নীরব থেকে জাতিসংঘের অবস্থানকেও প্রভাবিত করে। এই দ্বিমুখী নীতির ফলে যুদ্ধ শুধু দীর্ঘস্থায়ী হয় না, বরং ন্যায়বিচার ও আন্তর্জাতিক সংহতির ধারণাকেই দুর্বল করে দেয়। মার্কিন এই মাতব্বরি বন্ধ না হলে জাতিসংঘের কোনো প্রচেষ্টাই সফল হবে না, বরং যুদ্ধ ও দখলদারিতেই বিশ্ব পিষ্ট হতে থাকবে।


জাতিসংঘের বাবুরাম সাপুড়ে ভূমিকার সাথে গাজায় ক্রমাগত যুদ্ধ বন্ধে আরব নেতাদের চরম উদাসীনতা ও দ্বিচারিতা নিয়ে মুসলিম বিশ্বের সবাই উদগ্রীব। কিন্তু ঘুমন্ত আরব নেতাদের তাতে কিছু যায় আসে না। তাদের কেউ কেউ যুদ্ধবাজ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে আল-আইয়ালা নামক চুলখোলা নর্তকী দিয়ে চুল দুলিয়ে অভিবাদন জানায়। এত বৈপরীত্যের মাঝে তারা ইসলামের সেবক থাকে কীভাবে?

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও