আগুনে বিশ্ব বিভাজনে গণতন্ত্র

জাগো নিউজ ২৪ আমেরিকা / যুক্তরাষ্ট্র ড. মিল্টন বিশ্বাস প্রকাশিত: ০৪ জুলাই ২০২৫, ১১:৫৮

২০১৮ সালে আমেরিকার হাওয়ায় দ্বীপে সেমিনারে অংশগ্রহণকালে ২৫ দিন অবস্থান এবং ২০২৪-এ নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত হওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে বলা যায়, মহাদেশটি বিশাল এবং সেখানকার নাগরিকরা আইন মেনে চলেন, আচরণে সভ্য ও সৌজন্যবোধে অনন্য। স্ট্যাচু অব লিবার্টি-এর সামনে দাঁড়ালে গণতন্ত্রের বিশাল জয়যাত্রাকে স্মরণ করা যায়। আর এলিস আইল্যান্ডের ইমিগেশন মিউজিয়ামে ঘুরলে আমেরিকায় বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর আগমন ও ক্রমবিকাশটি আবিষ্কার করা সম্ভব।আমেরিকা কেবল উন্নত রাষ্ট্র নয় সেখানকার মানবসমাজ পৃথিবীর অন্য মানুষের কল্যাণে নিবেদিতপ্রাণও বটে।১৫ লক্ষ বাঙালির বসবাসের সূত্রে মহাদেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ নিবিড়।


৪ জুলাই—যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস। দিনটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গৌরবের, কারণ এ দিনেই ১৭৭৬ সালে দেশটির তৎকালীন ত্রয়োদশ উপনিবেশ রাজ্য ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিল। এই ঘোষণাপত্র, যেটি টমাস জেফারসনের নেতৃত্বে প্রণীত হয়েছিল, বিশ্বের বহু গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠে। ‘‘সব মানুষ সমান”—এই ঐতিহাসিক বাক্য দিয়ে শুরু হওয়া যে স্বাধীনতার ভাষণ, তা আজও বহু জাতির সংগ্রামের নৈতিক ভিত্তি।


কিন্তু প্রশ্ন হলো, ২৪৮ বছর পর আজকের ২৪৯তম দিনে যুক্তরাষ্ট্র কতটা সেই আদর্শের কাছাকাছি অবস্থান করছে? স্বাধীনতার এই দিনে যখন প্যারেড, আতশবাজি ও দেশাত্মবোধক সংগীতের আবহে যুক্তরাষ্ট্র উদযাপন করছে জাতীয়তা, তখন একইসঙ্গে বিশ্ব দেখছে এক যুদ্ধমুখর, বিভাজিত ও সংকটময় আমেরিকা—যে নিজের ভিতরে গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন এবং বাইরে সম্ভাব্য নতুন যুদ্ধের মুখোমুখি।



যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং মানবাধিকারের অগ্রদূত হিসেবে পরিচিত হলেও, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেই পরিচয়ই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গা, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনকে ঘিরে দলীয় বিভাজন দেশটির রাজনীতিকে বিপজ্জনক মাত্রায় নিয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মার্কিন সমাজে একটি ‘সাংস্কৃতিক গৃহযুদ্ধ’ (cultural civil war) চলছে—যেখানে একপক্ষ অভিবাসন, সমতা ও বৈচিত্র্যকে গুরুত্ব দিচ্ছে, অন্যপক্ষ ধর্মীয় রক্ষণশীলতা ও জাতীয়তাবাদকে সামনে আনছে। মিডিয়া বিভক্ত, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মতাদর্শের লড়াইয়ের মঞ্চ, আর সাধারণ মানুষ রাজনৈতিক বিষয়ে মত প্রকাশে দ্বিধাগ্রস্ত।


অন্যদিকে বন্দুক নিয়ন্ত্রণ প্রশ্নে আইন প্রণয়ন স্থবির। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন গড়ে ১২০ জন মানুষ বন্দুক সহিংসতায় প্রাণ হারায়। স্কুলে হামলা, বর্ণবাদী গোষ্ঠীর উত্থান, পুলিশের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ—এসবই আজকের বাস্তবতা। গৃহে এমন পরিস্থিতির মধ্যে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যুক্তরাষ্ট্র আরও জটিল ও সংকটপূর্ণ নীতির মধ্যে আবদ্ধ। ২০২৩ সালের শেষদিকে শুরু হওয়া গাজা যুদ্ধ এখনও অব্যাহত। হাজার হাজার নিরীহ শিশু, নারী ও পুরুষ নিহত হলেও যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা দেয়া অব্যাহত রেখেছে। জাতিসংঘের শান্তিপ্রস্তাবে ভেটো, অস্ত্র সরবরাহ এবং যুদ্ধবিরতির অনাগ্রহ যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর চোখে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ইসলামি বিশ্ব, বিশেষ করে আরব ও দক্ষিণ এশীয় মুসলিম দেশগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতি গণতন্ত্রের দ্বিমুখী রূপ হিসেবেই দেখা হচ্ছে। গাজা যুদ্ধের সূত্র ধরে হিজবুল্লাহ ও হুথিদের ওপর ইসরায়েলি অভিযানে পরোক্ষভাবে যুক্তরাষ্ট্র অংশগ্রহণ করছে। সম্প্রতি মার্কিন জাহাজ পারস্য উপসাগরে তৎপরতা বাড়িয়েছে, ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানপন্থি গোষ্ঠীর ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে।


২১ জুন রাতে ইরানের যে-সব পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা ফেলা হয়েছে, সেগুলো সত্যিই যদি অচল হয়ে গিয়েছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন ইরানকে শায়েস্তা করার নামে মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি বড় যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে। যদি ইরান কোনো মুহূর্তে যুক্তভাবে হামলা চালায় বা মার্কিন ঘাঁটিতে আবার পাল্টা আঘাত হানে, তাহলে তা সরাসরি যুদ্ধে রূপ নিতে পারে। এর প্রভাব শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, বরং গোটা বিশ্বব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করে তুলবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও