বিএনপি সংস্কার বিষয়ে বেশ কিছুটা ছাড় দিয়েছে। কিন্তু অন্যরা কি ছাড় দেবে? অবস্থাদৃষ্টে তা মনে হচ্ছে না। বরং বিএনপির বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার করা হচ্ছে যে বিএনপি সংস্কার চায় না। সংস্কারবিষয়ক ঐকমত্য কমিশনের বিভিন্ন দলের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি শর্ত সাপেক্ষে ছাড় দিতে রাজি হয়েছে। বৈঠক শেষে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের প্রস্তাব বাতিল করা হলে দুই মেয়াদের বেশি একজনের প্রধানমন্ত্রী পদে না থাকার বিষয়টিও তারা মেনে নেবে।
বিভিন্ন কমিশনের প্রস্তাব করা ৮৯ শতাংশ সংস্কারের সঙ্গে বিএনপি একমত পোষণ করেছে। কেবল সংবিধান সংস্কারের জন্য কয়েকটি প্রস্তাবে বিএনপি দ্বিমত পোষণ করেছে।
প্রথমেই প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদের বিষয়টি নিয়ে আলোকপাত করা যাক। বিএনপি ৩১ দফা ঘোষণার মাধ্যমে আগেই প্রস্তাব করেছিল টানা দুই মেয়াদের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। কিন্তু কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দুইবার বা ১০ বছরের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। এমন না যে কমিশন প্রধানমন্ত্রী পদে মেয়াদের বিষয়ে প্রথম বলল। বিএনপি আগেভাগেই প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সম্পর্কে একটি প্রস্তাব দিয়ে রেখেছিল।
শুধু তা-ই না, সংবিধানের ৭০ নম্বর অনুচ্ছেদও সংশোধনের জন্য বিএনপির প্রস্তাব ছিল। বিএনপি একটি উচ্চকক্ষ গঠনের পরিকল্পনা আগেভাগেই করে রেখেছিল। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ, আইনসভা, বিচার বিভাগ, নির্বাহী বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনার জন্যও ৩১ দফায় বলা হয়েছে। নির্বাচনী আইন সংশোধন ও নির্বাচনব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে বিএনপির সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব আছে।
বরং কমিশনগুলো এমন কিছু প্রস্তাব করেছে, যাতে এখন সংস্কারপ্রক্রিয়া নিয়ে জনমনে প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, সরকার বা কমিশন কি আদৌ কোনো সংস্কার চায় বা তাদের কিছু কিছু অবাস্তব সংস্কার প্রস্তাব ভবিষ্যতের সরকারকে দুর্বল করার জন্য কি না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সংস্কারের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিএনপি ঠেকাও পরিকল্পনার অংশ।