
পুরোনো ফ্লপি ডিস্ক কেন এখনো বিমান ও হাসপাতালের জন্য গুরুত্বপূর্ণ?
নব্বইয়ের দশকে প্রযুক্তির কথাই উঠুক, অনেকেই চোখ বন্ধ করে বলবেন ওয়াকম্যান, পোলারয়েড ক্যামেরা, সিডি। কিন্তু একসময় কম্পিউটারের প্রধান স্টোরেজ মাধ্যম ছিল যে জিনিসটি, সেই ফ্লপি ডিস্ক যেন আজ শুধুই ‘সেভ’ আইকনের প্রতীক! বাস্তব জীবনে তার উপস্থিতি প্রায় নেই বললেই চলে। তবে অবাক করার মতো সত্য হলো, এ পুরোনো প্রযুক্তি এখনো হারিয়ে যায়নি। বরং নির্দিষ্ট কিছু গুরুত্বপূর্ণ খাতে ফ্লপি আজও টিকে আছে নির্ভরযোগ্য ‘যোদ্ধা’ হয়ে।
আকাশপথের নিয়ন্ত্রণে ফ্লপির ভূমিকাই শেষ কথা: বিমানের নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা ও এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) এখনো ফ্লপি ডিস্ক ব্যবহার করে। নব্বইয়ের দশকে তৈরি অবকাঠামোর ওপর দাঁড়িয়ে থাকা এ ব্যবস্থায় প্রযুক্তি বদল হয়নি বললেই চলে। ফলে বিমানবন্দরে অনেক সময় ফ্লপিই হয়ে ওঠে অপরিহার্য। যদিও নিরাপত্তা ও কার্যকারিতার প্রশ্নে এ ব্যবস্থার সমালোচনা হচ্ছে এবং এফএএ ধীরে ধীরে তা থেকে বেরিয়ে আসার পরিকল্পনা নিচ্ছে।
হাসপাতালেও ছিল ফ্লপির নির্ভরতা: মেডিকেল খাতেও ফ্লপির ব্যবহার চমকে দেওয়ার মতো। নরওয়ের চিকিৎসকরা ২০১৫ সাল পর্যন্ত প্রতি মাসে রোগীর আপডেটেড তালিকা ফ্লপি ডিস্কেই পেতেন! নরওয়ের সফটওয়্যার ডেভেলপার ফিন গুন্ডেরসেন জানান, ইউএসবির চেয়ে কম খরচে ফ্লপিতে তথ্যসংরক্ষণ করা সম্ভব, আর সিডি-রমের তুলনায় কম সময় লাগে সেভ করতেও।
রেল, টেক্সটাইলসহ আরও কিছু খাতে: সান ফ্রান্সিসকোর মুনি মেট্রোলাইট রেল এখনো প্রতি দিন সকালে স্বয়ংক্রিয় ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম চালু করতে একটি ফ্লপি ডিস্ক ব্যবহার করে। যদিও তারা ২০৩৩ সালের মধ্যে নতুন প্রযুক্তিতে স্থানান্তরের পরিকল্পনা করছে। আবার টেক্সটাইল শিল্পেও দেখা যায় ফ্লপির ব্যবহার। বিশেষজ্ঞ ম্যাথিউ হলিন্সহেড জানালেন, পুরোনো মেশিনে নতুন স্টোরেজ সিস্টেম আনলে ত্রুটির আশঙ্কা থাকে, তাই অনেক প্রতিষ্ঠান এখনো ঝুঁকি না নিয়ে ফ্লপিকেই ভরসা করছে।
- ট্যাগ:
- প্রযুক্তি
- স্টোরেজ ডিভাইস
- ফ্লপি ডিস্ক