ফ্রিল্যান্সিং বাজারে নারী

জাগো নিউজ ২৪ অধ্যাপক আব্দুল বায়েস প্রকাশিত: ২২ জুন ২০২৫, ১২:৩৩

অধুনা কাজকর্মের পৃথিবী ব্যাপক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। প্রথাগত যে কাজ আগে মানুষ করতো, তা এখন ক্রমাগত প্রযুক্তির দখলে চলে যাচ্ছে। একই সাথে গাদায় গাদায় তৈরি হয়ে চলছে প্রযুক্তি– প্রবণ পেশা। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং-  সোজা কথায়  যার অর্থ অনলাইনে নিজের দক্ষতা বিক্রি ।  


সমর্থিত  এক সূত্র থেকে পাওয়া সুখবর হলো, ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ইতিমধ্যে একটা অবস্থান তৈরি করতে সমর্থ হয়েছে। বৈশ্বিক  অনলাইন শ্রম সরবরাহে  ভারতের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় অবস্থান ; ৬৫ হাজার নিবন্ধিত ফ্রিল্যান্সার নিয়ে বৈশ্বিক বাজারের প্রায় ১৭ শতাংশ বাংলাদেশের দখলে। তাছাড়া এই মঞ্চ এবং সুখ্যাতি বাংলাদেশের অনলাইন কর্মীদের জন্য বিশ্বব্যাপী পর্যাপ্ত গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত অন্যান্য কারিগরি কর্মের ক্ষেত্রে যেমন, ফ্রিল্যান্সিংয়ে সব নিবন্ধিত অনলাইন কর্মীর মধ্যে নারীদের অংশ মাত্র ৯ শতাংশ।


দুই.
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভার্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি )  কিছু গবেষক (রায়েদ আরমান, অনন্দিতা ভট্টাচার্য , নারায়ান দাস, দিপনিতা ঘোষ , মহিমা গমেজ , লপিতা হক, কামরুজ্জামান এবং সাকিব আহমেদ )  ফ্রিল্যাসিংয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রায় ১ হাজার নারীর  আয়, কর্মসংস্থান, আস্থা, আকাঙ্ক্ষা, ক্ষমতায়ন, দক্ষতা এবং জীবন ধারণের ওপর এই কর্মসূচির  প্রভাব মূল্যায়ন করেন। প্রাপ্ত প্রশিক্ষণের  প্রভাবের পরিমাণ ও গুণগত দিক বিবেচনায় নিয়ে তারা একটা  মিশ্রণ –পদ্ধতি অনুস্মরণ করেন। পরিমাণগত ফলাফল পর্যালোচনা করতে  রেনডমাইজড কন্ট্রোল ট্রায়াল (আরসিটি) পদ্ধতি  ব্যবহার করা হয়।


তিন.
 বিআইজিডি পরিচালিত সমীক্ষা থেকে প্রাপ্ত পরিমাণগত পর্যবেক্ষণ বলছে, প্রকল্প বাস্তবায়ন সময়ে দুটো শর্তই প্রায় শতভাগ পূরণ হয়েছে অর্থাৎ প্রশিক্ষণপ্রার্থীদের শতভাগ এসএসসি ডিগ্রিধারী এবং তাদের ৯৫ শতাংশের বয়স ১৮-৩৫ বছর।



ফলোআপ সমীক্ষার ভিত্তিতে প্রভাব মূল্যায়নে দেখা যায় , শ্রমবাজারে  এ ধরনের প্রশিক্ষণের প্রভাব বেশ উৎসাহব্যঞ্জক। যেমন প্রশিক্ষণ শেষে কর্মসংস্থান, কাজের ঘণ্টা এবং আয় বৃদ্ধি পায়  যথাক্রমে ২৬, ৪২ ও ৫৪ শতাংশ । এর অর্থ দাঁড়ায় , প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নারী কর্ম ও উৎপাদনশীলতায় অগ্রগাম। ফলে এদের আয়ও বেশি ছিল। বলাবাহুল্য, যেহেতু প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ফ্রিল্যান্সিংয়ের ওপর, তাই আপাতত ইতিবাচক ফলাফলের পেছনের কারণ প্রশিক্ষণ বলে ধরে নেওয়া যায় । তবে এও দেখা যায় যে , যারা বেশি বেশি ক্লাস করেছেন, তাদের উন্নতিও বেশি  হয়েছে- যেমন, যারা ৪৮টি ক্লাসের মধ্যে কমপক্ষে ২৫টি ক্লাসে যোগ দিয়েছেন, তাদের ফ্রিল্যান্সিং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ৪২ শতাংশ অথচ ১১-২৪ ক্লাসে যোগ দিয়ে বৃদ্ধি ঘটেছে ২১ শতাংশ  এবং ১৬ শতাংশ বৃদ্ধি যারা আরও কম ক্লাস করেছেন তাদের জন্য । স্বাভাবিকভাবেই এই তিন ধরনের অংশগ্রহণকারীর ফ্রিল্যান্সিং থেকে আয় প্রতি মাসে যথাক্রমে ২৫০০, ২০৮৩ এবং ৬৪৩ টাকা । এর বিপরীতে, নিয়ন্ত্রিত গোষ্ঠীর বেলায় কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ঘটেছে  ১২ শতাংশ মাত্র এবং মাসিক আয় ৭৭৮ টাকা। 


স্মরণ করা দরকার যে,  ইন্টারভেনশনটি (এখন থেকে হস্তক্ষেপ)  ছিল ফ্রিল্যান্সিং কর্মকাণ্ডে  কম্পিউটার সফটওয়্যার প্রয়োগ নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া। সুতরাং, প্রথমেই ইতিবাচক প্রবণতা লক্ষ করা যায় যন্ত্রটি নাড়াচাড়া আর ব্যবহারের ক্ষেত্রে। এই বর্ধিত দক্ষতা আয়কে প্রভাবিত করেছে বলে প্রতীয়মান হয়–  যেমন যারা প্রশিক্ষণ নেননি তাদের চেয়ে ৩৮ শতাংশ বেশি আয় ছিল যারা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তাদের। স্বভাবতই, বর্ধিত আয় উত্তরদাতার ভোগও বাড়ায়– যেমন এদের খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত ব্যয় বৃদ্ধি যথাক্রমে ৪৮ এবং ৪১ শতাংশ । এর তাৎপর্য সুদূরপ্রসারী কেননা হস্তক্ষেপটির জন্য ভোগ বৃদ্ধি মানব পুঁজি গঠনে  ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।


অন্যদিকে, ঋণগ্রস্ত খানার অনুপাত হ্রাস ও সঞ্চয়কারী খানার অনুপাত বৃদ্ধি পায়।  যদিও আস্থা ও আকাঙ্ক্ষা প্রভাব তেমন তাৎপর্যপূর্ণ নয় বলে লক্ষ করা যায়, তারপরও সমীক্ষায় নারীর ক্ষমতায়নের কিছু নির্দেশ তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন দেখা যায়। অংশগ্রহণকারীদের মনোবৈজ্ঞানিক মঙ্গল বেড়েছে – সুখ ও চাপের ওপর তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব পরিলক্ষিত হয়।  যেমন- ট্রিটমেন্ট গোষ্ঠীর চার-পঞ্চমাংশ জানিয়েছে যে গত এক মাসে তারা কোনোভাবে চাপের মধ্যে ছিল না। এর একটা কারণ হয়তো এই যে নিয়ন্ত্রিত গোষ্ঠীর তুলনায় তিন-চতুর্থাংশ বেশি ট্রিটমেন্ট গোষ্ঠী অবহিত করেছে যে তারা গত মাসে কোনো আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হয়নি। এবং প্রত্যাশিতভাবে,  এ হস্তক্ষেপের ফলে ফ্রিল্যান্সিং সংক্রান্ত জ্ঞান বৃদ্ধি ঘটেছে ১২ শতাংশ।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও