মামুন রেজা মরে গেলেন, কী বলে গেলেন?

বিডি নিউজ ২৪ আমীন আল রশীদ প্রকাশিত: ২১ জুন ২০২৫, ১৩:৫০

শুক্রবার রাত সোয়া দশটার দিকে সাবেক সহকর্মী, বিবিসির সাংবাদিক আহসান হিমেল ফেইসবুক মেসেঞ্জারে লিখলেন: ‘মামুন রেজা ভাই মারা গেছে!’


আমি তখন এক প্রতিবেশীর বাসায় বসে গল্প করছি। হিমেল এটা কী লিখলেন তা বোঝার চেষ্টা করি। মামুন রেজা মানে তো আমাদের মামুন রেজা। চ্যানেল টোয়েন্টিফোরে আমার সাবেক সহকর্মী। খুলনার ব্যুরো প্রধান। মামুন রেজা ভাই মারা গেছে মানে কী? এটা কী ধরনের খবর! হিমেলকে ফোন করলাম। বললেন, ‘ভাই খবর সত্যি। আমার হাত পা কাঁপতেছে।’ টের পেলাম হাত পা আমারও কাঁপছে। কিন্তু বিশ্বাস হচ্ছিল না অথবা বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল। চট করে মনে পড়ল শাহীন ভাইয়ের কথা। খুলনার সাংবাদিক শামসুজ্জামান শাহীন। মামুন ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ। ফোন রিসিভ করার পরে শুধু এটুকু জিজ্ঞেস করলাম: ভাই ঘটনা কী? শাহীন ভাই বললেন, ‘ভাই, মামুন নাই…’। এরপর হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করলেন।


আমার কান থেকে বাক্যটা মস্তিষ্কের প্রতিটি কোষে আঘাত করছিল। মামুন নাই।


মামুন নাই মানে কী! আমার সঙ্গে তো গত মঙ্গলবারও কথা হলো হোয়াটসঅ্যাপে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষকের ফোন নম্বর চেয়েছিলাম। তিনি লিখলেন: ‘ভাইয়া আমি মালয়েশিয়ায় রয়েছি। ২২ তারিখে ফিরব ইনশাআল্লাহ । ফেরার পর পাঠিয়ে দেব।’


অথচ ২০ তারিখ রাতে শুনলাম মামুন নাই। তার মানে তিনি ২২ তারিখের আগেই দেশে ফিরেছেন। শরীর খুব খারাপ করছিল?


শাহীন ভাই জানালেন, কয়েকদিন আগে মামুনের চেহারা বেশ শুকনো দেখে জিজ্ঞেস করেছিলেন, কী সমস্যা মামুন? বলেছিলেন, ‘শরীরটা ভালো না ভাই।’



শরীরটা ভালো না মানে কী? তার যে হৃদযন্ত্র বসে গেছে, চূড়ান্ত হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিতে আছেন, সেটা টের পাননি নাকি পেয়েছিলেন? হার্ট অ্যাটাকে মামুন রেজা মারা গেলেন ৪৫ বছর বয়সে। ৭২ বছর গড় আয়ুর দেশে ৪৫ বছর নিশ্চয়ই অনেক বয়স নয়।


চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের নিউজ এডিটর থাকাকালীন আমাকে দীর্ঘদিন অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ন্যাশনাল ডেস্ক সামলাতে হয়েছে। সেই সুবাদে ঢাকার বাইরের ব্যুরো প্রধান, রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখতে হয়। সবার সঙ্গে সমান সম্পর্ক গড়ে ওঠে না। কারো কারো সঙ্গে সম্পর্ক হয় অম্লমধুর। কারো সঙ্গে খুবই ঘনিষ্ঠ। মামুন রেজা ছিলেন তাদের একজন। সম্ভবত তার বাড়ি আর আমার বাড়ির মধ্যে দূরত্ব একশো কিলোমিটারেরও কম বলে। হয়তো এটা আঞ্চলিকতার টান। অথবা মামুন রেজা অসম্ভব ভালো মানুষ ছিলেন বলে।


তার সঙ্গে ব্যক্তিগত স্মৃতির সংখ্যা অনেক। তার সরলতার একটা ছোট্ট উদাহরণ দিই। চ্যানেল টোয়েন্টিফোরে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে, ঢাকার বাইরের রিপোর্টে সংশ্লিষ্ট রিপোর্টার বা প্রতিনিধিদেরই ভয়েস যাবে। সুতরাং সবাইকে সময় বেঁধে দেওয়া হলো যে, এই সময়ের মধ্যে সবাই নিজেদের উচ্চারণ ত্রুটি দূর করবেন। প্রয়োজনে কোর্স করবেন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের পরেও বারবার মামুন ভাই সময় নিচ্ছিলেন। কারণ তিনি মনে করছিলেন যে, তার ভয়েস ঠিক হচ্ছে না। তাকে নানাভাবে আশ্বস্ত করতাম। সাহস দিতাম। তিনি উজ্জীবিত হতেন। কিন্তু পরের মাসে গিয়ে আবার একই কথা বলতেন যে, ‘ভাই আমাকে দিয়ে এটা হবে না।’ কিন্তু আমরাও হাল ছাড়িনি। শেষ পর্যন্ত রিপোর্টে তার নিজের কণ্ঠই যেত।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও