
কোভিড ও ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে, আপনি নিরাপদ তো?
কোভিড ও ডেঙ্গুর প্রকোপ একইসাথে বাড়ছে। মৃত্যুও বাড়ছে। প্রতিদিনই বাড়ছে। দেশে বেশ কিছু কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছে। আতঙ্ক ছড়াচ্ছে করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে দেশে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৩ জন। মে মাসে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৬ জনে। আর জুন মাসের প্রথম আট দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬ জন এবং একজন মৃত্যুবরণ করেছেন।
সরকার আবার সবাইকে মাস্ক পরার অনুরোধ করছে। সাম্প্রতিক এই কোভিড করোনার একটি উপধরন। এ সম্পর্কিত সতর্কতা ও নির্দেশিকাগুলো জানা জরুরি। কোভিড–১৯–এর এই নতুন উপধরন অমিক্রন এক্সবিবি (Omicron XBB) দ্রুত বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে।
ভারতসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি দেশে করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এবং অন্যান্য দেশে ভাইরাসের এই ধরনটি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় নতুন সতর্কতা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ভারত এবং ভাইরাস ছড়ানো অন্যান্য দেশে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি ঝুঁকি মোকাবিলায় সব স্থল ও বিমানবন্দরে হেলথ স্ক্রিনিং ও নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে।
বলা হচ্ছে, এই রূপটি পূর্ববর্তী রূপগুলোর তুলনায় বেশি সংক্রামক। অনেক ক্ষেত্রে এটি সাধারণ লক্ষণ বা উপসর্গ প্রকাশ করে না, কিন্তু ছড়িয়ে পড়তে থাকে। অমিক্রন এক্সবিবি হলো একটি রিকম্বিন্যান্ট সাবভেরিয়েন্ট, যা দুটি অমিক্রন স্ট্রেনের সংমিশ্রণে গঠিত। উপধরনটি সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে—পূর্ববর্তী রূপগুলোর তুলনায় দ্রুত ছড়াতে পারে। কখনো কখনো প্রচলিত পরীক্ষায় ধরা পড়ে না, মানে ফলস নেগেটিভ টেস্ট আসে।
করোনার সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ডেঙ্গু রোগী। দেশের ৫৮টি জেলায় ডেঙ্গু দেখা দিয়েছে। ২০২৫ সালের জুনে প্রতিদিন ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আগের দিনের চেয়ে বাড়ছে। চলতি বছরের মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত প্রতি মাসে ডেঙ্গু বেড়েছে তার আগের মাসের চেয়ে দ্বিগুণ হারে। চলতি জুন মাসের প্রথম ১৫ দিন যত রোগী মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, তা আগের মাসের আক্রান্তের প্রায় সমান। কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। আর ব্যাপক গরমও পড়েছে। এই রকম পরিস্থিতিতে ডেঙ্গু বাড়ার আশঙ্কা থাকে।
ঘন ঘন বৃষ্টি এবং বাতাসের আর্দ্রতার আধিক্য ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে নাজুক করে তুলছে। এবার লক্ষণীয় দিকটি হলো, রাজধানীর চেয়ে দেশের অন্যত্র ডেঙ্গু বিস্তারের পরিমাণ অনেক বেশি। রাজধানীতে মশা নিধনে কিছুটা হলেও একটা ব্যবস্থা আছে; কিন্তু ঢাকার বাইরে তাও নেই। আর এসবই এবারের ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে শঙ্কাজনক করে তুলেছে বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্যবিদরা।
বছরব্যাপী সারা দেশে এখন থেকে এডিস মশা নির্মূলে পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা, জৈবিক ব্যবস্থাপনা, রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ এবং যান্ত্রিক পদ্ধতির সমন্বিত ক্রাশ পরিকল্পনা নিতে হবে। ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে এখনই বর্ষার পূর্বেই জোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
কোভিড ও ডেঙ্গু জ্বর—দুটোই ভাইরাসজনিত রোগ, এদের মধ্যে উপসর্গজনিত মিল-অমিল আছে। আবার দুটোই জটিল হয়ে পড়তে পারে কারও কারও ক্ষেত্রে। সে ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।